তাইওয়ানের কাছে যুক্তরাষ্ট্রের অস্ত্র বিক্রি চীনকে দৃঢ়ভাবে প্রতিহত করতে হবে: সিএমজি সম্পাদকীয়
2021-08-06 14:53:45

আগষ্ট ০৬: মার্কিন প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয় সম্প্রতি সেদেশের পররাষ্ট্র দপ্তরের চীনের তাইওয়ানের কাছে ৭৫০ মিলিয়ন মার্কিন ডলারের অস্ত্র বিক্রির পরিকল্পনাকে অনুমোদনের ঘোষণা দিয়েছে। এটি হলো বাইডেন সরকারের তাইওয়ানের কাছে প্রথম অস্ত্র বিক্রির ঘোষণা। মার্কিন এই উদ্যোগ গুরুতরভাবে চীনের অভ্যন্তরীণ ব্যাপারে হস্তক্ষেপ, চীনের সার্বভৌমত্ব ও নিরাপত্তার লঙ্ঘন, চীনা স্বার্থের পরিপন্থী  এবং আন্তর্জাতিক আইন ও সম্পর্কের মৌলিক নিয়মের লঙ্ঘন।  অবশ্যই এটি ‘এক চীন নীতি’ ও চীন-মার্কিন তিনটি ইস্তাহারের গুরুতর লঙ্ঘন। চীন এর দৃঢ় বিরোধীতা করে এবং প্রয়োজনীয় পাল্টা ব্যবস্থা নেবে। চায়না মিডিয়া গ্রুপের (সিএমজি)এক সম্পাদকীয়তে এসব বলা হয়।

উল্লেখ্য, চীন-মার্কিন তিনটি ইস্তাহার, বিশেষ করে ‘৮.১৮ ইস্তাহার’, অনুযায়ী যুক্তরাষ্ট্র ‘এক চীন নীতি’ স্বীকার করে তাইওয়ানকে চীনের একটি অবিচ্ছেদ্য অংশ হিসেবে মেনে নেই। গণপ্রজাতন্ত্র চীন সরকারকে একমাত্র বৈধ সরকার হিসেবেও মেনে নেই। যুক্তরাষ্ট্র ধীরে ধীরে সমস্যাটি সমাধান না-হওয়া পর্যন্ত তাইওয়ানে অস্ত্র বিক্রি ক্রমান্বয়ে কমিয়ে আনার প্রতিশ্রুতি দিয়ে চীনের সাথে সম্পর্ক গড়ে। তবে যুক্তরাষ্ট্র বার বার ইস্তাহারের লঙ্ঘন করেছে। তারা ‘তাইওয়ানের সঙ্গে সম্পর্ক আইন’ ব্যবহার করে তাইওয়ানে অস্ত্র বিক্রি বাড়াতে থাকে। বার বার তাইওয়ানের বিচ্ছিন্নতাবাদী শক্তিকে ভুল বার্তা পাঠিয়েছে। এটি গুরুতরভাবে তাইওয়ান প্রণালীর শান্তি ও স্থিতিশীলতার ক্ষতি করেছে এবং চীন-মার্কিন সম্পর্কের ওপর মারাত্মক প্রভাব ফেলেছে।

বর্তমান মার্কিন সরকার সাবেক সরকারের ভুল তাইওয়ান নীতি সংশোধণ করেনি। বরং আরো বড় রকম ভুলের দিকে অগ্রসর হচ্ছে। বর্তমান প্রশাসনের সময়ে মার্কিন বাহিনী তিন বার তাইওয়ানে অবতরণ করেছে, সামরিক জাহাজ এ বছরে সাত বার তাইওয়ান প্রণালী অতিক্রম করেছে, এবং মার্কিন পররাষ্ট্র দফতর এবার তাইওয়ানে অস্ত্র বিক্রির ঘোষণা করেছে। এসবের মাধ্যমে তাইওয়ান পরিস্থিতি অনেক উত্তেজনাময় হয়েছে। তাতে যুক্তরাষ্ট্র যে আসলে তাইওয়ান প্রণালীর শান্তি ও স্থিতিশীলতা নষ্টে লিপ্ত- তা সারা বিশ্বের কাছে আবারও প্রমাণীত হয়েছে।

তাইওয়ান হলো চীনের অবিচ্ছেদ্য অংশ। তাইওয়ান সমস্যায় চীন দৃড়ভাবে সার্বভৌমত্ব ও ভূখন্ডের অখন্ডতার সুরক্ষা করবে এবং কোনো বাহ্যিক শক্তিকে কখনোই চীনের অভ্যন্তরীণ বিষয়ে হস্তক্ষেপ করতে দেবেন না। সাম্প্রতিক বছরগুলোতে যুক্তরাষ্ট্র সার্বিকভাবে চীনকে নিয়ন্ত্রণ করার কৌশলগত পরিকল্পনার ওপর ভিত্তি করে ইন্দো-প্যাসিফিক কৌশল উন্নত করার চেষ্টা করছে। যুক্তরাষ্ট্রের চোখে তাইওয়ান আসলে চীনকে দমন করার একটি অস্ত্র। তবে তাইওয়ানের গণতান্ত্রিক প্রগতিশীল দল কর্তৃপক্ষ ভেবেছিল তারা যুক্তরাষ্ট্রের ওপর নির্ভর করতে পারে। তাই তারা তাইওয়ানের জন্য মূল ভূখণ্ডের সামরিক হুমকির কথা প্রচারের চেষ্টা করে। তাইওয়ান কর্তৃপক্ষ মার্কিন সামরিক অস্ত্র কিনে সামরিক শক্তি দিয়ে তাইওয়ানের স্বাধীনতা আদায় করতে চায়। তাইওয়ান কর্তৃপক্ষ তাইওয়ানের নাগরিকদের টাকা দিয়ে মার্কিন অস্ত্র কিনেছে। তাইওয়ানের নেটিজেনরা এর নিন্দা করে বলেন, যুক্তরাষ্ট্র শুধুমাত্র তাইওয়ানের কাছে সেকেলে অস্ত্র বিক্রি করছে। এটি তাইওয়ানের নাগরিকদের টাকার অপচয়। বর্তমানে দু’তীরের সম্পর্কের ক্ষেত্রে মূল ভূখণ্ড দৃঢ় রয়েছে। যখন তাইওয়ান প্রণালীর অবস্থার পরিবর্তন হবে, তখন তাইওয়ান যুক্তরাষ্ট্রের একটি পরিত্যক্ত টুকরা হবে।

চীন ঐক্যবদ্ধ হবে। কোন ব্যক্তি বা শক্তি ঐতিহাসিক ঐক্য প্রক্রিয়ায় বাধা দিতে পারবে না। যুক্তরাষ্ট্রকে ‘এক চীন নীতি’তে অবিচল থাকতে হবে এবং যত তাড়াতাড়ি সম্ভব তাইওয়ানে অস্ত্র বিক্রি বন্ধ করতে হবে। চীনা জনগণ ও বাহিনী দৃঢ়ভাবে জাতীয় সার্বভৌমত্ব ও ভূখন্ডের অখণ্ডতা রক্ষা করবে। তথাকথিত ‘তাইওয়ানের স্বাধীনতার’ দিবা স্বপ্নে বিভোর বিচ্ছিন্নতাবাদীদের ষড়যন্ত্রকে সমর্থন করার জন্য কোন বিপজ্জনক পদক্ষেপকে অনিবার্যভাবে একটি বিশাল মূল্য দিতে হবে। (ছাই/এনাম/স্বর্ণা)