জুলাই ১৫: ২০২১ সালের প্রাকৃতিক পরিবেশ রক্ষাসংক্রান্ত ‘কুই ইয়াং’ আন্তর্জাতিক ফোরাম গত ১২ জুলাই শুরু হয়েছে। এবারের ফোরামের মূল্য প্রতিপাদ্য হচ্ছে: ‘স্বল্প-কার্বন নিঃসরণ ও সবুজ উন্নয়নের মাধ্যমে মানুষ ও প্রকৃতির সমন্বিত কমিউনিটি গড়ে তোলা’। টেকসই বিকাশের জন্য জাতিসংঘের ‘এজেন্ডা ২০৩০’ বাস্তবায়ন, চীনের ‘কার্বন নিরপেক্ষতা’ অর্জনের লক্ষ্য, এবং ইয়াংসি নদীর অর্থনৈতিক এলাকাসংক্রান্ত জাতীয় বিকাশ-কৌশলসহ বিভিন্ন বিষয় নিয়ে ফোরামে আলোচনা হচ্ছে।
২০০৯ সাল থেকে প্রাকৃতিক পরিবেশ রক্ষাসংক্রান্ত কুইইয়াং আন্তর্জাতিক ফোরামটি সফলভাবে দশবার অনুষ্ঠিত হয়েছে। এই বছরের ফোরাম ‘যৌথভাবে মানুষ ও প্রকৃতির কমিউনিটি গড়ে তোলা’ শীর্ষক প্রতিপাদ্যে বিভিন্ন দেশ সবুজ বিকাশের ক্ষেত্রে জ্ঞান ও অভিজ্ঞতার ভাগাভাগি করে নেওয়ার একটি প্ল্যাটফর্ম যুগিয়েছে। ফোরামের মহাসচিব ও বিশ্ব সংরক্ষণ ইউনিয়নের সভাপতি ও পরিচালনা পর্ষদের চেয়ারম্যান চাং সিন শেং বলেন,
‘পৃথিবীর প্রকৃতি যদি স্বাস্থ্যবান না-হয়, তবে মানবস্বাস্থ্যও ভালো হবে না এবং মহামারীকে বিশ্বব্যাপী সহযোগিতা ছাড়া পরাস্ত করা যাবে না। কোভিড-১৯ মহামারী আমাদের জন্য সতর্কতা দিয়েছে যে, আমরা স্বল্প-কার্বন নিঃসরণ ও সবুজ উন্নয়নের গুরুত্বপূর্ণ সুযোগ আর মিস করতে পারি না।’
‘পরিবেশ মানুষের জীবিকা, সবুজ পাহাড় হচ্ছে সুন্দর, নীল আকাশ হচ্ছে সুখ’। সাম্প্রতিক বছরগুলোতে, চীন প্রায়শই প্রাকৃতিক পরিবেশ রক্ষাসংক্রান্ত সংশোধনমূলক পদক্ষেপ গ্রহণ করে আসছে; প্রাসঙ্গিক আইন ও বিধিমালা প্রণয়ন ও সংশোধন করে আসছে। প্রাকৃতিক পরিবেশের অব্যাহত উন্নয়নের সঙ্গে সঙ্গে জনসাধারণের সুখের বোধ ও অর্জনের বোধও ব্যাপকভাবে বাড়ছে। টোঙ্গার প্রধানমন্ত্রী পোহিভা তুয়োনেটোয়া বলেছেন যে, চীন সক্রিয়ভাবে ‘টেকসই উন্নয়ন এজেন্ডা ২০৩০’ বাস্তবায়ন করেছে। এটি সুন্দর পৃথিবী গড়ে তোলার জন্য চীনের অবদান। চীনের পদক্ষেপ ও অর্জিত সাফল্য আন্তর্জাতিক সমাজের স্বীকৃতি পাওয়া উচিত। এই সম্পর্কে তিনি বলেন,
“চীন ইতোমধ্যেই প্রাকৃতিক পরিবেশ রক্ষাসংক্রান্ত বিভিন্ন উদ্যোগ গ্রহণ করেছে। দেশটি চারটি জাতীয় পর্যায়ের পরিবেশগত সভ্যতা পরীক্ষামূলক অঞ্চল প্রতিষ্ঠা করেছে। এই উদ্যোগ প্রতিটি দায়িত্বশীল দেশ, প্রতিষ্ঠান ও ব্যক্তিদের জন্য উদাহরণস্বরূপ।”
চীনের জাতীয় উন্নয়ন ও সংস্কার কমিশনের উপ-মহাপরিচালক থাং তেং চিয়ে বলেন, চীন ২০৩০ সালের আগেই ‘কার্বন নিঃসরণের ক্ষেত্রে শিখরে পৌঁছানোর’ চেষ্টা করছে। জাতীয় বনজ ও তৃণভূমি ব্যুরোর উপ-মহাপরিচালক লিউ তুং শেং জানান, কুইচৌ প্রদেশে বন বৃদ্ধির হার ৬১ শতাংশ বেশি।
কোভিড-১৯ মহামারীর প্রাদুর্ভাবের কারণে, এই ফোরামটি এবার অনলাইন ও অফলাইনের মাধ্যমে অনুষ্ঠিত হচ্ছে। দেশি-বিদেশি নেতারা, দেশি-বিদেশি প্রথম শ্রেণির বিশেষজ্ঞরা, আন্তর্জাতিক সংস্থা ও বিখ্যাত শিল্পপ্রতিষ্ঠানের প্রধানরা এবারের ফোরামে অংশ নিচ্ছেন। অতিথির সংখ্যা ৫ শতাধিক। এই বছরের ফোরামকে একটি সুযোগ হিসাবে গ্রহণ করে কুই চৌ কর্তৃপক্ষ সবুজ উন্নয়নের প্রয়োজনীয়তার দিকে মনোনিবেশ করেছে। তারা পরিবেশগত সভ্যতা প্রতিষ্ঠাকাজের সাফল্যসংক্রান্ত প্রদর্শনী, সবুজ পণ্যের প্রদর্শনী ও বাণিজ্য সম্মেলন, সবুজ শিল্পের বিভিন্ন প্রকল্পে বিনিয়োগ এবং সবুজ শিল্পের বিভিন্ন প্রকল্পের সহযোগিতাসংক্রান্ত চুক্তি স্বাক্ষরসহ বিভিন্ন অনুষ্ঠান আয়োজন করেছে। (ওয়াং হাইমান/আলিম/ছাই)