চীনের চলচ্চিত্র দ্য ওয়ান্ডারিং আর্থ
2021-07-09 19:31:40

সময় কাল ২০৬

১, সূর্য এখন ধারণ করেছে লাল দৈত্য-রূপ। আস্তে আস্তে পৃথিবী চলে যাচ্ছে বৃহস্পতির কাছে। আগামী ১০০ বছরের মধ্যেই ধ্বংস হতে চলেছে পৃথিবী।

পৃথিবীকে রক্ষার্থে বিশ্ববাসী আজ গড়ে তুলেছে ইউনাইটেড আর্থ গভর্নমেন্ট (ইউইজি) । মানব সভ্যতা রক্ষার লক্ষ্যে আলফা সেঞ্চুরি সিস্টেমে মাটির নিচে ভূগর্ভস্থ একটি শহর নির্মাণ করা হয়েছে অভিবাসনের জন্য। এটিকে বলা হচ্ছে ওয়ান্ডারিং আর্থ প্রকল্প।

পৃথিবীকে রক্ষা করার জন্য উত্তর গোলার্ধে নির্মাণ করা হয়েছে ফিউশন-চালিত আর্থইঞ্জিন- যেটি আন্তর্জাতিক মহাকাশ স্টেশন নামে পরিচিত ।

চাইনিজ নভোচারী লিউপেইখিয়াং তার চার বছরের ছেলে লিউ কিউকে প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলেন যে পৃথিবী বৃহস্পতির কাছাকাছি আসার আগেই তিনি রক্ষা করবেন পৃথিবীকে । শ্বশুর হান চিয়াংয়ের কাছে লিউ কি'র অভিভাবকত্ব অর্পণ করে তিনি চলে গেলেন মহাকাশে ।

পৃথিবীর আবর্তন বন্ধ হয়ে যাওয়ায় প্রাকৃতিক বিপর্যয়ে মারা যায় পৃথিবীর বেশিরভাগ লোক । আস্তে আস্তে হিমশীতল হতে থাকে পৃথিবীপৃষ্ঠ । বাকী মানুষগুলোকে নিরাপদে নিয়ে যাওয়া হয় মাটির নীচে নির্মিত ভূগর্ভস্থ শহরে।

১৭ বছর পরে, ২০৭৮ সাল, সেই ছোট্ট লিউ কিউই এখন প্রাপ্ত বয়স্ক। একটি অপরাধী দলের কাছ থেকে নকল আইডি এবং তাপ স্যুট কিনে পালক বোন হান দুডুডোকে সাথে নিয়ে চলে আসেন পৃথিবীতে। দাদার ক্লিয়ারেন্স পাস নিয়ে  ভ্রমন করতে শুরু করলেন বরফে ঢাকা পৃথিবী। কিন্তু এলোপাথাড়ি গাড়ি চালানোর কারনে গ্রেপ্তার হন একটি নিরাপত্তা চৌকিতে। দাদা  হান চিয়াং তাকে মুক্ত করতে এসে নিজেও গ্রেপ্তার হন ঘুষ দেয়ার অপরাধে।

কিন্তু হঠাৎ শুরু হল বিধ্বংসী ভূমিকম্প। পৃথিবীর অনেক ইঞ্জিন নষ্ট হয়ে গেল । বৃহস্পতির মাধ্যাকর্ষণ গ্যাস পুরো পৃথিবীকে সংঘর্ষের মধ্যে ফেলেছে। যে যার মত আত্মরক্ষার্থে পালাতে শুরু করলো । হান চিয়াং একটি ট্রাক নিয়ে পালাতে চেষ্টা করে করলে তাদের থামালো ক্যাপ্টেন ওয়াং লির নেতৃত্বে একটি সামরিক উদ্ধারকারী দল।

চীনের চলচ্চিত্র দ্য ওয়ান্ডারিং আর্থ_fororder_wenhua3

ছবি: দ্য ওয়ান্ডারিং আর্থ ছবি পোস্টার

এদিকে লিউ পেইখিয়াং দেখতে পান যে তাদের মহাকাশ স্টেশনের কমান্ডিং প্রক্রিয়া ফেইল করেছে। তাই ইউইজি  ওয়ান্ডারিং আর্থ প্রকল্পকে ব্যর্থ ঘোষণা করে নতুন স্টেশন নিয়ে মিশন শুরু করে। ইউইজির পরিকল্পনা এখন পৃথিবীকে রক্ষা বাদ দিয়ে একটি নতুন গ্রহে মানব বসতি স্থানান্তর।

এদিকে লিউ কিউ বৃহস্পতি এবং পৃথিবীর বায়ুমণ্ডলের অক্সিজেনযুক্ত মিশ্রণটিকে জ্বালিয়ে দিয়ে পৃথিবীকে দূরে সরিয়ে নিরাপদ রাখার প্রস্তাব করেন তার বাবাকে । কিন্তু বাবা জানতে পারেন যে এটি একটি অসম্ভব প্রক্রিয়া, যেটি ইসরাইলী বিজ্ঞানীরা আগেই গবেষণা করে ঘোষণা দিয়েছিলেন।

লিউ কিউ ও তার বন্ধুরা মিলে শুরু করলো মহাকাশের ইঞ্জিন হ্যাক করা। লিউ কিউ ও তার বাবা মিলে কি পারবে পৃথিবীকে বৃহস্পতির সাথে সংঘর্ষ থেকে রক্ষা করতে?  জানতে হলে আপনাকে দেখতে হবে পুরো সিনেমাটি।

ফ্র্যান্ট কৌও পরিচালিত সায়েন্স ফিকশনধর্মী এই সিনেমা জলবায়ু দূষণের ফলে সম্ভব্য পৃথিবীর ভবিষ্যতের অবস্থা সম্পর্কে আপনাকে একটি ভিজুয়াল দৃশ্য প্রদর্শন করবে।

২০০০ সালে প্রকাশিত লিও ছিসিংয়ের উপন্যাস দ্য ওয়ান্ডারিং আর্থের উপর ভিত্তি করে নির্মিত এই সিনেমা ২০১৯ সালে চীনা নববর্ষের দিনে মুক্তি পায়। বিশ্বব্যাপী ৭০০ মিলিয়ন ডলার আয় করেছে চায়না ফিল্ম গ্রুপের এই সিনেমা । যা এখন পর্যন্ত বিশ্বের সর্বোচ্চ আয়কারী ৫টি সিনেমার একটি।

আমেরিকান ডিজিটাল ম্যাগাজিন দ্য হলিউড রিপোর্টার এই সিনেমা নিয়ে লিখেছে ‘সৌরজগৎ নিয়ে চীনের শ্রেষ্ঠ একটি দর্শণীয় সিনেমা এটি’

আপনি যদি সায়েন্স ফিকশনধর্মী সিনেমা পছন্দ করে থাকেন তাহলে আপনার জন্য ভালো পছন্দ হতে পারে  দি ওয়ান্ডারিং আর্থ সিনেমাটি।

নেটফ্লিক্সসহ জনপ্রিয় সব স্ট্রিমিং প্লাটফর্মে এবং বাংলা সাবটাইটেলসহ উপভোগ করতে পারেন সিনেমাটি।

-হোসনে মোবারক সৌরভ।