লেই ছিউফাং একজন তরুণী। তিনি বেশ দূর থেকে এসেছেন তার মাকে দেখতে। এই মা কিন্তু তার জন্মদাত্রী নন। জন্মের পরপরই পরিত্যক্ত হয়েছিলেন লেই। কিন্তু নিজের সন্তানের মতো তাকে পালন করেছেন যে মা তার নাম চাং কুইমেই। এমন আরও অনেক সন্তান রয়েছে চাং কুইমেইয়ের।
চীনের একজন শিক্ষাবিদ চাং কুইমেই। তিনি ১৭৭ জন শিশুর মা হিসেবে পরিচিত। চলতি বছর তিনি কমিউনিস্ট পার্টি অব চায়নার সর্বোচ্চ সম্মাননা জুলাই ১ মেডেলে ভূষিত হয়েছেন।
তিনি এতিম, শিশুদের জন্য গড়ে তুলেছেন আশ্রয় কেন্দ্র। ইউননান প্রদেশের হুয়াফিং কাউন্টিতে এই শিশুকেন্দ্র স্থাপিত হয় সুবিধাবঞ্চিত, অভিভাবকহীন শিশুদের জন্য।
চাং কুইমেইয়ের জন্ম চীনের উত্তরের প্রদেশ হেইলংচিয়ানে। ১৯৭৪ সালে ১৭ বছর বয়সী চাং আসেন দক্ষিণ চীনের ইউননান প্রদেশে স্কুলের শিক্ষিকা হিসেবে। ১৯৯৫ সালে স্বামীর অকাল মৃত্যুর পর নিঃসন্তান চাং প্রত্যন্ত অঞ্চল হুয়াফিং কাউন্টিতে একটি মিডল স্কুলে চাকরি নেন। সেখানে পিতৃমাতৃহীন কয়েকজন শিশুকে দেখে তার এত করুণা হয় যে তিনি নিজের সন্তান হিসেবে তাদের প্রতিপালন শুরু করেন। ২০০৮ সালে তিনি একটি গার্লস মিডল স্কুল স্থাপন করেন।
সুবিধাবঞ্চিত ছেলেমেয়েদের জন্য একটি শিশুকেন্দ্র প্রতিষ্ঠা করেন চাং। সেখানে স্কুলের পর শিশুরা আশ্রয় পায়, ঘর পায়। তারা তাকে মা বলে ডাকে। তিনি এই শিশুদের সব রকম যত্ন নেন। স্কুল ছুটির পর তাদের হোম ওয়ার্ক তৈরিতে সাহায্য করেন। তাদের সঙ্গে খেলাতেও অংশ নেন।
চাং কুইমেই এখন বৃদ্ধ। বহু বছরের কঠোর শ্রমের ফলে তার স্বাস্থ্য ভেঙে পড়েছে। তবু তিনি নিজের চেয়ে অনাথ শিশুদের কথাই ভাবেন। তার সন্তানরাও মায়ের জন্য ব্যাকুল। তার সেবা যত্নের কোন ত্রুটি তারা হতে দেয় না। এইভাবে বায়োলজিকালি মা না হয়েও ১৭৭ জনের মা বলে পরিচিতি পেয়েছেন চাং কুইমেই। পেয়েছেন সিপিসির সর্বোচ্চ সম্মাননা।
শান্তা মারিয়া