“বিশ্বে বিদেশি প্রত্যক্ষ পুঁজি চলতি বছর তলানিতে ঠেকবে এবং ফের ঘুরে দাঁড়াবে; তবে এখনও অনিশ্চয়তা আছে”
2021-06-23 14:15:06

 

জুন ২৩: গতকাল (মঙ্গলবার) জাতিসংঘের বাণিজ্য ও উন্নয়ন সম্মেলনের পুঁজি ও শিল্পপ্রতিষ্ঠান বিভাগের মহাপরিচালক চান সিয়াও নিং চায়না মিডিয়া গ্রুপ সিএমজিকে এক সাক্ষাত্কার দিয়েছেন। তিনি জাতিসংঘের বাণিজ্য ও উন্নয়ন সম্মেলনের প্রকাশিত সর্বশেষ ‘২০২১ সালের বৈশ্বিক পুঁজি রিপোর্ট’ বিস্তারিতভাবে তুলে ধরেন। এই রিপোর্ট অনুযায়ী, বৈশ্বিক বিদেশি প্রত্যক্ষ পুঁজি (এফডিআই) ২০২১ সালে তলানিতে ঠেকবে এবং ফের বাড়বে বলে ধারণা করা হয়। এর প্রবৃদ্ধির হার ১০ থেকে ১৫ শতাংশের মধ্যে থাকবে। তবে, ভবিষ্যতে আরও অনিশ্চয়তা রয়েছে। আজকের সংবাদ পর্যালোচনায় আমি এই বিষয়ে আলোচনা করবো।

 

“বিশ্বে বিদেশি প্রত্যক্ষ পুঁজি চলতি বছর তলানিতে ঠেকবে এবং ফের ঘুরে দাঁড়াবে; তবে এখনও অনিশ্চয়তা আছে”_fororder___172.100.100.3_temp_9500033_1_9500033_1_6016_2d75fd04-fef3-47ef-ad35-cc8a61dd59ab

‘উন্নত দেশগুলোর এফডিআই হ্রাসের হার ৫৮ শতাংশ। অন্যতম কারণ হলো- কিছু শিল্পপ্রতিষ্ঠানের পুনর্গঠন এবং শিল্পপ্রতিষ্ঠানের অভ্যন্তরীণ অর্থ প্রবাহ। উন্নয়নশীল দেশগুলোর বৈদেশিক প্রত্যক্ষ পুঁজি তুলনামূলক শক্তিশালী ছিল; হ্রাস হয়েছে ৮ শতাংশ। এর প্রধান কারণ হচ্ছে- এশিয়ায় বিদেশি অর্থের ব্যাপক প্রবাহ। উন্নয়নশীল দেশগুলোর অর্থনৈতিক গোষ্ঠীর এফডিআই’র পরিমাণ গোটা বিশ্বের তুলনায় বেড়েছে। এ পরিমাণ ২০২০ সালে আগের বছরের চেয়ে দুই তৃতীয়াংশেরও বেড়েছে’।

 

মহাপরিচালক চান বলেন, গেল বছর এশিয়া ছিল একমাত্র এলাকা, যেখানে এফডিআই বেড়েছে। এ অঞ্চলে পুঁজি প্রবাহের পরিমাণ গোটা বিশ্বে প্রত্যক্ষ বৈদেশিক প্রবাহের মোট পরিমাণের অর্ধেকেরও বেশি। তিনি বলেন, বাণিজ্য ও নির্মাণ শিল্প পুনরুদ্ধার এবং জিডিপি’র প্রবল প্রবৃদ্ধির কারণে ২০২১ সালে এশিয়ায় এফডিআই বৃদ্ধির সম্ভাবনা বৈশ্বিক গড় মানের চেয়ে ভাল।

 

রিপোর্টে বলা হয়, ২০২০ সালে চীনের এফডিআই প্রবৃদ্ধির গতি বেড়েছে; যা ৬ শতাংশ বৃদ্ধি পেয়ে ১৪৯ বিলিয়ন মার্কিন ডলারে পৌঁছেছে। এ থেকে স্পষ্ট যে, কোভিড-১৯ মহামারী প্রতিরোধে চীনের সফলতা এবং দেশের জিডিপি’র দ্রুত প্রবৃদ্ধি অর্জন। প্রবৃদ্ধির মূল খাত হচ্ছে প্রযুক্তি সংক্রান্ত শিল্প, ইলেক্ট্রনিক বাণিজ্য ও গবেষণা। ২০২০ সালে বিশ্বের প্রথম বৈদেশিক পুঁজিবিনিয়োগকারী দেশ হিসেবে চীনের প্রত্যক্ষ বৈদেশিক পুঁজির পরিমাণ ১৩৩ বিলিয়ন মার্কিন ডলারে স্থিতিশীল রয়েছে।

 

মহাপরিচালক চান বলেন, এ বছর এফডিআই সম্ভবত তলানিতে ঠেকবে এবং ফের ঘুরে দাঁড়াবে। তবে, বৈশ্বিক বৈদেশিক পুঁজির খাত এখনও অস্থিতিশীল রয়েছে। এর অনেক কারণ রয়েছে। যেমন, অর্থনীতি পুনরুদ্ধারের গতি কম, ফের মহামারীর ঝুঁকি, বৈদেশিক প্রত্যক্ষ পুঁজির ওপর ধারাবাহিক আর্থিক পুনরুদ্ধার উদ্যোগের প্রভাব এবং বিভিন্ন দেশের নীতিগত চাপ। ২০২১ সালে বিশ্বে এফডিআই পুনরুদ্ধার তুলনামূলকভাবে কম হচ্ছে। কারণ, অপ্রতুল কোভিড-১৯ টিকা, ভাইরাসের নতুন সংক্রমণ এবং পুনরায় অর্থনীতি উন্মুক্ত করাসহ বিভিন্ন ক্ষেত্রে বিরাট অস্থিতিশীলতা থাকা।

 

মহাপরিচালক চান আরও বলেন, এফডিআই খাতে  ভারসাম্যহীনতাও দেখা যাচ্ছে। তিনি বলেন-

 

‘অসমভাবে প্রত্যক্ষ বৈদেশিক পুঁজি পুনরুদ্ধার হচ্ছে। উন্নত অর্থনৈতিক গোষ্ঠী এফডিআই প্রবৃদ্ধিকে উত্সাহিত করবে। এশিয়ায় প্রত্যক্ষ বিদেশি পুঁজির প্রবাহ আরও শক্তিশালী হবে। কারণ, মহামারী চলাকালে এ অঞ্চলটি আন্তর্জাতিক বিনিয়োগের আকর্ষণীয় গন্তব্য হয়ে উঠেছিল। আফ্রিকা, লাতিন আমেরিকা এবং ক্যারিবীয় অঞ্চলে শিগগিরি এফডিআই উল্লেখযোগ্যভাবে পুনরুদ্ধারের সম্ভাবনা নেই’।

(ওয়াং হাইমান/তৌহিদ/ছাই)