ভবন ধসের পর উদ্ধার ও ত্রাণকাজে মার্কিন প্রশাসনের গাফিলতি হৃদয়বিদারক: সিআরআই সম্পাদকীয়
2021-07-04 17:07:27

জুলাই ৪: কোভিড-১৯ মহামারী মোকাবিলার ক্ষেত্রে মার্কিন প্রশাসনের নেতিবাচক প্রতিক্রিয়া বিশ্ববাসীকে আগেই মর্মাহত করেছে। সম্প্রতি যুক্তরাষ্ট্রের আরেকটি দুর্ঘটনায় মার্কিন প্রশাসনের প্রতিক্রিয়া আরেক দফা বিশ্ববাসীকে হতাশ করেছে। যুক্তরাষ্ট্রের ফ্লোরিডা রাজ্যের একটি আবাসিক ভবন ধসে যাওয়ার পর ইতোমধ্যেই ১০ দিন অতিক্রান্ত হয়েছে। কিন্তু সেখানে উদ্ধার ও ত্রাণকাজের অবস্থা খুবই খারাপ। উদ্ধারকাজে ধীরগতি মার্কিন জনগণকে হতাশ করেছে।

মার্কিন সরকারের উপাত্ত অনুসারে, স্থানীয় সময় ২ জুলাই পর্যন্ত, দুর্ঘটনায় ২২ জনের মৃত্যু নিশ্চিত করা গেছে। কিন্তু এখনও আরও ১২৬ জন নিখোঁজ আছেন। তার মানে, দুর্ঘটনার ১০ দিন পরও এই ১২৬ জন ভবনের ধ্বংসস্তুপের মধ্যে চাপা পড়ে আছেন। তাঁদের বেঁচে থাকার সম্ভাবনা খুবই কম।  

মার্কিন প্রশাসনের কার্যকলাপে বিরক্ত মার্কিনিরা। একজন মার্কিনি ইন্টারনেটে লিখেছেন: “হলিউডের চলচ্চিত্রের ‘আমেরিকান হিরোরা’ এখন কোথায়? তথাকথিত উচ্চমানের প্রযুক্তিই বা কোথায়?” অন্য একজন মার্কিন নাগরিক লিখেছেন: মার্কিন সরকারের সবচেয়ে জরুরি কাজ হচ্ছে শতাধিক মানুষের জীবন বাঁচানো; সিরিয়ায় যুদ্ধবিমান থেকে বোমা ফেলা নয়। 

আন্তর্জাতিক উদ্ধার ও ত্রাণ বিশেষজ্ঞরা বলছেন, কোনো ভবন ধসে পড়লে, প্রথম ২৪ ঘন্টা দুর্ঘটনাকবলিতদের উদ্ধারের জন্য সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ। আর ৭২ ঘন্টার মধ্যেই উদ্ধারকাজ শেষ করা জরুরি। এর পর আর কাউকে জীবিত উদ্ধার করা মুশকিল। কিন্তু যুক্তরাষ্ট্রে আমলাতান্ত্রিক জটিলতার কারণে সময় ইতোমধ্যেই অনেক নষ্ট হয়েছে।

 আসলে, মার্কিন প্রশাসনের উদ্ধার ও ত্রাণকাজের দক্ষতা কম। সরকারি কর্মকর্তারা সাধারণত নিজেদের ব্যর্থতার দায় অন্যদের ওপর বা সিস্টেমের ওপর চাপাতে চেষ্টা করেন। তা ছাড়া, তদন্তের দীর্ঘসময় তো রয়েছেই। যুক্তরাষ্ট্রে এসব হচ্ছে নিয়মিত চিত্র।   এ থেকে প্রমাণিত হয় যে, সংকট মোকাবিলার ক্ষেত্রে মার্কিন ব্যবস্থা তেমন কার্যকর নয়, মার্কিন সরকারি কর্মকর্তারা কার্যত ক্ষমতাহীন, এবং মার্কিন রাজনৈতিক ব্যবস্থাও তেমন কার্যকর নয়। 

মহামারীতে যুক্তরাষ্ট্রে ইতোমধ্যে ৬ লাখ মানুষ জীবন হারিয়েছেন। মহামারী চোখে আঙ্গুল দিয়ে দেখিয়ে দিয়েছে যে, যুক্তরাষ্ট্রের কতিপয় রাজনীতিবিদ সবচেয়ে বড় মানবাধিকার তথা জীবনের অধিকারকে পাত্তা দেন না। অথচ তারা ‘মানবাধিকারের’ অজুহাতে অন্যান্য দেশের অভ্যন্তরীণ ব্যাপারে হস্তক্ষেপ করে আসছে। মানুষের জীবন বাঁচানোকে একশ্রেণির মার্কিন রাজনীতিবিদ মানবাধিকার মনে করেন না। এখন মার্কিন নাগরিকরাও এটা উপলব্ধি করতে পারছে। (আকাশ/আলিম/মুক্তা)