বন্ধুরা, আজকের অনুষ্ঠানে চীনের একজন অসাধারণ গায়িকা ও উপস্থাপিকার সঙ্গে আপনাদেরকে পরিচয় করিয়ে দেবো, তার নাম ওয়েই হুয়া। তাকে চীনা রক সংগীতের প্রতিনিধি হিসেবে বিবেচনা করা হয়। তিনি পাশ্চাত্যের সংগীত পর্যালোচকদের দৃষ্টিতে চীনের শ্রেষ্ঠ স্বাধীন সংগীতশিল্পী। বন্ধুরা, অনুষ্ঠানের শুরুতে একসঙ্গে শুনবো লো ছির একটি সুন্দর গান ‘আধুনিকীকরণ’।গান ১
ওয়েই হুয়া ১৯৬২ সালে বেইজিংয়ে জন্মগ্রহণ করেন। ছোটবেলা থেকে ওয়েই হুয়া সংগীত খুব পছন্দ করতেন। তিনি সবসময় দাদার সঙ্গে অপেরা শুনতেন, আর এক বার শুনেই গান গাইতে পারতেন। তার স্কুলের ফলাফল অনেক ভালো। মাধ্যমিক স্কুল শেষ হওয়ার পর তিনি বেইজিং ব্রডকাস্টিং ইনস্টিটিউটে ভর্তি হন। তিনি সেখানে উপস্থাপনা করা শিখেন। বিশ্ববিদ্যালয়ের জীবনে ওয়ে হুয়া প্রথমবারের মত বিদেশি রক গান শোনেন। সেই সময় পাশ্চাত্যের রক সংগীত চীনে খুব কম পরিচিত ছিল, তবে ওয়েই হুয়া তা খুব পছন্দ করেন। তাই তিনি মাঝে মাঝে রক গান গাইতেন।গান ২
বিশ্ববিদ্যালয় থেকে স্নাতক পাসের পর ওয়েই হুয়া উপস্থাপনার কাজ শুরু করেন। ১৯৮৮ সালে ২৬ বছর বয়সে ওয়েই হুয়া চীনের সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ একটি অনুষ্ঠান--বসন্ত উত্সবের গালা পরিচালনা করেন। পরে তিনি চীনের পক্ষ থেকে ফ্রান্সে উপস্থাপনা অনুষ্ঠান করেন। তরুণ উপস্থাপক হলেও তিনি অনেক প্রশংসিত হন। সে বছর তিনি চীনের উপস্থাপক মহলের সর্বোচ্চ পুরস্কার ‘আইমি’ জয় করেন। এরপর ১৯৮৯ সালে ওয়েই হুয়া একটি বিস্ময়কর সিদ্ধান্ত নেন। তিনি উপস্থাপনার কাজ ছেড়ে দেন এবং একটি রক ব্যান্ড গঠন করেন। ব্যস্ত জীবনে হঠাত্ করেই ওয়েই হুয়া আবিষ্কার করেন যে, রক সংগীত তার সবচেয়ে প্রিয়। রক সংগীতের স্বাধীন ও বিদ্রোহী ধারণা তিনি অনুসরণ করতে চান। বন্ধুরা, এখন শুনুন ওয়েই হুয়ার প্রথম অ্যালবামের একটি সুন্দর গান ‘সূর্য উঠে’।গান ৩
ওয়েই হুয়া রক সংগীত খুব পছন্দ করেন। রক সংগীতের মাধ্যমে তিনি স্বাধীনতার চেতনা প্রকাশ করতে চান। তাই ১৯৯৩ সালে ওয়েই হুয়া সেই ব্যান্ড ছেড়ে দেন এবং নিজে রক গান রচনা করা শুরু করেন। ১৯৯৫ সালে তার ব্যক্তিগত অ্যালবাম ‘অধুনিকীকরণ’ প্রকাশিত হয়। এই অ্যালবামে ওয়েই হুয়া একজন নারী হয়ে সামাজিক নানা অন্যায়ের সমালোচনা করেন, নারীদের নরম ও সূক্ষ্ম অনুভূতি প্রকাশ করেন, রক গান হলেও তা যেন দার্শনিক কবিতার মতো। যুক্তরাষ্ট্রের বিখ্যাত সংগীত মিডিয়া অ্যালবামটিকে ‘বিশ্বের সবচেয়ে বেশি শোনা নারী শিল্পীর রক অ্যালবাম’ হিসেবে বিবেচনা করে। বন্ধুরা, এখন শুনুন এই অ্যালবাম থেকে ওয়েই হুয়ার একটি জনপ্রিয় গান ‘কমরেডরা’।গান ৪
১৯৯৯ সালে ওয়েই হুয়া নতুন অ্যালবাম ‘এসিড বৃষ্টি’ প্রকাশ করেন। এই অ্যালবামে চীনা গান ছাড়া তিনি অনেক ইংরেজি গান গেয়েছেন এবং পাশ্চাত্য সংগীতশৈলীর মাধ্যমে প্রাচ্য সংস্কৃতি তুলে ধরেছেন। ২০ বছর পর এই অ্যালবামের গান শুনলে এখনও তা খুব ফ্যাশনেবল মনে হয়। ‘রক সংগীত শুধু পুরুষের সংগীত’ এমন বদ্ধমূল চিন্তাধারা ওয়েই হুয়া পরিবর্তন করেছে। আর তার প্রভাবে চীনে আরো অনেক জনপ্রিয় রক গায়িকা হাজির হন। বন্ধুরা, এখন শুনুন ওয়েই হুয়ার সুন্দর গান ‘এসিড বৃষ্টি’।গান ৫
বন্ধুরা, এবার আমার একসঙ্গে শুনবো ওয়েই হুয়ার একটি জনপ্রিয় গান ‘পুরানো নিষিদ্ধ নগর’। বেইজিংয়ের নিষিদ্ধ নগরের ৬০০ বছরের ইতিহাস রয়েছে। দীর্ঘ এ সময়ে তার সৌন্দর্য কমেনি। এর মাঝে দাঁড়ালে মনে হয়- সময় থেমে গেছে এবং মন শান্ত হয়েছে। ওয়েই হুয়া এ অনুভূতি বেশ পছন্দ করেন। তিনি মনে করেন, দ্রুত গতির জীবনে মানুষের উচিত নিষিদ্ধ নগরের পরিবেশ অনুভব করা। তাহলে এখন ওয়েই হুয়ার গান ‘পুরানো নিষিদ্ধ নগর’ শুনুন; গানে মনের শান্তি খুঁজুন।গান ৬
এখন ওয়েই হুয়া নতুন গান প্রকাশ করেন না, কিন্তু তার সংগীতের প্রভাব এখনও রয়েছে। বন্ধুরা, অনুষ্ঠানের শেষ পর্যায়ে আমরা একসঙ্গে ওয়েই হুয়ার আরেকটি সুন্দর গান ‘প্রতিবার তোমাকে আলিঙ্গন করতে চাই’ শুনবো। আশা করি, আপনারা তার গানগুলো পছন্দ করবেন।গান ৭
বন্ধুরা, আজকের অনুষ্ঠান তাহলে এখানে শেষ করছি, আশা করি আমাদের অনুষ্ঠানে প্রচারিত গানগুলো আপনাদের ভালো লেগেছে।এখন বিদায় নিচ্ছি। সবাই ভালো থাকুন, সুন্দর থাকুন ও সুস্থ থাকুন। আবার কথা হবে।