অগাস্ট ৪: বর্তমানে কোভিড-১৯ রোগ সৃষ্টিকারী নভেল করোনাভাইরাসের ডেল্টা ভ্যারিয়েন্ট বিশ্বে আতঙ্ক তৈরি করেছে। এ ভাইরাসের সংক্রমণ ক্ষমতা অনেক বেশি। এ অবস্থায় চীনের উত্পাদিত টিকা ডেল্টা ভ্যারিয়েন্ট প্রতিরোধে কতটুকো কার্যকর? এ বিষয়ে বিশেষজ্ঞ ও টিকা উত্পাদক প্রতিষ্ঠান কথা বলেছে।
সম্প্রতি বিদেশ থেকে আসা ভাইরাস চীনের বেশ কয়েকটি প্রদেশে ছড়িয়ে পড়েছে। চীনের টিকা তা প্রতিরোধ করতে পারবে কিনা- সে প্রশ্ন দেখা দিয়েছে। চীনের সাইনোফার্মের চেয়ারম্যান ইয়াং স্যিয়াও মিং সম্প্রতি সাংবাদিকদের বলেন, সাইনোফার্মের টিকা এখনও কোভিড-১৯ মহামারী প্রতিরোধে বেশ কার্যকর প্রমাণিত হয়েছে। তিনি বলেন,
পরীক্ষাগারে সাইনোফার্মের টিকার ক্রস-নিউট্রালাইজেশন পরীক্ষা চালানোর পর দেখা গেছে যে, সাইনোফার্মের টিকা করোনাভাইরাসের ডেল্টা ধরণসহ চারটি ভ্যারিয়েন্ট প্রতিরোধে কার্যকর।
সাইনোভ্যাকের সিসিও মাদাম ইয়াং কুয়াং সাংবাদিককে বলেন, তাঁরা ডেল্টা, বিটা ও গামা রূপের নমুনা পেয়েছেন। তাঁরা সাইনোভ্যাকের টিকা নেওয়া মানুষের সিরাম ভাইরাসের বিভিন্ন ধরণের সঙ্গে যাচাই করেছেন। এর উল্লেখযোগ্য প্রভাব দেখা গেছে। তিনি আরো বলেন,
সাইনোভ্যাকের টিকা বর্তমানে লাটিন আমেরিকায় ব্যাপকভাবে ব্যবহার করা হচ্ছে। টিকাটি ভাইরাসের গামা ধরণের সংক্রমিত অঞ্চলে মহামারী প্রতিরোধে কার্যকর ভূমিকা পালন করেছে। আমরা বর্তমানে ডেল্টা ধরণ-সম্পর্কিত নতুন টিকা গবেষণা ও উত্পাদনের চেষ্টা করছি।
জিফেইলংকেমা কোম্পানির তৈরি রিকম্বিন্যান্ট প্রোটিন কোভিড-১৯ টিকা চীনে ১৫ কোটি ডোজেরও বেশি ব্যবহার করা হয়েছে। কোম্পানির উত্পাদিত টিকা উজবেকিস্তানে রপ্তানি করা হয়েছে। কোম্পানিটির ভাইস চেয়ারম্যান জিয়াং লিং ফেং বলেন, যদিও মূল ধারার চেয়ে ডেল্টার মতো মিউট্যান্ট স্ট্রেনের বিরুদ্ধে জিফেই টিকার নিরপেক্ষ অ্যান্টিবডি টাইটারগুলোর একটি নির্দিষ্ট পরিমাণে হ্রাস পেয়েছে, তবে সেই পার্থক্য খুব কম।
তিনি আরো বলেন, পরীক্ষাগারের পরিসংখ্যানে দেখা গেছে, আমাদের টিকা ডেল্টা ভ্যারিয়েন্ট প্রতিরোধে বেশ মূল্যবান।
চীনের রাষ্ট্রীয় পরিষদের যৌথ যোগাযোগ ও প্রতিরোধ ব্যবস্থার বৈজ্ঞানিক গবেষণা ও জনসংযোগ বিশেষজ্ঞ গ্রুপের সদস্য শাও ই মিং সম্প্রতি বলেন, কোনো টিকা শতভাগ ভাইরাসের সংক্রমণ প্রতিরোধ করতে পারে না। বর্তমান গবেষণা ও পর্যবেক্ষণ থেকে জানা গেছে, চীনের উত্পাদিত টিকাগুলো ডেল্টাসহ কোভিড-১৯ মহামারীর মিউট্যান্ট স্ট্রেন প্রতিরোধের ক্ষেত্রে কার্যকর।
শাও আরো বলেন, গোটা বিশ্বে টিকা নেওয়ার পর পুনরায় সংক্রামিত হওয়ার বিষয়টি স্বাভাবিক; তবে এমন ঘটনা খুবই কম। মানবজাতি প্রথমবারের মতো কোভিড-১৯ মহামারীর টিকা ব্যবহার করছে। এখন তথ্য সংগ্রহ চলছে। ক্লিনিকাল পরিসংখ্যানে বলা হয়, কোনো টিকা শতভাগ ভাইরাস প্রতিরোধ করতে পারে না। তবে, বর্তমানে কোভিড-১৯ মহামারীর মিউট্যান্ট স্ট্রেন প্রতিরোধের চেষ্টা চলছে। এক্ষেত্রে চীনের নেওয়া প্রতিরোধমূলক ব্যবস্থাগুলো কার্যকর।
শাও আরো বলেন, চীনের উত্পাদিত টিকাগুলো কোভিড-১৯ মাহামারী প্রতিরোধের ক্ষেত্রে বেশ কার্যকর। বর্তমানে সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ বিষয় হলো ইতিবাচকভাবে টিকা গবেষণা ও টিকা দেওয়ার চেষ্টা করা।
(ছাই/তৌহিদ/স্বর্ণা)