মহামারী প্রতিরোধ ব্যবস্থা জোরদার করেছে চীন
2021-08-05 15:26:07

আগষ্ট ০৫: বর্তমানে সারা বিশ্বে কোভিড-১৯ মহামারী পরিস্থিতি দ্রুত গুরুতর হচ্ছে। ফলে চীন নিজ দেশের সীমানার বাইরে থেকে আসা মহামারী প্রতিরোধ ব্যবস্থা জোরদার করেছে। চীনের পরিবহন মন্ত্রণালয়, জাতীয় অভিবাসন প্রশাসন ব্যুরো, বেসামরিক বিমান চলাচল ব্যুরো তাদের চলমান মহামারী প্রতিরোধ ব্যবস্থা আরো উন্নত করেছে। চীনের রাষ্ট্রীয় পরিষদের যৌথ প্রতিরোধ ও নিয়ন্ত্রণ বিভাগ গতকাল (বুধবার) আয়োজিত এক সাংবাদিক সম্মেলনে এসব তথ্য জানানো হয়।

সাংবাদিক সম্মেলনে জাতীয় স্বাস্থ্য কমিশনের মুখপাত্র মি ফেং বলেন, বর্তমানে চীনের বিভিন্ন স্থানে কোভিড-১৯ মহামারী পুনরায়  ছড়িয়ে পড়ছে। সেজন্য আরো কঠোর ও জরুরী মহামারীর প্রতিরোধ ব্যবস্থা নিতে হবে।

এ সম্পর্কে মি ফেং বলেন,

বুধবার সকাল নয়টা পর্যন্ত চীনের ১৭টি প্রদেশে কোভিড-১৯ আক্রান্ত রোগীদের সন্ধান করা হয়েছে। এর মধ্যে উচ্চ ঝুঁকিপূর্ণ হিসেবে ১৪৪টি এলাকাকে চিহ্নিত করা হয়। এ সংখ্যা প্রতিরোধ ও নিয়ন্ত্রণ স্বাভাবিক হওয়ার পর থেকে সবচেয়ে বেশি। একাধিক এলাকায় জাতীয় মহামারী পরিস্থিতি ও স্থানীয় প্রাদুর্ভাবের প্রবণতা দেখা গেছে। নতুন সংক্রমিত ব্যক্তিদের শনাক্তে কঠোর ও দ্রুততর আঞ্চলিক তদন্ত করতে হবে। গুরুত্বপূর্ণ এলাকা ও কর্মীদের ব্যবস্থাপনা জোরদার করতে হবে, যাতে মহামারীর সংক্রমণ ছড়িয়ে  না পড়ে। ব্যক্তিগতভাবে মহামারী প্রতিরোধ জোরদার করতে হবে। মাস্ক পরতে, নিয়মিত হাত ধুতে, ভিড় এড়াতে, এবং টিকা নিতে উত্সাহিত করতে হবে।

পরিসংখ্যান মতে, এ পর্যন্ত চীনের ৩১টি প্রদেশ ও অঞ্চল এবং সিনচিয়াং উত্পাদন ও নির্মাণ সৈন্য গ্রুপের এলাকায় টিকা নেয়ার সংখ্যা ১.৭ বিলিয়ান ডোজ ছাড়িয়েছে।

বর্তমানে বিদেশে মহামারী পুনরায় ছড়িয়ে পড়ছে। সেজন্য চীনের বিদেশ থেকে আসা মহামারী প্রতিরোধ ব্যবস্থা উন্নত করতে হবে। জাতীয় অভিবাসন প্রশাসন ব্যুরোর সীমান্ত প্রতিরোধ পরিদর্শন ব্যবস্থাপনা বিভাগের পরিচালক লিউ হাই থাও বলেন, প্রাথমিক কাজের ভিত্তিতে অব্যাহতভাবে কঠোর ব্যবস্থাপনা নীতি ও ব্যবস্থা বলবত্ থাকবে। প্রয়োজন ছাড়া দেশ থেকে বেরিয়ে যাওয়ার জন্য সাধারণ পাসপোর্ট ও অন্যান্য প্রবেশ ও প্রস্থান নথি সাময়িকভাবে জারি করা হবে না। একই সময়ে বিশদভাবে নির্দিষ্ট সমস্যাগুলো মোকাবেলা করতে হবে।

লিউ আরো বলেন, যাদের বিদেশে পড়াশোনা, চাকরি, ব্যবসা ইত্যাদির জন্য সত্যিই আবেদন করতে হবে, যাচাই ও বাছাইয়ের পর সময় মত তাদেরকে ভিসা দেয়া হবে। যারা আন্তর্জাতিক মহামারী প্রতিরোধ সহযোগিতায় অংশ নেবেন এবং প্রতিষ্ঠানের উত্পাদন ও কাজ পুনরুদ্ধারে বিদেশে যেতে হবে, তাঁদেরকে সময় মত জরুরী ভিসা দিতে হবে। তাঁরা যেকোন সময় ভিসার আবেদন করতে পারবেন। জাতীয় অভিবাসন প্রশাসন ব্যুরোর ২৪ ঘন্টার হটলাইনে ফোন করতে পারবেন।

চীনের বিভিন্ন বিমান বন্দর, বন্দর ও কোন কোন হাসপাতালে অব্যাহভাবে বিদেশ ফেরতদের পরীক্ষা-নিরীক্ষা করা হয়।

সিভিল এভিয়েশন ফ্লাইট স্ট্যান্ডার্ড বিভাগের পরিচালক হান কুয়াং জু বলেন, ডেল্টাসহ অন্যান্য ভ্যারিয়েন্টে সংক্রমিত হওয়ার বৈশিষ্ট্য অনুযায়ী দৃঢ়ভাবে ‘প্রতিরোধ প্রযুক্তি নির্দেশিকা’ অনুসারে মহামারী প্রতিরোধ করতে হবে।

হান বলেন, দুর্বল লিঙ্কগুলি লক্ষ্য করে আমরা বিমান বন্দরে মহামারী প্রতিরোধের তত্ত্বাবধান ও নির্দেশিকা জোরদার করার পাশাপাশি পরীক্ষা জোরদার করবো। কর্মকর্তাদের প্রশিক্ষণ জোরদার করতে হবে এবং তাঁদের যত্ন বাড়াতে হবে। তাঁদের নিউক্লিক এসিড পরীক্ষা জোরদার করতে হবে।

মহামারী ছড়িয়ে পড়ার অবস্থা অনুযায়ী সড়ক, জল পরিবহন, খাদ্য আমদানি চেইন, বন্দরের মূল কর্মকর্তা ও জাহাজ ক্রুদের মহামারী প্রতিরোধ ব্যবস্থার নির্দেশিকা কঠোর করতে হবে।

জানা গেছে, মহামারী প্রতিরোধের জন্য মাঝারি ও উচ্চ ঝুঁকি সম্পন্ন এলাকা অন্তঃশহর বাস, টেক্সি, অনলাইন গাড়ি বন্ধ করতে হবে। এছাড়া, সেসব এলাকার মধ্য দিয়ে চলমান বাস ও রেল না থেমে অতিক্রম করে যাবে। (ছাই/এনাম/স্বর্ণা)