গত ২১ জুলাই চীনের প্রেসিডেন্ট সি চিন পিং তিব্বতের লিনচিতে তার সফর শুরু করেন। দশ বছর আগের একই দিনে তিনি তিব্বতে সফর করেছিলেন। তখন তিনি লিনচির স্থানীয়দের খোঁজ খবর নিয়েছিলেন।
এ দিকে, গত ২৩ জুলাই তিনি তিব্বত স্বায়ত্তসাশিত এলাকার কমিউনিস্ট পার্টির কমিটি ও সরকারের কর্ম প্রতিবেদন শোনেন। আর সেদিনটি ছিল ঐতিহাসিক। কারণ ১০০ বছর আগে এদিন, অর্থাত্ ১৯২১ সালের ২৩ জুলাই, চীনের কমিউনিস্ট পার্টির (সিপিসি) প্রথম অধিবেশন শাংহাইয়ে শুরু হয়েছিল।
প্রেসিডেন্ট সির এবারের তিব্বত সফর এমন এক বিশেষ সময়ে হয়, যার বিশেষ ঐতিহাসিক অর্থ রয়েছে। ফলে তাঁর এ সফর অনেক অর্থবহ। আগে তিব্বত সফর করলেও ‘সিপিসির কেন্দ্রীয় কমিটির সাধারণ সম্পাদক, চীনের প্রেসিডেন্ট ও কেন্দ্রীয় সামরিক কমিশনের চেয়ারম্যান হিসেবে এই বার প্রথম তিব্বত সফর করলেন সি চিন পিং।
চলতি বছর পালিত হয় তিব্বতের শান্তিপূর্ণ মুক্তির ৭০তম বার্ষিকী। ১০ বছর আগে, যখন ৬০তম বার্ষিকী পালিত হয়, তখন সি চিন পিং চীনের ভাইস প্রেসিডেন্ট হিসেবে একটি প্রতিনিধি দল নিয়ে উদযাপনী অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন। প্রেসিডেন্ট হিসেবে তাঁর এবারের সফরের মূল কথা হল পরিবর্তন।
প্রেসিডেন্ট সি যেখানে গিয়েছেন, সে স্থানটিই এ পরিবর্তনের সঙ্গে সম্পৃক্ত। তিন দিনব্যাপী এই সফরে তিনি গ্রাম, শহরের পার্ক, রেল সংযোগস্থল, মন্দির এবং আবাসিক এলাকা পরিদর্শন করেছেন। এসব জায়গায় যে পরিবর্তন হয়েছে, তা তিব্বতের শান্তিপূর্ণ উন্নয়ন এবং তিব্বতে কেন্দ্রীয় সরকারের নীতিমালার প্রতিফলন।
যেখানে সফর করেন, সেখানেই প্রেসিডেন্ট সি জীবনযাত্রার মানের ওপর গুরুত্ব দেন। মানুষের জীবনযাত্রা সম্পর্কে তিনি খোঁজ নেন।
তিব্বতি বৌদ্ধধর্মের কাজ এতদাঞ্চলের শান্তি ও উন্নয়নের জন্য গুরুত্বপূর্ণ। প্রেসিডেন্ট সি এবার চে পাং নামে একটি মন্দিরে যান। স্থানীয় ধার্মিক লোকজনের মতে এ মন্দিরের উচ্চ মার্যাদা রয়েছে। সেখানে প্রেসিডেন্ট সি বলেন, ধর্মের উন্নয়নেরও নিয়ম আছে, তা হল ধর্মের উন্নয়ন মানুষের জীবনযাত্রার মানের উন্নয়নের জন্য সহায়ক হতে হবে। ধর্ম, সমাজ ও জাতির সম্প্রীতি গুরুত্বপূর্ণ।
তিব্বত সফরের কেবল চল্লিশ দিন আগে প্রেসিডেন্ট সি ছিং হাই প্রদেশ পরিদর্শন করেন। এত স্বল্প সময়ে এটি তার দ্বিতীয় ছিংহাই-তিব্বত মালভূমি সফর। যদিও দুটি সফরেই তিনি বিভিন্ন বিষয়ে খোঁজ খবর নিয়েছেন, তবে তিনি সব স্থানে পরিবেশ সংরক্ষণে গুরুত্বারোপ করেছেন। ছিংহাইতে প্রেসিডেন্ট সি বলেন, ছিংহাইয়ের প্রাকৃতিক পরিবেশ ভালভাবে রক্ষা করা দেশের প্রধান দায়িত্ব। তিব্বতেও তিনি একই ধারণার পুনরুল্লেখ করেন।
প্রেসিডেন্ট সির এবারের তিব্বত সফরের কারণ সম্পর্কে জানা যায় তাঁরই এক ভাষণে। তিনি বলেন, অনুশীলনে প্রমাণিত হয় যে সিপিসি ছাড়া নয়া চীন সম্ভব নয়, আর নয়া চীন ছাড়া নতুন তিব্বতও হবে না। তিব্বতের উন্নয়ন সিপিসির নেতৃত্বের সঙ্গে ঘনিষ্ঠভাবে সম্পৃক্ত। ভবিষ্যত উন্নয়ন সম্পর্কে প্রেসিডেন্ট সি বলেন, কেবল সিপিসিকে অনুসরণ করে এবং চীনা বৈশিষ্ট্যসম্পন্ন সমাজতান্ত্রিক পথে চলে সময় মত দ্বিতীয় শতবার্ষিক লক্ষ্য বাস্তবায়ন করা যাবে। (শিশির/এনাম/রুবি)