ব্রিক্স জোটের ‘একাদশ অর্থ ও বাণিজ্যমন্ত্রী সম্মেলন’ ফলপ্রসূ
2021-09-07 15:52:39

সেপ্টেম্বর ৭: ব্রিক্সভুক্ত দেশগুলোর ‘একাদশ অর্থ ও বাণিজ্যমন্ত্রী সম্মেলন’ ৩ সেপ্টেম্বর অনলাইনে আয়োজন করা হয়েছিল। এ সম্মেলনে ব্রিক্সের পাঁচটি সদস্যদেশের অর্থমন্ত্রী ও বাণিজ্যমন্ত্রীগণ করোনাভাইরাস মহামারি প্রতিরোধ, বহুপক্ষীয় বাণিজ্যব্যবস্থা ও আর্থ-বাণিজ্যিক বাস্তবভিত্তিক সহযোগিতাকে সমর্থন করাসহ বিভিন্ন বিষয়ে গভীরভাবে আলোচনা করেছেন। এতে ‘ব্রিক্স জোটের একাদশ অর্থ ও বাণিজ্যমন্ত্রী সম্মেলনের যৌথ ইশতাহার’ প্রকাশিত হয়েছে। যা ব্রিক্সভুক্ত দেশগুলোর একাদশ শীর্ষসম্মেলনের ভিত্তি স্থাপন করেছে। এবারের অর্থ ও বাণিজ্যমন্ত্রী সম্মেলনের নানা বৈশিষ্ট্য আছে। বিস্তারিত শুনুন আজকের সংবাদ পর্যালোচনায়।

 

চীনের বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের আন্তর্জাতিক বিভাগের উপপ্রধান ছেন ছাও গতকাল (সোমবার) বেইজিংয়ে বলেন, এবারের সম্মেলন প্রধানত তিনটি ক্ষেত্রে অগ্রগতি অর্জন করেছে। যেমন: আন্তর্জাতিক করোনাভাইরাস মহামারি প্রতিরোধে সহযোগিতা সম্প্রসারণের প্রতিশ্রুতি, দৃঢ়ভাবে বহুপক্ষীয় বাণিজ্যব্যবস্থা সম্প্রসারণ করা এবং বাস্তব সহযোগিতা রক্ষা করা। তিনি জানান, সম্মেলনে পরিষেবা বাণিজ্য, মেধাস্বত্ত্ব, ই-কমার্সসহ বিভিন্ন ক্ষেত্রে সহযোগিতা দলিলের অনুমোদন দেওয়া হয়েছে, ‘ব্রিক্স দেশের অর্থনৈতিক অংশীদারিত্ব কৌশল ২০২৫’ শীর্ষক বাণিজ্য খাতের কর্মসূচী প্রণয়ন করা হয়েছে।

ছেন ছাও বলেন, পাঁচটি দেশ প্রতিশ্রুতি দিয়েছে যে, বিশ্ব বাণিজ্য সংস্থার সংস্কার, বিশ্বের সরবরাহ চেইন, মাঝারি ও ক্ষুদ্র শিল্পপ্রতিষ্ঠান, আন্তর্জাতিক পুঁজি বিনিয়োগসহ বিভিন্ন ক্ষেত্রে সহযোগিতা করা হবে। ডিজিটাল ও সবুজায়নসহ বিভিন্ন নতুন খাতের উন্নয়নের সুযোগকে কাজ লাগানো হবে, ডিজিটাল প্রযুক্তির উন্নয়ন ও সহযোগিতা জোরদার করা হবে, কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা প্রযুক্তি দিয়ে বাণিজ্য ও প্রযুক্তি জোরদার করা হবে, মাঝারি ও ক্ষুদ্র প্রতিষ্ঠানকে বিশ্বের মূল শিল্পচেইনে যুক্ত করা, যৌথভাবে জলবায়ুর পরিবর্তন মোকাবিলা করা এবং সংশ্লিষ্ট বাণিজ্যিক বাধা প্রতিরোধ করা হবে।

ছেন ছাও বলেন, এবারের সম্মেলনে অর্জিত সাফল্য ডিজিটাল অর্থনীতি, কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা, জলবায়ুর পরিবর্তনসহ বিভিন্ন নতুন ক্ষেত্রকে অন্তর্ভুক্ত করেছে। পাশাপাশি, তা বিভিন্ন ক্ষেত্রের সঙ্গে সম্পর্কিত ও বিষয়বহুল।

ছেন ছাও আরও বলেন, পরিষেবা বাণিজ্য প্রধান পেশাদার সেবায় গুরুত্বারোপ করে। যেমন: চিকিত্সা সেবা, কম্পিউটার সেবা ইত্যাদি। এর মাধ্যমে ব্রিক্সভুক্ত দেশের পরিষেবা বাণিজ্য খাতের সহযোগিতার সুপ্তশক্তিকে প্রাণচঞ্চল করা যাবে। যেমন- ই-কমার্স খাত। এবারের সম্মেলনে বিভিন্ন দেশ একমত হয়েছে যে, ই-কমার্স খাতের ভোক্তাদের অধিকার রক্ষার বিষয়টি জোরদার করা হবে। যাতে ব্রিক্সভুক্ত দেশগুলো ই-কমার্স খাতে সহযোগিতা শুরু করতে পারে। বিভিন্ন পক্ষ ডিজিটাল অর্থনীতি উন্নত করা এবং ডিজিটাল খাতের ব্যবধান কমানোর বিষয় নিয়েও মতৈক্যে পৌঁছেছে।

 

ব্রিক্স দেশের জনসংখ্যা বিশ্বের চার ভাগেরও বেশি। অর্থনীতির মোট পরিমাণ বিশ্বের ২৪ শতাংশ। পণ্য বাণিজ্য বিশ্বের ১৮ শতাংশ। পরিষেবা বাণিজ্য বিশ্বের ১৩ শতাংশ। এ দেশগুলো বিশ্বের ২৫ শতাংশ বৈদেশিক পুঁজি আকর্ষণ করে। ছেন ছাও বলেন, চীন ও ব্রিক্সভুক্ত দেশগুলো যৌথভাবে আর্থ-বাণিজ্যিক সহযোগিতার সুযোগ কাজে লাগাবে এবং বিশ্ব অর্থনীতি পুনরুদ্ধারে সহায়তা দেবে।

 

ছেন ছাও বলেন, আমরা আশা করি, বিভিন্ন দেশের সঙ্গে এবারের সম্মেলনের গুরুত্বপূর্ণ ও বাস্তব-ভিত্তিক সুফলগুলো বাস্তবায়ন করতে পারব, ব্রিক্সভুক্ত দেশের আর্থ-বাণিজ্যিক সহযোগিতার সুপ্তশক্তি উন্নত করব, বিশ্বের বাণিজ্য ও পুঁজি বিনিয়োগের বৃদ্ধি করব এবং অর্থনীতি পুনরুদ্ধারে আরও বেশি অবদান রাখতে পারব।

(শুয়েই/তৌহিদ/জিনিয়া)