‘চীন আন্তর্জাতিক পরিষেবা বাণিজ্য মেলা’ বিশ্ব অর্থনীতির জন্য সুযোগ সৃষ্টি করেছে
2021-09-08 13:11:03

‘চীন আন্তর্জাতিক পরিষেবা বাণিজ্য মেলা’ বিশ্ব অর্থনীতির জন্য সুযোগ সৃষ্টি করেছে_fororder_592652

ছয় দিনব্যাপী ‘চীন আন্তর্জাতিক পরিষেবা বাণিজ্য মেলা’ গতকাল (মঙ্গলবার) বেইজিংয়ে শেষ হয়েছে। প্রাথমিক পরিসংখ্যান অনুযায়ী, এবারে মেলায় এদিন বিকাল ৪টা পর্যন্ত ১৬৭২টি চুক্তি স্বাক্ষরিত হয়। চুক্তি স্বাক্ষরের সংখ্যা এবং বাণিজ্যের পরিমাণ আগের মেলার চেয়ে বেশি হয়েছে।

বিশ্বের পরিষেবা খাতের বৃহত্তম বহুমুখী মেলা হিসেবে, পরিষেবা বাণিজ্য মেলা বিশ্বের নানা প্রতিষ্ঠানকে খুব ভালো উন্নয়নের সুযোগ দিয়েছে। এবারের মেলায় দর্শকরা ভিআর-এর মাধ্যমে টেবিল টেনিস খেলেছেন, ডিজিটাল মুদ্রা দিয়ে নিজের জন্য পোস্ট কার্ড পাঠিয়েছেন এবং চালকবিহীন ড্রাইভিং উপভোগ করেছেন। মেলাটি ডিজিটাল পরিষেবা, সংস্কৃতি, পর্যটন, শিক্ষা, আর্থিক বিজ্ঞান, স্বাস্থ্যসহ বিভিন্ন খাতের পরিষেবা বাণিজ্যের ভবিষ্যত তুলে ধরেছে, চীনা বাজারের প্রাণ ও সুপ্তশক্তি প্রতিফলন করেছে এবং বিশ্বের বিভিন্ন দেশের প্রতিষ্ঠানকে প্রয়োজনীয় বাণিজ্যিক সুযোগ দিয়েছে।

 

ইতালির এমডাব্লিউআই কন্সুলেট কোম্পানি প্রধানত শীতকালীন খেলায় সেবা দেয়। কোম্পানির প্রতিনিধি সাইমন স্টুয়ার্ট জানান, পরিষেবা মেলা একটি ভালো মঞ্চ। যা প্রতিষ্ঠানের জন্য ক্রেতাদের সঙ্গে বিনিময়ের সুযোগ সৃষ্টি করেছে। ভবিষ্যতে কোম্পানি চীনা বাজারের জন্য বরাদ্দ আরও বাড়বে।

 

সেই সঙ্গে পরিষেবা মেলা ডিজিটাল বাণিজ্যসহ বিভিন্ন নতুন ধরনের বাণিজ্যের জন্য প্রদর্শনী প্ল্যাটফর্ম সরবরাহ করেছে। ২০২০ সালে করোনাভাইরাস মহামারির প্রাদুর্ভাবে বিশ্বের পরিষেবা বাণিজ্য ২০ শতাংশ কমেছে। তবে ডিজিটাল পরিষেবার প্রবৃদ্ধি বাস্তবায়িত হয়েছে। যা ভবিষ্যত পরিষেবা বাণিজ্য উন্নয়নের নতুন চালিকাশক্তি হবে। চলতি বছরের পরিষেবা বাণিজ্য মেলায় প্রথমবারের মতো ডিজিটাল পরিষেবা এলাকা স্থাপিত হয়েছে।

 

আসলে এবারের মেলা অনলাইন ও অফলাইন দুইভাবে আয়োজন করা হয়েছে। এটি হলো ডিজিটাল পরিষেবার একটি উদাহরণ। ডেলয়েট-এর চীনা শাখার উপপ্রধান ইয়াং ইং জানান, বিশ্বের মহামারি এখনও নিয়ন্ত্রণে আসে নি। এ অবস্থায় পরিষেবা বাণিজ্য মেলা ডিজিটাল প্রযুক্তির মাধ্যমে আয়োজন করা হয়েছে; যা প্রতিষ্ঠানের জন্য বাণিজ্যিক সুযোগ সম্প্রসারণে সাহায্য করতে পারে।

 

এ ছাড়া পরিষেবা বাণিজ্য মেলা একটি উন্মুক্ত ও সহনশীল প্ল্যাটফর্ম। যা উন্নয়নশীল দেশের জন্য সুযোগ সৃষ্টি করা এবং বিশ্ব অর্থনীতির ভারসাম্যহীনতা কমাতে সাহায্য করতে পারে। এবারের মেলায় ফিলিপিন্স, কম্বোডিয়া, আজারবাইজান-সহ বিভিন্ন উন্নয়নশীল দেশের প্রতিষ্ঠানগুলো অংশ নিয়েছে। তাদের জন্য বিভিন্ন বিশেষ অনুষ্ঠানও আয়োজন করা হয়েছে। সারা বিশ্বে তাদের পণ্য ও সেবা প্রদর্শনে সাহায্য করা হয়েছে।

 

আরও গুরুত্বপূর্ণ বিষয় হলো, পরিষেবা মেলায় দৃঢ়ভাবে চীনের উন্মুক্তকরণের ইঙ্গিত দেওয়া হয়। বর্তমান বিশ্বে সংরক্ষণবাদ ও একতরফাবাদের প্রভাব আছে। মেলা আয়োজনের মাধ্যমে বিশ্ব অর্থনীতিতে আস্থা যুক্ত হয়েছে। এবারের মেলার উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে পরিষেবা বাণিজ্য উন্নয়নের সুযোগ তৈরি করা, যৌথভাবে বিশ্ব অর্থনীতি পুনরুদ্ধার ও প্রবৃদ্ধি জোরদার করাসহ ৪টি ব্যবস্থা ঘোষণা করেছে চীন। এ ঘোষণা সারা বিশ্বকে চাঙ্গা করে তুলেছে।

 

বিশ্ব অর্থনীতি, আন্তর্জাতিক বাণিজ্য ও পুঁজি বিনিয়োগ-সংক্রান্ত সমস্যা সমাধানের বিষয়ে চীন ইতোমধ্যে জবাব দিয়েছে। তা হলো- সবসময় শান্তি, উন্নয়ন, সহযোগিতা ও উভয় কল্যাণের নীতিতে অবিচল থাকা।

ইতোমধ্যে অফলাইন মেলাটি শেষ হয়েছে। তবে অনলাইনে মেলাটি অব্যাহত থাকছে। কারণ, চীন ‘সবসময় চলমান পরিষেবা বাণিজ্য মেলার’ ব্যবস্থা স্থাপন করেছে। একই সঙ্গে, চীনের উন্মুক্তকরণ অব্যাহত থাকবে। বিশ্বের অংশীদারদের সঙ্গে সহযোগিতার চেতনাও অপরিবর্তিত থাকবে।

(শুয়েই/তৌহিদ/জিনিয়া)