জুন ২৫: চীনের রাষ্ট্রীয় পরিষদের তথ্য-কার্যালয়ে গতকাল (বৃহস্পতিবার) ‘মানবাধিকার রক্ষায় সিপিসির মহান অর্জন’ শীর্ষক শেত্বপত্র প্রকাশিত হয়েছে। শেত্বপত্রে বলা হয়, চীনা কমিউনিস্ট পার্টি (সিপিসি) প্রতিষ্ঠার পর বিগত ১০০ বছর ধরেই মানবাধিকারের সার্বজনীন নীতিকে দেশের বাস্তবতার সাথে সঙ্গতিপূর্ণ করার ব্যাপারে অবিচল থেকেছে। এই প্রক্রিয়ায় দেশের অবস্থার সঙ্গে সঙ্গতিপূর্ণ মানবাধিকার উন্নয়নের পথ খুঁজে বের করা হয়েছে এবং সে পথে ব্যাপক অগ্রগতিও অর্জন করেছে সিপিসি। পাশাপাশি, চীন সক্রিয়ভাবে আন্তর্জাতিক মানবাধিকার বিষয়ে অংশগ্রহণ করে আসছে, বৈশ্বিক মানবাধিকার ব্যবস্থাপনায় চীনা বুদ্ধি ও চীনা প্রস্তাব পেশ করে এসেছে।
শ্বেতপত্রে বলা হয়েছে, সিপিসি মানবাধিকার সুরক্ষায় সফল হয়েছে। চীনের মানবাধিকার গবেষণা সমিতির সচিব ও চিন লিন বিশ্ববিদ্যালয়ের আইন ইন্সটিটিউটের অধ্যাপক লু কুয়াং চিন রাষ্ট্রীয় পরিষদের এক প্রেস ব্রিফিংয়ে বলেন
“সিপিসি প্রতিষ্ঠার শততম বার্ষিকী উপলক্ষ্যে এমন একটি শেত্বপত্র প্রকাশিত হয়েছে, যা সার্বিকভাবে সিপিসিকে জানতে, বিস্তারিতভাবে চীনের মানবাধিকার উন্নয়ন পরিস্থিতিকে উপলব্ধি করতে, এবং আরও সার্বিকভাবে চীনকে বুঝতে আন্তর্জাতিক সমাজকে সাহায্য করবে।”
শেত্বপত্রে বলা হয়েছে, জনগণকে শীর্ষস্থানে রাখা, মানবাধিকারের সার্বজনীন নীতিকে দেশের বাস্তবতার সাথে সমন্বিত করা, ব্যক্তির অস্তিত্ব ও উন্নয়নের অধিকারকে অগ্রাধিকার দেওয়া, জনগণের সুখী জীবনকে সর্বোচ্চ মানবাধিকার হিসেবে গণ্য করা, এবং মানুষের সার্বিক উন্নয়নকে এগিয়ে নেয়ার ক্ষেত্রে সিপিসি বরাবরই অবিচল থেকেছে। এই সম্পর্কে অধ্যাপক লু বলেন, মানবাধিকারের সার্বজনীন নীতিকে দেশের বাস্তবতার সাথে সমন্বয় করা হচ্ছে চীনা মানবাধিকার ব্রত উন্নয়নের সবচেয়ে মূল্যবান অভিজ্ঞতা। এই সম্পর্কে তিনি বলেন
“মানবাধিকারের সার্বজনীনতা ধরে রাখতে চাইলে, দেশের অবস্থার সাথে সঙ্গতিপূর্ণ মানবাধিকারের পথে অবিচল থাকা জরুরি। এই কারণে আমরা বহু আন্তর্জাতিক মানবাধিকার কনভেশনে যোগ দিয়েছি এবং সেসব কনভেনশানের চেতনা নিজের দেশের অবস্থার সঙ্গে সমন্বয় করেছি।”
শ্বেতপত্রে আরও বলা হয়েছে, সিপিসি’র নেতৃত্বে চীনা মানবাধিকার ব্রত মানবজাতির মানবাধিকার পরিস্থিতির উন্নয়নে ভূমিকা রেখেছে। অধ্যাপক লু মনে করেন, চীনা মানবাধিকারের উন্নয়ন পশ্চিমা দেশগুলোর লিবারেল হিউম্যান রাইটসকে মানের দিক দিয়ে ছাড়িয়ে গেছে। চীনা মানবাধিকার হচ্ছে ‘জনগণকে কেন্দ্র করে’ অর্জিত মানবাধিকার।
মানবাধিকারের অজুহাতে বহু বছর ধরে সিনচিয়াং, হংকং ও তিব্বতসহ চীনের অভ্যন্তরীণ ব্যাপারে কিছু পশ্চিমা দেশের নোংরা হস্তক্ষেপ সম্পর্কে অধ্যাপক লু বলেন
“চীনা মানবাধিকার নিয়ে প্রকৃত অর্থে পশ্চিমা দেশগুলোর কোনো আগ্রহ নেই, তাদের আগ্রহ চীনের অভ্যন্তরীণ ব্যাপারে হস্তক্ষেপ করা। তারা তথাকথিত মানবাধিকারের দ্বৈত মানদণ্ড নিয়ে চীনা মানবাধিকারের ওপর দোষারোপ করছে। এর উদ্দেশ্য হচ্ছে বিশ্বের সামনে চীনকে ছোট করা। তবে, এই নোংরা আচরণের মাধ্যমে তারা রাজনৈতিক উদ্দেশ্য হাসিল করতে পারবে না এবং চীনের উত্থান ও চীনের উন্নয়নকে নিয়ন্ত্রণও করতে পারবে না।”
শেত্বপত্রে বলা হয়, বিশ্বের শান্তি রক্ষা করতে, সহযোগিতার মাধ্যমে উন্নয়ন ত্বরান্বিত করতে এবং উন্নয়নের মাধ্যমে মানবাধিকার ত্বরান্বিত করতে কাজ করে যাবে চীন। মানবাধিকার পরিস্থিতির আরও উন্নয়নে কাজ করে যাবে চীন এবং আন্তর্জাতিক মানবাধিকার ব্রতে অংশগ্রহণ করে বৈশ্বিক মানবাধিকার ব্যবস্থাপনায় চীনা বুদ্ধি ও চীনা প্রস্তাব তুলে ধরা অব্যাহত রাখবে। বিশ্বের বিভিন্ন দেশের সঙ্গে মানবজাতির অভিন্ন স্বার্থের কমিউনিটি গড়ে তুলতে চীন ইচ্ছুক বলেও শেত্বপত্রে উল্লেখ করা হয়েছে। (ওয়াং হাইমান/আলিম/ছাই)