এ পর্বে থাকছে
১. চীনের চলচ্চিত্র নিয়ে বিশেষ প্রতিবেদন: দ্য ওয়ান ম্যান অলিম্পিকস: চীনের প্রথম অভিযাত্রা
২. অন্তরঙ্গ আলাপন: অধ্যাপক রীনাত ফওজিয়া, সেতারশিল্পী
দ্য ওয়ান ম্যান অলিম্পিকস: চীনের প্রথম অভিযাত্রা
দ্য ওয়ান ম্যান অলিম্পিকস চলচ্চিত্রের পোস্টার
সময় কাল ১৯৩২। শাংহাই বন্দরে খুব জাঁকজমকপূর্ণ আয়োজন। দশম অলিম্পিক গেমসে অংশগ্রহণকারী চীনের একমাত্র প্রতিনিধিকে এক নজর দেখার জন্য ভিড় করেছে জনতা।
জাহাজের ডেকে দাঁড়িয়ে তাঁর ওপর ভরসা রাখা স্বদেশীয়দের দেখে ছাং ছুনের মনে নাড়া দেয় অতীত। স্মৃতিচারণ করলেন তার শুরুর গল্পটা। ১৯৩১ সালে তিনি বেইজিং ইউনির্ভাসিটির ছাত্র।
জাপানের একজন ক্রীড়াবিদের সাথে প্রতিদ্বন্দ্বিতায় চ্যাম্পিয়ন হন তিনি। কিন্তু দৌঁড়ের কৌশল নিয়ে তাদের ঝগড়া বেধে যায়-এবং তা এমন পর্যায় পৌঁছে যে, যেন চীন-জাপান যুদ্ধ শুরু হয়েছে। পরবর্তীতে ঝামেলার কারণে ছাং ছুন সেখানে তার প্রশিক্ষণ ও পোড়াশোনা ত্যাগ করতে বাধ্য হন।
বিদায় নেয়ার সময় জার্মান প্রশিক্ষকের কথা শুনে ছাং ছুনের মনে অলিম্পিক গেমসের প্রতি আকাঙ্খার সৃষ্টি হয়।
ছাং ছুন ফিরে আসেন তার মাতৃভূমিতে। চীন সরকার তখন অলিম্পিক গেমসে অংশ নেয়ার আবেদন প্রত্যাখ্যান করে। কিন্তু স্ত্রী চিয়াং সিউ চেনের সমর্থনে ছাং ছুন নিজের স্প্রিন্ট প্রশিক্ষণ অব্যাহত রাখেন।
পরে অদম্য মনোবল নিয়ে নানা বাধাবিঘ্ন পার হয়ে দীর্ঘ এক মাস সাগর পাড়ি দিয়ে অলিম্পিক গেমসের উদ্বোধনী অনুষ্ঠানের মাত্র ৪৫ মিনিট আগে লস এঞ্জেলেসে পৌঁছান তিনি।
লিউ ছাং ছুন প্রথমবারের মতো অলিম্পিক মঞ্চে সারা বিশ্বের সামনে চীনের প্রতিনিধিত্ব করেন। যুক্তরাষ্ট্রের প্রবাসী চীনা দর্শকদের আনন্দধ্বনিতে শুরু হয় গ্যালারিতে। সবাই চিৎকার করে বলতে থাকে , চীনারা এসেছেন।
১৯৩২ সালের ৩১ জুলাই পুরুষদের একশো মিটার দৌঁড় বাছাই পর্বে ব্যর্থ হন তিনি। বিদেশি গণমাধ্যম তার এই ব্যর্থতাকে চীনের রাজনীতির সাথে সম্পর্কিত করার আশংকায় চীন সরকার তাকে পরবর্তী পুরুষদের দু’শো মিটার প্রতিযোগিতায় অংশ না নেয়ার আদেশ দেয়।
কিন্তু ছাং ছুন দৌঁড়ে অংশ নেওয়ার জন্য জেদ শুরু করেন। ‘প্রতিদ্বন্দ্বিতার চেয়ে অংশগ্রহণ গুরুত্বপূর্ণ- এই অলিম্পিক চেতনাকে ধারন করে সাহসীভাবে তিনি দাঁড়ান দু’শো মিটারের লাইনে ।
ছাং ছুনের এ ঐতিহাসিক অলিম্পিক অভিযাত্রা নিয়ে ২০০৮ সালে মুক্তি পায় বায়োপিক সিনেমা ‘দ্য ওয়ান ম্যান অলিম্পিকস’। এটি নির্মাণ করেন চীনের বিখ্যাত সিনেমাটোগ্রাফার ও পরিচালক ইয়ং হৌ। সিনেমায় লিউ ছাং ছুনের চরিত্রে অভিনয় করে চীনের বিখ্যাত অভিনেতা চাওলিন লি।
চীনের সাবেক প্রধানমন্ত্রী ওয়েন চিয়া পাও লিউ ছাংছুনের এই গল্প নিয়ে হার্ভাড বিশ্ববিদ্যালয়ের এক বক্তৃতায় বলেন, আমাদের একজন ক্রীড়াবিদ ছিলেন। শ্রেষ্ঠ ফলাফল অর্জিত না হলেও পুরো চীনের চোখ ছিল তার দিকে। ৪০ কোটি লোকের প্রথম প্রতিনিধিত্ব করেন লিউ ছাংছুন।
-হোসনে মোবারক সৌরভ
অন্তরঙ্গ আলাপন
ছোটবেলায় নিজে নিজেই বাজাতে শুরু করেছিলাম: রীনাত ফওজিয়া
ছবি: অধ্যাপক রীনাত ফওজিয়া
বাসায় একটা ছোট সুরবাহার ছিল। বাবা (সঙ্গীতজ্ঞ মোবারক হোসেন খান) সেটা জানালার গ্রিলের সঙ্গে বেঁধে রাখতেন। আমি সেটার পিছনে বসে বাজাতে শুরু করলাম। বাবা-মা শেখাবেন না তো কী- আমি নিজে নিজেই শিখবো! বড় চাচা ওস্তাদ আবেদ হোসেন খানের বই ফলো করে শুরু করে দিলাম। আমার কাণ্ড দেখে মা (শিল্পী ফওজিয়া খান) বাবাকে বললেন, ওকে না শেখাতেই বাজনা শুরু করে দিয়েছে, শেখালে তো ভালো বাজাতে পারবে। এতে রাজি হলেন বাবা!
চীন আন্তর্জাতিক বেতারের সঙ্গে একান্ত সাক্ষাৎকারে ছোটবেলায় সেতার শেখার মরিয়া-চেষ্টার স্মৃতিচারণ করলেন বিশিষ্ট সেতারশিল্পী অধ্যাপক রীনাত ফওজিয়া। শোনালেন দাদা সুরসম্রাট ওস্তাদ আলাউদ্দিন খাঁ ও আয়েত আলী খাঁর গল্প। আর তার সেতারবাদন তো রয়েছেই।
সাক্ষাৎকার গ্রহণ: মাহমুদ হাশিম।
- - - - - - - - - - - - -
প্রিয় বন্ধুরা, আপনাদের মূল্যবান পরামর্শ আমাদের সমৃদ্ধ করবে। চীন আন্তর্জাতিক বেতার-সিআরই বাংলা’র ফেসবুক পাতা facebook.com/cmgbangla আপনার মন্তব্য করতে পারেন। সিএমজি বাংলা’র ফেসবুক পাতা facebook.com/cmgbangla এবং ইউটিউব লিঙ্ক youtube.com/cmgbangla তে গিয়েও আমাদের অনুষ্ঠান সম্পর্ক জানাতে পারেন আপনার মূল্যায়ন।
পরবর্তী অনুষ্ঠানে আমরা বাংলাদেশ-চীনের সংস্কৃতিক অঙ্গনের আরো কিছু খবর এবং গুণিজনের অন্তরঙ্গ আলাপন নিয়ে হাজির হবো আপনাদের সামনে। সে পর্যন্ত ভালো থাকুন।
প্রতিবেদন: হোসনে মোবারক সৌরভ
ছবি ও অডিও সম্পাদনা: তানজিদ বসুনিয়া
সাক্ষাৎকার গ্রহণ, গ্রন্থনা ও উপস্থাপনা: মাহমুদ হাশিম।