চীনের দুই মহাকাশচারী ‘স্পেস ওয়াক’ করেছেন
2021-07-05 14:36:36

চীনের দুই মহাকাশচারী ‘স্পেস ওয়াক’ করেছেন_fororder_chu1

জুলাই ৫: চীনের মনববাহী মহাকাশ প্রকল্প কার্যালয় জানায়, বেইজিং সময় গতকাল (রোববার) বেলা ২টা ৫৭ মিনিটে, চীনের নতুন মহাকাশ স্টেশন থেকে বের হয়ে প্রথমবারের মতো ‘মহাশূন্যে হেঁটেছেন’ দুই নভোচারী। প্রায় সাত ঘণ্টার ‘স্পেস ওয়াকে’ শেনচৌ ১২নং নভোযানের মহাকাশচারীরা সুষ্ঠুভাবে সব নির্ধারিত কাজ সম্পন্ন করেছেন। চীনের মহাকাশচারী লিউ বো মিং, থাং হুং বো নিরাপদে থিয়ানহ্য কোর মডিউলে ফিরে যান। যা ২০০৮ সালে চীনের শেনচৌ ৭ নং মানববাহী নভোযান মিশনের পর চীনের মহাকাশচারীরা দ্বিতীয়বারের মতো মহাকাশযানের বাইরে ভ্রমণ। বিস্তারিত শুনুন আজকের সংবাদ পর্যালোচনায়।

 

বেইজিং সময় রোববার ৮টা ১১ মিনিটে, চীনের মহাকাশচারী লিউ বো মিং সফলভাবে থিয়ানহ্য কোর মডিউলের বাইরে বের হন। এরপর মহাকাশচারী লিউ বো মিং ও থাং হুং বো চীনের নিজস্ব গবেষণায় উত্পাদিত নতুন প্রজন্মের মহাকাশের পোশাক পরে থিয়ানহ্য কোর মডিউল থেকে মহাকাশে বের হন।

 

এ সময় নভোচারীরা সফলভাবে প্যানোরমিক ক্যামেরা স্থাপন করেন এবং যান্ত্রিক হাতের কর্মদক্ষতা পরীক্ষা করেন; তাঁরা প্রথমবারের মতো চীনের নতুন প্রজন্মের স্পেসসুটের পরীক্ষা করেন। তাঁরা স্পেস স্টেশন থেকে মহাকাশে বের হয়ে কাজ করার সুষ্ঠু ভিত্তি স্থাপন করেছেন।

 

জানা গেছে, যান্ত্রিক হাতের সংযোজন ও কার্যকর করা এবারের মিশনের গুরুত্বপূর্ণ একটি কাজ। এই যান্ত্রিক বাহু ১০.২ মিটার লম্বা। এটি সর্বোচ্চ ২৫ টন ওজন বহন করতে পারে। চীনের মহাকাশ বিজ্ঞান গ্রুপের স্পেস স্টেশন যান্ত্রিক হাত নিয়ন্ত্রণ সিস্টেমের ডিজাইনার লিয়াং ছাং ছুন জানান, যান্ত্রিক হাত সাতটি অ্যাঙ্গেলে মুভ করতে পারে, বিভিন্ন অস্থিসন্ধি ঘূর্ণায়মান ব্যবস্থার মাধ্যমে সামনে, পিছনে, বাম ও ডান দিকে ঘোরানো এবং বিভিন্ন স্থানে ধরা ও অপারেশন করা যায়। যা মহাকাশচারীদের সুষ্ঠুভাবে স্টেশনের বাইরে বের হয়ে বিভিন্ন কর্তব্য সম্পাদন নিশ্চিত করেছে। তিনি বলেন,

সাতটি অ্যাঙ্গেল মানে কাঁধের তিনটি অ্যাঙ্গেল, মাঝে একটি এবং  শেষ প্রান্ত বা কব্জিতে তিনটি অ্যাঙ্গেল।

চীনের দুই মহাকাশচারী ‘স্পেস ওয়াক’ করেছেন_fororder_chu2

কোনো কিছু ধরা বা স্পর্শ করার ক্ষমতা বাড়াতে স্পেস স্টেশনের কোর মডিউলের যান্ত্রিক হাতের হামাগুড়ির ক্ষমতাও সংযুক্ত করা হয়েছে। যা মহাকাশচারীকে দ্রুত নির্ধারিত স্থানে পাঠানোর জন্য বেশ সহায়ক। লিয়াং ছাং ছুন বলেন,

যান্ত্রিক হাত প্রধানত একজন মহাকাশচারী স্থানান্তরের সাহায্য করে, তারপর মহাকাশচারী দায়িত্ব সম্পন্ন করে, স্পেস স্টেশনের বাইরে মেরামতসহ বিভিন্ন কাজ করেন। এরপর যান্ত্রিক হাত ওই মহাকাশচারীকে আবারও কেবিনের দরজায় নিয়ে যায়। এভাবে মহাকাশচারীর স্থানান্তর আগের চেয়ে আরো দ্রুত হয়। কার্যকারিতাও অনেক বৃদ্ধি পায়।

 

স্পেস স্টেশনের যান্ত্রিক হাত হল চীনের মহাকাশ খাতের কাজ উন্নয়নের নতুন সংযোজন। বর্তমানে বেশ কিছু রাষ্ট্রীয় স্পেস রোবটের কাজ নির্ধারিত হয়েছে। স্পেস স্মার্ট সরঞ্জাম খাতে ‘চীনের উত্পাদন’ ক্রমেই বাড়ছে।

চীনের দুই মহাকাশচারী ‘স্পেস ওয়াক’ করেছেন_fororder_chu3

এবার শেনচৌ ১২নং অভিযানের মহাকাশচারীরা মহাকাশে চীনের নিজস্ব গবেষণায় তৈরি স্পেসসুট পরেছেন। চীনের মহাকাশচারী কেন্দ্রের স্পেসসুট প্রকল্প কার্যালয়ের মহাপরিচালক, মহাকাশচারী সিস্টেমের উপ ডিজাইনার চাং ওয়ান সিন জানান, নতুন প্রজন্মের স্পেসসুট কাঁচামাল, ডিজাইন, পরীক্ষা, যাচাই ও উন্নত করা, সবই চীনের নিজের গবেষণায় তৈরি। শেনচৌ ৭নং মিশনের তুলনায় নতুন স্পেসসুট আরো বেশি নিরাপদ। এটি পরে মহাকাশে আরো বেশি সময় থাকতে পারেন মহাকাশচারীরা। তারা দীর্ঘসময় এটি ব্যবহার করতে পারেন।

 

চাং ওয়ান সিন জানান,

বর্তমানে মহাকাশচারীরা এই স্পেসসুট পরে আট ঘণ্টা মহাকাশে কাজ করতে পারেন। আগের স্পেসসুটের সাইজ একটু বড় ছিল। এখন উন্নয়নের মাধ্যমে তা ১.৬ মিটার থেকে ১.৮ মিটার দীর্ঘ মহাকাশচারীর জন্য উপযোগী করা হয়েছে। মহাকাশচারীদের সুষ্ঠু নড়াচড়া নিশ্চিত করা হয়েছে। এই সুট পরে কাজ করা আরো সুবিধাজনক হয়েছে।

(শুয়েই/তৌহিদ/জিনিয়া)