বন্ধুরা, আমরা জানি সম্প্রতি চীন দরিদ্র্যবিমোচনের পরিকল্পনা বাস্তবায়নের কাজ সম্পন্ন করেছে। তাহলে এখন চীনের গ্রামগুলো কেমন আছে? এখন আমি আপনাদেরকে ফুচিয়ান প্রদেশের একটি গ্রামের গল্প শোনাবো।
ফুচিয়ান প্রদেশের নিংদ্যেয়ের চিস্যি শে জাতির গ্রামটি একসময় ছিল দারিদ্র্যক্লিষ্ট। গ্রামবাসীদের জন্য যথেষ্ট খাবার ও পোষাক ছিল না। কিন্তু স্থানীয় সরকারের প্রচেষ্টায় বর্তমানে শে জাতির গ্রাম পর্যটন ও কৃষি শিল্প উন্নয়ন এবং সংস্কৃতি ও পরিবেশ সুরক্ষার মাধ্যমে দারিদ্র্যমুক্ত হয়েছে।
সকাল ১১টায় হালকা বৃষ্টিতে গ্রামবাসী চং লি মেই নিজের পারিবারিক হোটেলে অতিথিদেরকে স্বাগত জানান। “পর্যটন শিল্প উন্নয়নের মাধ্যমে আমরা নিজেদের জন্মস্থানে এখন ব্যবসায় করতে পারি। আমি ২০১৭ সালে নিজের বাড়ির তৃতীয় ও চতুর্থ তলা নতুন করে সাজিয়ে একটি পারিবারিক হোটেল চালু করি। বার্ষিক আয় আগের চেয়ে ২০ হাজার ইউয়ান বেড়েছে।”
পর্যটন শিল্প উন্নয়নের পাশাপাশি গ্রামটির শে জাতির সংস্কৃতি উন্নত হয়েছে। চু ও গ্রামটির নারীরা স্থানীয় কাঁচা পাথর দিয়ে হাতে আঁকা কারুশিল্প তৈরী করেন। নারীরা সবসময় একসঙ্গে শে জাতির গান ও নাচ শেখেন। তাঁরা গ্রামটির বিভিন্ন অনুষ্ঠানে পারফর্ম করেন। চং বলেন, পর্যটকদের এ ধরণের জাতীয় বৈশিষ্ট্যময় অনুষ্ঠানে আগ্রহ বেশি।
“আমরা শে জাতির সংস্কৃতি প্রচার করতে পারি এবং পর্যটকদের সঙ্গে আরো বেশি যোগাযোগ করতে পারি।”চং বলেন।
পাহাড়ের গভীর এলাকায় অবস্থিত চিস্যি গ্রাম আগে চীনের কুখ্যাত ভীষণ দরিদ্র গ্রাম ছিল। সাম্প্রতিক বছরগুলোয় চীনের দারিদ্র্যবিমোচন পরিকল্পনার আওতায় চীনের সংখ্যালঘু জাতির নাগরিকরা নতুন বাড়িঘরে স্থানান্তরিত হন। প্রাকৃতিক পরিবেশ উন্নত হয়েছে। শে জাতির গ্রামীণ পর্যটন ও চাশিল্প দ্রুত উন্নত হয়েছে। সবুজ পাহাড় ও পানি যেন ‘স্বর্ণ পাহাড় ও পানি’তে পরিণত হয়েছে। শে জাতির মানুষ দারিদ্র্য থেকে মুক্ত হয়েছে। শে জাতি গ্রামের বাসিন্দা লান ইউ স্যিয়াং বলেন, তাঁর নিজের চাষকৃত সাদা চা-র বিক্রয় অনেক বেড়েছে।
“চা বিক্রির বার্ষিক পরিমাণ প্রায় ৬০ হাজার ইউয়ান। আমার অন্য কাজ আছে। প্রতিবছর আমার আয় প্রায় ১.৪ লাখ ইউয়ান। আমি আগে ভাবিনি যে, আমার এতো সুন্দর জীবন হবে।” তিনি বলেন।
জানা গেছে, গত বছর শে জাতির গ্রামের মাথাপিছু আয় ৩০ হাজার ইউয়ান ছাড়িয়ে গেছে। এর মধ্যে সাদা চা ও পর্যটন শিল্প থেকে আয়ের অনুপাত ছিল ৬১ শতাংশ। গ্রামটির চীনা কমিউনিস্ট পার্টির কমিটির সম্পাদক দু চিয়া চু বলেন,
“আমাদের উচিত গভীরভাবে শে জাতির সংস্কৃতি প্রচার করে সাংস্কৃতিক পর্যটন উন্নয়ন করা, যাতে স্থানীয় বাসিন্দাদের আয় আরও বাড়ে।”