আজহার লিমন, ঢাকা: উন্নয়ন বাজেটের সবচেয়ে বেশি অর্থ খরচ করা হলেও সুষম ও মানসম্মত বাস্তবায়ন না হওয়ায় প্রকৃত সুফল আসছে না সড়ক ও যোগাযোগ খাত থেকে। অর্থনীতিবিদরা বলছেন, উন্নয়নশীল দেশের বিনিয়োগ সম্ভাবনা কাজে লাগাতে নিতে হবে গ্রামকেন্দ্রিক অবকাঠামো উন্নয়ন কর্মসূচি। সড়ক যোগাযোগ বাড়ানোর পাশাপাশি রেল ও নৌ যোগাযোগকেও গুরুত্ব দেওয়ার কথাও বলেছেন বিশ্লেষকরা।
গেল ১০ বছরে বাংলাদেশের সড়ক ও যোগাযোগখাতে প্রায় পৌণে ৩শয়ের মত প্রকল্প নেওয়া হয়েছে। বাস্তবায়নাধীন আছে আরও প্রায় সাড়ে ৩শ প্রকল্প।এই সময়টাতে উন্নয়ন বাজেটের বড় অংশ ব্যয় হয়েছে সড়ক অবকাঠামো নির্মাণে। এর ধারাবাহিকতায় চলতি অর্থবছরেও উন্নয়ন বাজেট থেকে সর্বোচ্চ প্রায় সাড়ে ৬১ হাজার কোটি টাকা বরাদ্দ পেয়েছে সড়ক ও যোগাযোগ খাত। কিন্তু এর সুফল কতটা পাচ্ছে জনগণ? বাংলাদেশ ব্যাংকের সাবেক গভর্নর সালেহউদ্দিন আহমেদ মনে করেন, প্রকল্প বাস্তবায়নের অনেক ক্ষেত্রেই মান রক্ষা না হওয়ায় প্রকৃত সুফল থেকে বঞ্চিত হচ্ছে জনগণ।
সালেহউদ্দিন আহমেদ
তিনি বলেন, "আপনি যদি মানের কথা ধরেন। তা বিলো অ্যাভারেজ। এ থেকে বের হয়ে আসতে হবে।"
পদ্মা সেতু, মেট্রোরেল রেল, এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ে, বাস র্যাপিড ট্রানজিট কিংবা কর্ণফুলি টানেল, শুধু সড়ক যোগাযোগ খাতের জন্য নয়, উন্নয়নশীল বাংলাদেশের ব্রান্ডিং ক্ষেত্রেও বড় করে আলোচনা হচ্ছে এসব প্রকল্প। কিন্তু এই উদ্যোগগুলোর সবই প্রায় সড়ক ও শহরকেন্দ্রিক। কিন্তু সাশ্রয়ী যোগাযোগের জন্য গোটা বিশ্বব্যাপীই কদর আছে রেলের। নদীমাতৃক বাংলাদেশে রয়েছে নৌ সংযোগের বড় সম্ভাবনা।
তিনি বলেন, "সড়কের চেয়ে রেল সংযোগের অগ্রগতি কম। যদিও অনেক টাকা অপচয় হয়েছে। অপরদিকে নদীপথে যাতায়াত খরচ অনেক কম হয়। নৌপথগগুলো চালু হলে নদীগুলোও বাঁচবে।"
অর্থনীতিরা বলছেন, উন্নয়নশীল দেশ হওয়ায় পরিক্রমায় বাংলাদেশের প্রতি বিনিয়োগ আগ্রহী বাড়ছে আন্তর্জাতিক প্রতিষ্ঠানগুলোর। একইসঙ্গে রোড এন্ড বেল্ট ইনিশিয়েটিভের মত আন্তর্জাতিক উদ্যোগেও ভূরাজনৈতিক দিক দিয়ে বিরাট সম্ভাবনা আছে বাংলাদেশের। সিপিডির নির্বাহী পরিচালক ড. ফাহমিদা খাতুন মনে করেন, এসব সম্ভাবনা থেকে ফল ঘরে আনতে হলে নিশ্চিত করতে হবে সুষম অবকাঠামো উন্নয়ন।
ড. ফাহমিদা খাতুন
তিনি বলেন, "বিনিয়োগ পেতে হলে যোগাযোগ মসৃন করতে হবে। না হলে বড় ও বিদেশি বিনিয়োগকারীরা আগ্রহী হবেন না।"
টেকসই যোগাযোগখাতের জন্য দেশব্যাপী সংযোগ আর সুষম উন্নয়নের কথা বলেছেন এই দুই বিশ্লেষক।