অগাস্ট ২০: গতকাল (বৃহস্পতিবার) তিব্বতের লাসায় শান্তিপূর্ণ মুক্তির ৭০তম বার্ষিকী জমকালোভাবে উদযাপন করা হয়েছে। চীনের কমিউনিস্ট পার্টির কেন্দ্রীয় কমিটির সাধারণ সম্পাদক, দেশের প্রেসিডেন্ট এবং কেন্দ্রীয় সামরিক কমিশনের চেয়ারম্যান সি চিন পিং অভিনন্দন ফলকে লিখেছেন, ‘সুন্দর ও সুখী তিব্বত নির্মাণ করা এবং যৌথভাবে পুনরুত্থানের মহান স্বপ্ন বাস্তবায়ন করা।’ সিপিসি’র কেন্দ্রীয় কমিটির রাজনৈতিক ব্যুরোর স্থায়ী সদস্য, গণরাজনৈতিক পরামর্শ সম্মেলনের চেয়ারম্যান এবং কেন্দ্রীয় প্রতিনিধিদলের নেতা ওয়াং ইয়াং সম্মেলনে অংশ নেন এবং ভাষণ দেন।
গতকাল (বৃহস্পতিবার) তিব্বতের বিভিন্ন জাতি ও মহলের ক্যাডার ও জনগণ লাসা শহরের পোতালা প্যালেস স্কয়ারে সমাবেত হয়ে তিব্বতের শান্তিপূর্ণ মুক্তির ৭০তম বার্ষিকী উদযাপন করে। সকল ১০টায় উদযাপনীসভা শুরু হয়।
১৯৫১ সালে তিব্বতে শান্তিপূর্ণ মুক্তি ঘোষণা করা হয়। ৭০ বছরে চীনের কমিউনিস্ট পার্টির কেন্দ্রীয় কমিটি তিব্বতের অর্থনৈতিক উন্নয়ন এবং মানুষের জীবনযাত্রা উন্নয়নকে সর্বোচ্চ অগ্রাধিকার দিয়েছে। তিব্বতের নির্মাণ কাজকে সমর্থন দিতে এবং তিব্বতের অর্থনৈতিক উন্নয়নে ঐতিহাসিক সাফল্য অর্জনের জন্য সমগ্র দেশের শক্তি ব্যবহার করেছে। শান্তিপূর্ণ মুক্তির আগে রাস্তার অভাব থেকে শুরু করে রেলপথ, বিমান চলাচল এবং সব দিক দিয়ে বিস্তৃত মহাসড়ক পর্যন্ত, ৯৫ শতাংশেরও বেশি নিরক্ষরতার হার ছিল। বর্তমানে ১৫ বছর পর্যন্ত সরকারি খরচে শিক্ষাদান, সম্পূর্ণ বিনামূল্য চিকিৎসাসেবা, মাতৃ ও শিশু স্বাস্থ্যের যত্ন, রোগ প্রতিরোধ ও নিয়ন্ত্রণ এবং তিব্বতি চিকিৎসা ও ঔষধসহ বিভিন্ন সেবাব্যবস্থা প্রতিষ্ঠিত হয়েছে। গড় আয়ু ১৯৫১ সালে ছিল ৩৫.৫ বছর। যা ২০১৯ সালে বেড়ে হয়েছে ৭১.১ বছর। সিপিসি’র অষ্টাদশ জাতীয় কংগ্রেসের পর তিব্বতের শ্রেষ্ঠ উন্নতি, সর্বাধিক পরিবর্তন এবং জনসাধারণ সর্বাধিক সুবিধার নতুন যুগ শুরু হয়েছে। গড় বার্ষিক অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি দেশের শীর্ষ তিনের মধ্যে স্থান পেয়েছে। গ্রামীণ বাসিন্দাদের মাথাপিছু নিষ্পত্তিযোগ্য আয় বৃদ্ধির হার বহু বছর ধরে দেশে প্রথম স্থানে রয়েছে। তিব্বত ও সমগ্র দেশ সচ্ছল হয়ে উঠেছে।
উদযাপনী সভায় ওয়াং ইয়াং বলেন, পুরো দেশ চীনের কমিউনিস্ট পার্টির শতবর্ষ উদযাপন করার সঙ্গে সঙ্গে তিব্বতের শান্তিপূর্ণ মুক্তির ৭০তম বার্ষিকীও উদযাপন করছে। গত মাসে প্রেসিডেন্ট সি তিব্বত পরিদর্শন করেছেন, শান্তিপূর্ণ মুক্তির ৭০ বছর পর তিব্বতের উন্নয়নের সাফল্যের স্বীকৃতি দিয়েছেন এবং বিভিন্ন জাতির ক্যাডার ও জনগণকে আন্তরিক শুভেচ্ছা জানিয়েছেন। ভাষণে ওয়াং ইয়াং আরো বলেন, চীনা জাতি মহান পুনরুত্থানের একটি সন্ধিক্ষণে রয়েছে। একটি আধুনিক সমাজতান্ত্রিক সার্বিক দেশ গঠনের নতুন যাত্রা শুরু হয়েছে। তিব্বতের আর্থ-সামাজিক উন্নয়নও একটি নতুন ঐতিহাসিক সূচনা পয়েন্টে এসে দাঁড়িয়েছে। আমাদের সর্বদা পার্টির নেতৃত্ব মেনে চলতে হবে, অবিচলভাবে চীনা বৈশিষ্ট্যময় সমাজতন্ত্রের পথ অনুসরণ করতে হবে এবং তিব্বতের সুরেলা ও স্থিতিশীল পরিস্থিতি বিকাশকে সুসংহত করতে হবে। চীনা জাতির চেতনা গঠনের দিকে মনোনিবেশ করতে হবে, জাতীয় ঐক্য ও অগ্রগতির কথা প্রচার করতে হবে এবং জনগণকেন্দ্রিক উন্নয়ন মেনে চলে উচ্চমানের আর্থ-সামাজিক উন্নয়ন এগিয়ে নিতে হবে।
তিনি আরো বলেন,
‘দারিদ্র্যমুক্তির সাফল্য সুসংহত করতে হবে, গ্রামাঞ্চলের পুনর্জাগরণ এগিয়ে নিতে হবে, সীমান্ত অঞ্চল পুনরুজ্জীবিত করা এবং জনগণকে সমৃদ্ধ করার জন্য গভীর পদক্ষেপ গ্রহণ করতে হবে এবং জনগণের জীবিকাসংশ্লিষ্ট কাজ ধাপে ধাপে বাস্তবায়ন করতে হবে। যাতে বিভিন্ন জাতির জনগণের সুখ নিশ্চিত করা যায়। তিব্বতের উন্নয়নে সিপিসি’র কেন্দ্রীয় কমিটির বরাদ্দ এবং সমর্থন আরও বাড়বে।’(লিলি/তৌহিদ/শুয়েই)