বন্ধুরা, আপনার কাছে সংগীত মানে কি? হয়তো কারও কাছে সংগীত মনের অনুভূতি প্রকাশের একটি মাধ্যম। সুরের মাধ্যমে বলতে না-পারা কথা অন্যকে পৌঁছে দেওয়ার মাধ্যম। হয়তো কারও কাছে সংগীত শুধু উপভোগের বিষয়, ব্যস্ত জীবনে সান্ত্বনা ও বিনোদনের মাধ্যম। তবে, আমার কাছে সংগীত হলো ইতিহাসের এক ধরনের রেকর্ড। যা এক যুগের স্মৃতি ও চেতনা সংগীতের মাধ্যমে পরের প্রজন্মের কাছে পৌঁছে যায়।
আজ হল চীনা কমিউনিস্ট পার্টি প্রতিষ্ঠার শততম বার্ষিকী। গত ১০০ বছরে সিপিসি একটি ছোট পার্টি থেকে বিশ্বের বৃহত্তম পার্টিতে পরিণত হয়েছে। চীনও সিপিসি’র নেতৃত্বে বিপুল অগ্রগতি অর্জন করেছে। সিপিসি’র গল্প ও অভিজ্ঞতা গানে তুলে ধরা হয়েছে। এই বিশেষ দিনে আমরা একসঙ্গে শুনবো সিপিসি নিয়ে কিছু জনপ্রিয় গান। বন্ধুরা, অনুষ্ঠানের শুরুতে শুনুন একটি সুন্দর গান ‘একশ বছরের কবিতা’।গান ১
১৯২১ সালের জুলাই মাসে চীনের কমিউনিস্ট পার্টি প্রতিষ্ঠিত হয়। প্রতিষ্ঠার পথ ছিল অনেক কঠিন। সেই সময় ১৩জন প্রতিনিধি দেশের ৫০জন সদস্যের পক্ষ থেকে শাংহাইয়ে মিটিং করেন। কিন্তু এই খবর বিদেশি শক্তি জানতে পারে এবং তাদেরকে প্রতিরোধ করতে চায়। এই মিটিংয়ের জন্য প্রতিনিধিরা গোপনে শাংহাই থেকে পার্শ্ববর্তী চিয়াসিং শহরে যান, সেখানকার নান হ্রদের নৌকায় মিটিং শেষ করে সিপিসি প্রতিষ্ঠার ঘোষণা করেন। তখন চীনে একটি নতুন পার্টি যাত্রা করে- যা আজও আছে। সেদিনের সেই ছোট সম্মেলনের প্রভাব ছিল সুদূরপ্রসারী! এই ঘটনা নিয়ে একটি গান আছে। বন্ধুরা, এখন শুনুন গান ‘নান হ্রদের লাল নৌকার গান’।গান ২
সেই ছোট পার্টি বিভিন্ন শক্তির বিরুদ্ধে লড়াই করেছে। পার্টির সবচেয়ে কঠিন কাজ ছিল ছাং চেং বা লং মার্চ। ১৯৩৪ সালে শত্রু এড়াতে সিপিসি’র কেন্দ্রীয় লাল ফৌজ কৌশলগত স্থান পরিবর্তন করে। সিপিসি’র লাল ফৌজ চিয়াংসি প্রদেশ থেকে ১২০০ কিলোমিটারও বেশি পথ হেঁটে অবশেষে শায়ানসি প্রদেশে পৌঁছায়। এই লং মার্চে তারা ১৮টি বড় পাহাড় ও ২৪টি নদী অতিক্রম করেছে। তারা অনেক শত্রুর সঙ্গে যুদ্ধও করেছে। সিপিসি’র সেনারা তাদের দৃঢ় আদর্শ ও বিশ্বাস নিয়ে লং মার্চ সম্পন্ন করে এবং সিপিসি’র উন্নয়নে শক্তি সঞ্চয় করে। শুধু সিপিসি’র সদস্য নয় তাদের কঠোর পরিশ্রম ও নির্ভীক চেতনা থেকে সাধারণ মানুষও অনেক কিছু শিখেছে। বন্ধুরা, এখন শুনুন লং মার্চ সম্পর্কিত একটি সুন্দর গান ‘তুষার পাহাড় ও তৃণভূমি পার করে’।গান ৩
১৯৪৯ সালে গণপ্রজাতন্ত্রী চীন প্রতিষ্ঠিত হয়। চীন ১০০ বছরেরও বেশি সময় ধরে সংগ্রাম করে অবশেষে একটি স্বাধীন দেশ গঠন করেছে। এই বিপুল পরিবর্তনের পেছনে রয়েছে চীনা কমিউনিস্ট পার্টির নেতৃত্ব ও অসংখ্য সিপিসি সদস্যের আত্মত্যাগ। তাদের চেষ্টায় চীন একটি নতুন উন্নয়নের পথে এগিয়েছে এবং জনগণ দেশের মালিক হয়েছে। সে সময় জনগণের মধ্যে একটি কথা প্রচলিত ছিল: চীনের কমিউনিস্ট পার্টি না থাকলে গণপ্রজাতন্ত্রী চীন থাকবে না। বিভিন্ন জাতির মানুষও গানের মাধ্যমে সিপিসি’র প্রতি তাদের কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেছে। বন্ধুরা, এখন শুনুন চীনের বিখ্যাত তিব্বতি সংগীতশিল্পী ছাইতানচৌমার একটি সুন্দর গান ‘পার্টি নিয়ে লোকসংগীত গাই’।গান ৪
‘জনগণের সেবা করা’ চীনা কমিউনিস্ট পার্টির মূল লক্ষ্য ও মিশন। তার অর্থ সবসময় জনস্বার্থে কাজ করা। ইতিহাস বলছে, জনকল্যাণে সিপিসি অনেক কাজ করেছে। যেমন- কৃষি উত্পাদন বাড়ানো, জলসেচ ও রাস্তাসহ অনেক অবকাঠামো নির্মাণ করা, দরিদ্র অঞ্চলে শিক্ষা ও চিকিত্সার ব্যবস্থা জোরদার করা ইত্যাদি। ২০২০ সাল পর্যন্ত চীন সার্বিকভাবে চরম দারিদ্র্য দূর করেছে, দেশের সব গ্রামে রাস্তা, বিদ্যুৎ ও নেটওয়ার্ক সংযুক্ত হয়েছে। এসব কাজে জনগণের জীবন আরো ভালো হয়েছে, দেশ আরো শক্তিশালী হয়েছে। এটাই সিপিসি’র প্রতি চীনা জনগণের সমর্থনের কারণ। বন্ধুরা, এখন শুনুন গান ‘জনগণের সেবা করা’।গান ৫
চীনের উন্নয়ন সিপিসি’র নেতৃত্ব ছাড়া সম্ভব না। সিপিসি প্রতিষ্ঠার ১০০ বছরে চীন বিপুল অগ্রগতি অর্জন করেছে। এতে প্রমাণিত হয় সিপিসি’র নেতৃত্ব সঠিক ও কার্যকর। আগামী ১০০ বছরে সিপিসি’র নেতৃত্বে চীন আরো বেশি অগ্রগতি অর্জন করবে, বিশ্ব ও মানবজাতির উন্নয়নে আরো বেশি অবদান রাখবে। বন্ধুরা, অনুষ্ঠান শেষে আমরা আরও একটি সুন্দর গান ‘স্বপ্ন অনুসরণ করা’ শুনবো। আশা করি এসব গানের মাধ্যমে চীনের কমিউনিস্টি পার্টির কিছু গল্প জানতে পেরেছেন এবং এসব গান আপনাদের ভালো লাগছে।গান ৬
বন্ধুরা, আজকের অনুষ্ঠান তাহলে এখানে শেষ করছি, আশা করি আমাদের অনুষ্ঠানে প্রচারিত গানগুলো আপনাদের ভালো লেগেছে। এখন বিদায় নিচ্ছি। সবাই ভালো থাকুন, সুন্দর থাকুন ও সুস্থ থাকুন। আবার কথা হবে।