“বাইরে খুব সুন্দর!” এটি গতকাল (রোববার) চীনের মহাকাশ স্টেশনের মূল কেবিন থেকে বের হয়ে চীনের নভোচারীদের বলা প্রথম কথা। এ কথার উত্তরে আমি আজ তাদের বলতে চাই, “চীনা নভোচারীরা, আপনাদের কাজও খুব সুন্দর!”
গতকাল ‘শেন চৌ-১২’ মহাকাশযানের নভোচারীরা মহাকাশ স্টেশনের মূল কেবিন থেকে বের হয়ে সরঞ্জাম ফিক্স করা ও ক্যামেরা ঠিক করাসহ নানা কাজ করেছেন। সাত ঘন্টা ধরে কাজ করার পর তাঁরা আবার মূল কেবিনে ফিরে যান। তাতে চীনের মহাকাশ স্টেশনের নভোচারীদের মহাশুন্যে প্রথম পদচারণা সফলভাবে সম্পন্ন হয়। তাঁদের প্রথম পায়চারি মহাকাশে পরিধান করা নতুন কাপড়, যান্ত্রিক বাহুর মাধ্যম চলাচল, নতুন পদ্ধতিতে কেবিন থেকে বের হওয়াসহ নানা কার্যক্রম চীনের মনুষ্যবাহী মহাকাশ অনুসন্ধ্যান এবং চীনের মহাকাশ স্টেশনের উন্নয়ন ইতিহাসে বিরল সফলতা পেয়েছে।
এটি ২০০৮ সালে ‘শেন চৌ-৭’ মহাকামযানের পর চীনা নভোচারীদের দ্বিতীয় বারের মতো হাটাহাটি, এবং মহাকাশ স্টেশন থেকে প্রথম হাটাহাটি। তেরো বছর পর চীন সাফল্যের সঙ্গে আবার মহাকাশে পায়চারি করেছে, যার তাত্পর্য অনেক।
এবারের পায়চারি সফল করতে নভোচারীদের মধ্যে একজন যান্ত্রিক বাহুর নানা অংশ ফিক্স করেছেন। যান্ত্রিক বাহু নভোচারীদের কেবিনের দরজা থেকে কাজ করার নির্দিষ্ট স্থানে স্থানান্তরিত হতে সাহায্য করে। এর কার্যকারিতা অনেক উন্নত ছিল।
আরেকজন কেবিনের পৃষ্ঠে নির্ধারিত হ্যান্ড্রিলের সাহায্যে কাজের নির্দিষ্ট স্থানে গিয়ে প্রথম নভোচারীকে সাহায্য করেন। তা ছাড়া, দুজন প্যানোরামিক ক্যামেরার স্থান ঠিক করেছেন। আগে সে ক্যামেরা একটি নিম্ন স্থানে স্থাপন করতে হতো। কিন্তু এবার নভোচারীরা সেই ক্যামেরা উচুঁ স্থানে স্থাপন করেন।
এবারের পায়চারির গুরুত্বপূর্ণ তাত্পর্য রয়েছে। চীনের মনুষ্যবাহী মহাকাশ কার্যালয়ের মহাপরিচালক বলেন, এবারে পদচারণা আরো জটিল। এর আওতা আরও বিশাল।পায়চারির মাধ্যমে মহাকাশ স্টেশনের ব্যবস্থার, নতুন মহাকাশ কাপড়ের কার্যকারিতা সাব্যস্ত হয়েছে। নভোচারীদের সঙ্গে যান্ত্রিক বাহুর সমন্বিত কার্যক্রমের সক্ষমতা প্রমাণিত হয়েছে। মহাকাশ স্টেশন থেকে বের হওয়ার নানা সমর্থক সরঞ্জামের নিরাপত্তা সক্ষমতা সফল হয়েছে। এসব পরবর্তীতে মহাকাশ স্টেশন কেবিন থেকে বের হওয়ার জন্য গুরুত্বপূর্ণ ভিত্তি স্থাপন করেছে।
নভোচারী লিই বো মিং সব কাজ সম্পন্ন করে মূল কেবিনে ফিরে যাওয়ার সময় বলেন, ‘সকল চীনাদের প্রতি তিনি কৃতজ্ঞ। আমরা আরও উচুতে উড়তে পারবো! আমরা আরও উচুতে উড়তে পারবো’। চীন তাঁর এ কথাকে সারা বিশ্বে ছড়িয়ে দিতে চায়। কারণ, তারা জানে, তাঁর এই কথা একদিন সফল হবেই।
রুবি/এনাম