আগস্ট ১৯: চীনের বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের গত ১৬ আগস্ট প্রকাশিত পরিসংখ্যানে বলা হয়, এ বছরের প্রথম সাত মাসে চীনে সরাসরি বিদেশী বিনিয়োগের (এফডিআই) পরিমাণ ছিল ৬৭২ বিলিয়ন ইউয়ান, যা গত বছরের একই সময়ের তুলনায় ২৫ শতাংশ বেশি। বিশেষজ্ঞরা বলছেন, কোভিড-১৯ মহামারীর সত্ত্বেও বাজারে স্থিতিশীল পরিবেশ তৈরির সাহায্যে চীন এফডিআইয়ের সঠিক গন্তব্যে পরিণত হয়েছে। ‘আজকের টপিক’ অনুষ্ঠানে আমরা এই বিষয়ে আলোচনা করবো।
পরিসংখ্যানে বলা হয়, এ বছরের প্রথম সাত মাসে গোটা চীনে এফডিআইয়ের প্রকৃত ব্যবহারের পরিমাণ ছিল ৬৭২.১৯ বিলিয়ন ইউয়ান, যা পৃথকভাবে ২০২০ ও ২০১৯ সালের একই সময়ের তুলনায় যথাক্রমে ২৫.৫ ও ২৬.১ শতাংশ বেশি।
চীনের বৈদেশিক অর্থনীতি ও বাণিজ্য বিশ্ববিদ্যালয়ের আন্তর্জাতিক অর্থনীতি গবেষণালয়ের প্রধান সাং পাই ছুয়ান বলেন, ‘চীন মহামারী ঠেকাতে উল্লেখযোগ্য ফলাফল অর্জন করেছে। চীনা অর্থনীতি তুলনামূলকভাবে স্থিতিশীল উন্নয়ন বজায় রেখেছে। এটি পুঁজির নিরাপত্তা ও কার্যকারিতার দিক থেকে চীনকে বিদেশী পুঁজি বিনিয়োগকারীদের কাছে নিঃসন্দেহে এক উপযুক্ত জায়গা হিসেবে তুলে ধরেছে। যুক্তরাষ্ট্রসহ কিছু দেশে ব্যাপক মাত্রার শিথিল ব্যবস্থা নেয়ার পর, মুদ্রার অব্যাহত অবমূল্যায়নের লক্ষণ দেখা দিয়েছে। বৈশ্বিক মুদ্রার প্রবাহ যথেষ্ট বেড়ে যাওয়ায় মার্কিন ডলারসহ অন্যান্য মুদ্রার অবমূল্যায়নের কারণে বিদেশী বিনিয়োগকারীদের কাছে চীনের গুরুত্ব বেড়েছে। এভাবেই প্রচুর বিদেশী অর্থ চীনা বাজারে চলে আসে।’
চলতি বছরের প্রথম সাত মাসে চীনের সেবা খাতে এফডিআইয়ের প্রকৃত ব্যবহারের পরিমাণ ছিল ৫৩৫ বিলিয়ন ইউয়ান, যা গত বছরের একই সময়ের তুলনায় ২৯.২ শতাংশ বেশি এবং গোটা চীনের এফডিআইয়ের ৮০ শতাংশ। এ সময়ে ‘এক অঞ্চল, এক পথ’ এবং আসিয়ানভুক্ত দেশগুলোর চীনে প্রকৃত পুঁজির পরিমাণ ছিল গত বছরের একই সময়ের তুলনায় ৪৬ শতাংশ বেশি। এর মধ্যে হংকং, সিঙ্গাপুর ও লুক্সেমবার্গের প্রকৃত পুঁজির পরিমাণ দুই অঙ্কের বৃদ্ধি পায়।
উল্লেখ্য, সম্প্রতি কিছু ইউরোপীয় আন্তঃদেশীয় কোম্পানির অর্ধ-বার্ষিক রিপোর্ট প্রকাশিত হয়েছে। চীনের গাড়ি বাজার থেকে শুরু করে নিত্য প্রয়োজনীয় দ্রব্যের বাজারে পর্যন্ত এসব কোম্পানির উপস্থিতি রয়েছে, এবং তারা বিশাল সাফল্য অর্জন করেছে। এ বছরের প্রথমার্ধে জার্মানির গাড়ি নির্মাণ শিল্পপ্রতিষ্ঠান বিএমডাব্লিউ’র বৈশ্বিক আয়ের পরিমাণ ছিল গত বছরের একই সময়ের তুলনায় ২৮.১ শতাংশ বেশি। মার্সেডিজ-বেঞ্জ প্রকাশিত প্রতিবেদনে বলা হয়, এ বছরের প্রথমার্ধে চীনা ক্রেতাদের কাছে ৪ লাখ ৪০ হাজার গাড়ি বিক্রি করেছে তারা। এর বৈশ্বিক পরিচালক এবং চীনা বাজারের মহাব্যবস্থাপক ফান ছিং বলেন, চীনা বাজার তাঁদের জন্য ‘অপরিহার্য’।
বিশ্লেষকরা মনে করেন, চীন ও ইউরোপের আর্থ-বাণিজ্যিক সহযোগিতা বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে চীনের প্রবল ও বিশাল বাজারের চাহিদা আরও অধিক থেকে অধিকতর ইউরোপীয় আন্তঃদেশীয় কোম্পানিকে আকর্ষণ করবে। (ওয়াং হাইমান/এনাম/ছাই)