রোববারের আলাপন-বাবা দিবসে পৃথীবির সব বাবাকে শুভেচ্ছা
2021-06-20 20:11:19

আকাশ: সুপ্রিয় শ্রোতা, সবাইকে স্বাগত জানাচ্ছি চীন আন্তর্জাতিক বেতারের বাংলা অনুষ্ঠানে। আপনাদের আন্তরিক প্রীতি ও শুভেচ্ছা জানিয়ে শুরু করছি আমাদের সাপ্তাহিক আয়োজন ‘রোববারের আলাপন’। আপনাদের সঙ্গে আছি এনাম এবং শিয়েনান আকাশ।

আকাশ: বন্ধুরা, আজ বাবা দিবস। বিশ্বের সকল বাবার প্রতি রইলো আমাদের শ্রদ্ধা ও ভালোবাসা। বিশেষ করে মহামারীর এ কঠিন সময়ে আমরা বিশ্বের সব বাবাদের জন্য প্রার্থনা করি: তারা যেন সুস্থ থাকেন, আনন্দে থাকেন, এবং নিরাপদে ও শান্তিতে থাকেন। 

এনাম: ভাই,  বাবা দিবস কীভাবে শুরু হয়েছিল?
আকাশ: বাবা দিবস গত শতাব্দী অর্থাত্ বিংশ শতাব্দীর প্রথমদিকে শুরু হয়। মূলত যুক্তরাষ্ট্র থেকে এই দিবসের শুরু। এখন বিশ্বব্যাপী তা পালিত হয়। কিন্তু তা স্থানভেদে ভিন্ন ভিন্ন দিনে পালিত হয়।  

সবচেয়ে বেশি দেশে উদযাপিত হয় প্রতি বছরের জুন মাসের তৃতীয় রোববার। বর্তমানে বিশ্বের ৫২টি দেশ ও অঞ্চল এ দিনটিতে বাবা দিবস পালন করে। দিবসটি বিভিন্নভাবে উদযাপন করা হয়, যেমন- উপহার দেওয়া, পরিবারের সবাই একত্রিত হয়ে সুন্দর সময় কাটানো ইত্যাদি।

চীনের মূল-ভূখণ্ডে আনুষ্ঠানিকভাবে বাবা দিবস নির্ধারণ করা হয়নি। কিন্তু অনেকে জুন মাসের তৃতীয় রোববার এ দিবসটি পালন করেন। চীনের তাইওয়ানে আগস্ট মাসের আট তারিখে পালন করা হয়।
 
এনাম: ভাই, আগস্ট মাসের আট তারিখে কেন?

আকাশ: কারণ, আগস্টকে চীনা ভাষায় বলা হয় বা ইউ। বা মানে আট আর ইউ মানে মাস। বা হাও মানে আট তারিখ। এখানে হাও মানে তারিখ। এজন্য আগস্টের আট তারিখকে চীনা ভাষায় ‘বা ইউ বা হাও’ বলা হয়। আপনি দেখেন, এখানে দুবার বা শব্দটি আছে। চীনা ভাষা, এবং বাংলা ভাষাসহ অনেক ভাষায় পিতাকে বলা হয় বাবা। এখানেও দুই বার বা ব্যবহৃত হয়। এজন্য এ দিনটিতে বাবা দিবস পালিত হয়। 

এনাম: অনেক মজার! ‘বা ইউ বা হাও’ হল বাবা দিবস।

আকাশ: ভাই, বাংলাদেশে বাবা দিবস পালিত হয় না কি? কীভাবে এ দিবসটি পালিত হয় সেখানে? 
এনাম: ...
আকাশ; হ্যাঁ। বন্ধুরা, আগে আমরা মাকে নিয়ে একটি অনুষ্ঠান করেছি। মনে আছে? আসলে মা-বাবা দুজনেই আমাদের জীবনে সবচেয়ে আপন, সবচেয়ে কাছের এবং সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ মানুষ। তাঁরা আমাদের অস্তিত্বের সাথে মিশে আছেন। তাঁরা হচ্ছেন এ পৃথিবীতে আমাদের সবচেয়ে বেশি আদর করার মানুষ। মা-বাবার কথা বললে মনে অনেক অনুভূতি তৈরি হয়।

ছোটবেলায় আমরা অনেকে ডাক্তার, ইঞ্জিনিয়ার, শিক্ষকসহ কত কিছু হতে চেয়েছি। কিন্তু এখন যদি কেউ জিজ্ঞাস করেন, তোমার স্বপ্ন কী? আমরা অনেকে অবশ্যই বলবো, পরিবারের সবাইকে নিয়ে একসাথে থাকা এবং মা-বাবার সুস্থ, সুন্দর জীবন কামনা করা, তাইনা? আমাদের স্বপ্ন পরিবর্তন হয়েছে। অথবা আমরা বলতে পারি, বয়স বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে আমরা ধীরে ধীরে জীবনের অর্থ বুঝতে পেরেছি, বুঝতে পেরেছি জীবনে কী কী বিষয় সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ। 

এনাম ভাই, আপনি কী বলেন?
এনাম:...

আকাশ: ভাই, আপনি এখন সুদূর চীনে থাকেন। বাবার কাছ থেকে অনেক দূরে। আপনি অবশ্যই আপনার বাবাকে অনেক মিস করেন, তাইনা? আপনি আপনার জীবনে বাবার সাথে সবচেয়ে অবিস্মরণীয় একটি স্মৃতি আমাদের সাথে শেয়ার করতে পারেন?
এনাম:....
আকাশ: এনাম ভাই, বাংলাদেশে মহামারীর সর্বশেষ পরিস্থিতি কী? আপনি আমাদের বাংলাদেশের ভাইবোনদের করোনা প্রতিরোধে কী কী প্রস্তাব দিতে চান?

এনাম...

আকাশ: বন্ধুরা, কোভিড-১৯ প্রতিরোধের লড়াইয়ের এ গুরুত্বপূর্ণ সময়ে সবাই দয়া করে ভালভাবে মাস্ক পরবেন। ভিড় এড়িয়ে চলবেন। বাইরে অবস্থানকালে হাত দিয়ে নাক বা মুখ স্পর্শ করবেন না। বাসায় ফিরে ভালোভাবে সাবান দিয়ে হাত ধোবেন। নিজের ও পরিবারের যত্ন নিবেন।

সংগিত...

আকাশ: ভাই, আমি আবারো আপনার বাবা অর্থাত্ আমাদের চাচার এবং সবার বাবার সুস্থ, আনন্দঘন এবং সুখী জীবন কামনা করি। 


আকাশ: বন্ধুরা, অনুষ্ঠান শেষে আমরা আপনাদের একটি গান শোনাবো। গানের নাম ‘বাবা’। 

বন্ধুরা, এ গানটি আমি প্রথমে শুনি বাংলাদেশে চীনা দূতাবাসে। চীনের বসন্ত উত্সব উপলক্ষে দূতাবাসে আয়োজিত একটি সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানে গানটি শুনি। তখন চোখের পানি ধরে রাখতে পারিনি। এ গানটি বিশ্বের সকল বাবাকে এখন উত্সর্গ করছি।

গানটির কথা প্রায় এ রকম: 
সবসময় তোমার কাছ থেকে শুধু নিতে থাকি,
কিন্তু কখনোই ‘ধন্যবাদ’ বলি না।
বড় হওয়ার পর, তোমার জীবনের অনেক কঠিন বিষয় বুঝতে পেরেছি।
প্রতিবার তোমাকে ছেড়ে আসার সময়, সবসময় ‘সহজ’ হওয়ার ভান করার মতো হেসে হেসে বলি, “তুমি ফিরে যাও”
যখন আমি ঘুরে দাঁড়াই, চোখ থেকে পানি পড়ে।  

আমি আগের মতোই তোমার উষ্ণ হাত ধরতে চাই।
কিন্তু তুমি আমার পাশে নেই, বাতাসের মাধ্যমে তোমাকে আমার শুভেচ্ছা পাঠাতে চাই: “তুমি সুস্থ ও সুখে থাকো”
সময়, সময়, দয়া করে ধীরে চলো, 
তোমাকে আরো পুরোনো হতে দেব না,
আমার জীবনে কোনো কিছুই চাই না, শুধু তুমি পুরোনো হয়ো না, 
সারা জীবন সর্বোচ্চ চেষ্টাকারী বাবা, আমি তোমার জন্য কী করতে পারবো?
আমার সামান্য যত্ন তুমি গ্রহণ করো
তোমার সবকিছুর জন্য তোমাকে ধন্যবাদ।
তোমার দুটি হাতে আমাদের পরিবার ধরে রাখো
তুমি সবসময় সর্বাত্মক প্রচেষ্টায় আমাকে শ্রেষ্ঠ জিনিষ দিয়েছো 
আমি তোমার গর্ব? এখনো আমাকে নিয়ে তুমি চিন্তিত?
তোমার ছেলে এখন বড় হয়েছে,
ধন্যবাদ, সারা পথে তুমি আছো। 
আকাশ/এনাম