আগস্ট ২৬: গত ১৯ আগস্ট পঞ্চম চীন-আরব মেলা নিংসিয়া স্বায়ত্তশাসিত অঞ্চলের ইনছুয়ান শহরে অনুষ্ঠিত হয়েছে। এবারের প্রদর্শনীর মূল প্রতিপাদ্য ছিল ‘আর্থ-বাণিজ্যিক সহযোগিতা গভীর করা এবং সম্মিলিতভাবে ‘এক অঞ্চল, এক পথ’ প্রতিষ্ঠাকে এগিয়ে নেয়া’। চীন ও আরব দেশগুলোর প্রদর্শনীর স্থায়ী ভেন্যু হিসেবে নিংসিয়া সাম্প্রতিক বছরগুলোতে সক্রিয়ভাবে ‘এক অঞ্চল, এক পথ’ প্রতিষ্ঠাকাজে অংশ নিয়েছে। এই প্রক্রিয়ায় উন্মুক্ত প্ল্যাটফর্ম সৃষ্টি করে উন্মুক্ত পরিবেশকে প্রধান্য দিয়ে নিংসিয়া ‘এক অঞ্চল, এক পথ’ দেশগুলোর সঙ্গে আর্থ-বাণিজ্যিক সহযোগিতার মান স্থিতিশিলভাবে বৃদ্ধি করেছে। ‘আজকের টপিক’ অনুষ্ঠানে আমরা এই বিষয়ে আলোচনা করবো।
চীনা শিল্পপ্রতিষ্ঠানের সহায়তায় কাতারে প্রথম বড় আকারের ফটোভোলটাইক বিদ্যুত্ উত্পাদন প্রকল্প–-হারসা--৮০০ মিলিওয়াট সৌর শক্তি-চালিত কারখানার নির্মাণ করা হচ্ছে। পাশাপাশি, কাতার থেকে পাঁচ সহস্রাধিক কিলোমিটার দূরে চীনের নিংসিয়ার ‘লুং চি কুয়াং’ লিমিটেড কোম্পানিও সর্বশেষ সৌর শক্তি-চালিত ব্যাটারি নিয়ে কাতারের এই প্রকল্পের নির্মাণকাজে অংশ নিয়েছে। এই কোম্পানির প্রকল্প বিভাগের ম্যানেজার ছিয়াং ফেই বলেন, এটি চীনা শিল্পপ্রতিষ্ঠানের ‘এক অঞ্চল, এক পথ’ দেশগুলোর জ্বালানি রূপান্তর খাতে অংশ নেয়ার এক সফল দৃষ্টান্ত । এই সম্পর্কে তিনি বলেন,
‘আমরা ‘এক অঞ্চল, এক পথ’ দেশগুলোর ফটোভোলটাইক জ্বালানির ব্যবহারকে এগিয়ে নিয়ে যাচ্ছি। এই প্রক্রিয়ায় ক্রয় ও সেবাগত ব্যবস্থা গড়ে তোলা হয়েছে। ২০২২ সালের ফুটবল বিশ্বকাপ কাতারে অনুষ্ঠিত হবে। এই ফটোভোলটাইক বিদ্যুত্ স্টেশন স্থানীয় চাহিদার ১০ শতাংশ বিদ্যুত্ সরবরাহ করতে পারবে। সেসময় বিশ্বকাপের স্টেডিয়ামের বিদ্যুত্ সরবরাহও করতে পারবে। এভাবেই কাতারের নবায়নযোগ্য জ্বালানির অনুপাত বাড়বে এবং কার্বন নিঃসরণের পরিমাণ কমবে।’
সাম্প্রতিক বছরগুলোতে নিংসিয়া পর্যায়ক্রমে বিভিন্ন রকমের কর্ম-পরিকল্পনা প্রবর্তন করেছে। নীতি, আইন ব্যবস্থাপনা এবং শুল্কসহ বিভিন্ন ক্ষেত্রে চীনা শিল্পপ্রতিষ্ঠানের ‘বাইরে যাওয়াকে’ সর্বাত্মক সমর্থন দিয়েছে। অধিক থেকে অধিকতর চীনা শিল্পপ্রতিষ্ঠান সক্রিয়ভাবে ‘এক অঞ্চল, এক পথ’ প্রতিষ্ঠাকাজে অংশ নিয়েছে। নিজস্ব গবেষণার মাধ্যমে সুবিধা সৃষ্টি করেছে। নিংসিয়া থেকে মধ্য এশিয়া, পশ্চিম এশিয়া, ইনার মঙ্গোলিয়া, এবং রাশিয়া পর্যন্ত আন্তর্জাতিক মালবাহী ট্রেনের মাধ্যমে সবুজ খাদ্য ও নতুন উপাদান ‘এক অঞ্চল, এক পথ’ দেশ ও অঞ্চলে পাঠিয়েছে। নিং সি ইন ছুয়ান শুল্ক বহুমুখী বিভাগের কর্মী থাং চিয়ে মিন বলেন,
‘ধারাবাহিক ব্যবস্থা কাজে লাগানোর পর শুল্ক খাতের প্রক্রিয়া আগের চেয়ে বেশি সুবিধাজনক হয়েছে। ২০২১ সালের প্রথমার্ধে ‘এক অঞ্চল, এক পথ’ দেশগুলোর মধ্যে ভারতে নিংসিয়া’র আমদানি ও রপ্তানির প্রবৃদ্ধি ১৬৬.৭ শতাংশ বাড়ে। পোল্যান্ডে আমদানি ও রপ্তানির প্রবৃদ্ধি হয় ১৫৭.২ শতাংশ বেশি। বায়োমেডিসিন, যন্ত্র এবং আইসিমহ নবোদিত সুবিধাজনক পণ্যের সাহায্যে রপ্তানির পরিমাণ বাড়ে ১০.৩ শতাংশ। এই প্রক্রিয়ায় নিংসিয়া শিল্পপ্রতিষ্ঠানের রপ্তানি পণ্যের কাঠামোও উন্নত হয়েছে।
‘এক অঞ্চল, এক পথ’ প্রতিষ্ঠাকাজের এক গুরুত্বপূর্ণ প্ল্যাটফর্ম হিসেবে নিংসিয়া ইতোমধ্যে সফলভাবে চারবার চীন-আরব প্রদর্শনীর আয়োজন করেছে। তাতে ১১২টি দেশ ও অঞ্চলের পাঁচ সহস্রাধিক দেশি-বিদেশি শিল্পপ্রতিষ্ঠানের স্বাক্ষরিত বিভিন্ন রকমের সহযোগিতামূলক প্রকল্পের সংখ্যা ৯৩৬টি। বৈদেশিক আর্থ-বাণিজ্যিক ‘বন্ধু বৃত্ত’-এর সংখ্যা বেড়ে দাঁড়িয়েছে ১৩৮টি দেশ ও অঞ্চলে। ‘ভেতরে নিয়ে আসা’ এবং ‘বাইরে চলে যাওয়া’ সংশ্লিষ্ট নীতিমালার মাধ্যমে স্থানীয় প্রতিদ্বন্দ্বিতামূলক শক্তিও স্পষ্টভাবে বেড়েছে। এই সম্পর্কে নিংসিয়া বাণিজ্য বিভাগের প্রধান পর্যবেক্ষক ছেন শেং রুং বলেন,
‘২০১৩ থেকে ২০২০ সাল পর্যন্ত ‘এক অঞ্চল, এক পথ’ দেশগুলোর সঙ্গে নিংসিয়া’র আমদানি ও রপ্তানির মোট পরিমাণ ছিল ৯.৩৪ বিলিয়ন মার্কিন ডলার। তাতে চীন ও আরব দেশগুলোর প্রদর্শনীর উল্লেখযোগ্য ভূমিকা রয়েছে।’
(ওয়াং হাইমান/এনমা/ছাই)