অগাস্ট ২৪: চীনের উপ-বাণিজ্যমন্ত্রী গতকাল (সোমবার) বেইজিংয়ে আয়োজিত এক প্রেস ব্রিফিংয়ে জানান, বাণিজ্য মন্ত্রণালয় এখন নতুন অবাধ বাণিজ্য চুক্তির আলোচনা দ্রুত এগিয়ে নিচ্ছে এবং কমপ্রেহেনসিভ এন্ড প্রোগ্রেসিভ ট্রান্স-পাসিফিক পার্টনারশিপ চুক্তি’তে (সিপিটিপিপি) যোগ দেওয়ার ব্যাপারে চীন ইতিবাচকভাবে বিবেচনা করছে। তা ছাড়া, ২০২১ বিদেশি পুঁজি প্রবেশের নেতিবাচক তালিকা তাড়াতাড়ি তৈরি করা হচ্ছে। যাতে বিদেশি পুঁজিদের বৈধ অধিকার জোরদার করা যায়।
বিশ্ব বাণিজ্য সংস্থার পরিসংখ্যান অনুযায়ী, এ পর্যন্ত সারা বিশ্বে ৩৫০টিরও বেশি অবাধ বাণিজ্য চুক্তি স্বাক্ষরিত হয়েছে। উপ-বাণিজ্যমন্ত্রী ওয়াং শৌ ওয়েন জানান, এ পর্যন্ত চীন ১৯টি অবাধ বাণিজ্য চুক্তি তৈরি করেছে এবং ২৬টি দেশ ও অঞ্চলের সঙ্গে চুক্তি স্বাক্ষর করেছে। তিনি জানান, অবাধ বাণিজ্য চুক্তি কেবল বাণিজ্যিক অংশীদারিত্বের সঙ্গে বিনিয়োগ ও বাণিজ্য সম্প্রসারণের জন্য সহায়কই নয়, আন্তর্জাতিক বাণিজ্য ও বিদেশি পুঁজির স্থিতিশীলতা বজায় রাখার ক্ষেত্রেও সহায়ক হবে।
তিনি বলেন,পরবর্তীতে বিদ্যমান অবাধ বাণিজ্য চুক্তি, যেমন সিঙ্গাপুর ও দক্ষিণ কোরিয়ার অবাধ বাণিজ্য চুক্তির মতো উন্নত করা হবে। পাশাপাশি, নতুন অবাধ বাণিজ্য চুক্তির আলোচনাও দ্রুত করা হবে। যেমন- চীন-জাপান-দক্ষিণ কোরিয়া অবাধ বাণিজ্য আলোচনা, চীন ও গাল্ফ কোঅপারেশন কাউন্সিল (জিসিসি), ইসরাইল ও নরওয়ের সঙ্গে আলোচনা। চীন সিপিটিপিপিতে যোগ দেওয়ার বিষয়টি ইতিবাচকভাবে বিবেচনা করছে।
বিশ্ব বাণিজ্য সংস্থা আগামী ২৯ নভেম্বর ১২তম মন্ত্রী পর্যায়ের সম্মেলন আয়োজন করবে। এ বিষয়ে চীনের উপ-বাণিজ্যমন্ত্রী বলেন, বিশ্ব বাণিজ্য সংস্থা এখন বড় চ্যালেঞ্জের সম্মুখীন হচ্ছে: আপিল বিভাগ অকার্যকর এবং কোন কোন দেশের বাণিজ্য নিয়ে রাজনীতিকরণের চেষ্টা। এসব কারণে সংস্থাটির কার্যকারিতা ও ভাবমূর্তি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। এ প্রেক্ষাপটে এবারের মন্ত্রী পর্যায়ের সম্মেলনের ওপর সবাই নজর রাখছে। চীন মনে করে, এবারের সম্মেলনে কী অগ্রগতি অর্জন হবে তা সংস্থাটির ভাবমূর্তি পুনরুদ্ধারের জন্য খুব গুরুত্বপূর্ণ। চীন আন্তরিকভাবে নিজের পরামর্শ ও প্রস্তাব উত্থাপন করবে এবং বিশ্ব বাণিজ্যের অংশীদারদের সঙ্গে বিশ্ব অর্থনীতিকে আরো উন্মুক্ত, সহনশীল, সর্বজনীন, ভারসাম্যের দিকে এগিয়ে নেওয়ার চেষ্টা করবে।
তিনি বলেন,মত্স্য শিল্পে ভাতা নিয়ে আলোচনা এবং মহামারী প্রতিরোধের ক্ষেত্রে অগ্রগতি অর্জনের প্রত্যাশা করছি আমরা। তা ছাড়া, পরিষেবার সুবিধাকরণ, বিনিয়োগের সুবিধাকরণ এবং ডিজিটাল বাণিজ্যিক খাতে অগ্রগতির প্রত্যাশা করে চীন। এসব ক্ষেত্রে মহাপরিচালক এনগোজি ওকোনজো ইউয়েলাকে সমর্থন করবে চীন।
গত চার বছরে চীনে বিশ্বের দ্বিতীয় সর্বোচ্চ বিদেশি পুঁজি এসেছে। গত বছর সারা বিশ্বে বিদেশি পুঁজির ৪০ শতাংশ হ্রাসের প্রেক্ষাপটে চীনে বিদেশি পুঁজি ৪.৫ শতাংশ বৃদ্ধি পেয়েছে। এ নিয়ে বাণিজ্যমন্ত্রী ওয়াং ওয়েন থাও বলেন, পরবর্তীতে বিদেশি পুঁজির বৈধ অধিকার রক্ষা আমাদের কাজের প্রধান লক্ষ্য। তিনি বলেন,আমরা বিদেশি পুঁজি প্রবেশের নেতিবাচক তালিকা আরো কমিয়ে দেবো এবং তাড়াতাড়ি ২০২১ সালের তালিকা প্রকাশ করবো। তা ছাড়া, অবাধ বাণিজ্য আলোচনা দ্রুত শুরু করার মাধ্যমে বিশ্ব বাণিজ্য সংস্থার সংস্কারে ইতিবাচক ভূমিকা রাখবো। তার মাধ্যমে বিদেশি বিনিয়োগকারীদের অধিকার রক্ষা জোরদার করবো। চীনের ‘বিদেশি বিনিয়োগ আইন’ কার্যকরের পরিবেশ সুসম্পন্ন করবো। সবার জন্য একটি আন্তর্জাতিক মানদণ্ডের ভিত্তিতে আইন-ভিত্তিক বিনিয়োগ পরিবেশ সৃষ্টি করবো।
(ইয়াং/তৌহিদ/ছাই)