প্রতিদিন রসুন রাখুন পাতে
2021-06-18 19:50:21

প্রতিদিন রসুন রাখুন পাতে_fororder_jiankang4

বিভিন্ন রোগ নিরাময়ে রসুনের ব্যবহার হয়ে আসছে প্রাগৈতিহাসিক কাল থেকে। মিশরীয়‚ ব্যাবিলনীয়‚ গ্রিক‚ রোমান ও চৈনিক সভ্যতায় ওষুধ হিসেবে রসুনের ব্যবহারের নিদর্শন পাওয়া যায়। পশ্চিমা ওষুধের জনক বলে খ্যাত গ্রিক চিকিৎসাবিজ্ঞানী হিপোক্রেটিস বিভিন্ন জটিল রোগের চিকিৎসায় রসুন ব্যবহার করতেন। এখন আধুনিক চিকিৎসাবিজ্ঞানও এটা প্রমাণ করেছে যে, রসুনের রয়েছে নানা ধরনের স্বাস্থ্যগত উপকারিতা বা ঔষধি গুণ। রসুনে পাওয়া যায় ক্যালসিয়াম‚ কপার, পটাশিয়াম, ফসফরাস, আয়রন, ভিটামিন বি১, ভিটামিন সি, ভিটামিন বি৬ ও ম্যাঙ্গানিজ। এছাড়া এতে থাকে বিভিন্ন ধরনের পুষ্টি উপাদান, যা আমাদের শরীরের জন্য খুব দরকারী। চলুন জেনে নেই ওষুধের গুণাগুণ সম্পর্কে:

রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়ায়: রসুন খেলে ইমিউন সিস্টেম বা রোগ প্রতিরোধ ব্যবস্থা শক্তিশালী হয়। এর ফলে রসুনের সাপ্লিমেন্ট বা কাঁচা রসুন খেলে ফ্লু ও কমন কোল্ড বা সর্দি তাড়াতাড়ি সেরে যায়। বারো সপ্তাহ ধরে পরিচালিত এক গবেষণায় দেখা গেছে, প্রতিদিন রসুনের সাপ্লিমেন্ট খেলে প্লাসিবো সাপ্লিমেন্টের তুলনায় সর্দিতে আক্রান্ত হওয়ার হার কমে ৬৩ শতাংশ। আর সর্দিতে আক্রান্ত হলেও এর লক্ষণ ৭০ শতাংশ অর্থাৎ ৫ দিন থেকে মাত্র দেড় দিনে কমে আসে।

কোলেস্টেরলের মাত্রা ঠিক রাখে: নিয়মিত রসুন খেলে শরীরে এলডিএল বা খারাপ কোলেস্টেরোল হ্রাস পায় আবার অন্যদিকে এইচডিএল বা ভালো কোলেস্টেরোল বৃদ্ধি পায়। এবং এর মাধ্যমে হৃদরোগের ঝুঁকি কমে। পরীক্ষায় প্রমাণিত হয়েছে, নিয়মিত রসুন সাপ্লিমেন্ট গ্রহণে খারাপ কোলেস্টেরোল ১০ থেকে ১৫ শতাংশ হ্রাস পায়।

শরীর থেকে বিষাক্ত পদার্থ দূর করে: উচ্চমাত্রায় রসুন গ্রহণ করলে এতে থাকা সালফার যৌগ সীসা ও অন্যান্য ভারী ধাতুর বিষক্রিয়া থেকে শরীরকে রক্ষা করে। গাড়ির ব্যাটারি তৈরির কারখানায় কাজ করে এমন একদল কর্মীর ওপর ৪ সপ্তাহ ধরে চালানো এক গবেষণায় দেখা গেছে, রসুন শরীরের সীসার উপস্থিতি কমায় ১৯ শতাংশ পর্যন্ত। মাথাব্যাথা ও উচ্চ রক্তচাপের মতো বিষক্রিয়ার লক্ষণও কমতে দেখা যায় ওই কর্মীদের মধ্যে।

রক্তচাপ কমাতে সাহায্য করে: হৃদরোগ যেমন হার্ট অ্যাটাক ও স্ট্রোকের কারণে সারা পৃথিবীতে সব চেয়ে বেশি সংখ্যক মানুষের মৃত্যু হয়। উচ্চ রক্তচাপ বা হাইপারটেনশন হৃদরোগের প্রধান কারণ। কিন্তু দেখা গেছে, রোজ চার কোয়া করে রসুন খেলে রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণে থাকে।

বয়সের প্রভাব রোধ করে: রসুনে এমন কতগুলো অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট থাকে যেগুলো মানবদেহের কোষকে ক্ষতির হাত থেকে বাঁচায় এবং বয়সের প্রভাব রোধ করে। এর ফলে অ্যালঝাইমার ও ডিমেনশিয়ার মতো রোগের হাত থেকে রক্ষা পাওয়া যায়।

দীর্ঘজীবী হতে সাহায্য করে: দীর্ঘজীবন পাওয়ার সঙ্গে রসুনের সরাসরি সম্পর্ক বৈজ্ঞানিকভাবে প্রমাণ করা সম্ভব না। তবে রসুন যেহেতু রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণে রাখে, শরীরের রোগপ্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়ায় এবং অনেক সংক্রমণ থেকে শরীরকে রক্ষা করে, তাই আপনার দীর্ঘজীবী হওয়ার সম্ভবনা অনেকেটা বেড়ে যায়।

হাড়ের শক্ত করে: রসুন খেলে হাড় কতটা শক্ত হয়, সে ব্যাপারে সরাসরি কোনও বৈজ্ঞানিক তথ্য-উপাত্ত নেই, তবে ইঁদুরের ওপর পরিচালিত পরীক্ষায় দেখা গেছে, নারীদেহে ইস্ট্রোজেন বাড়ানোর মাধ্যমে হাড়ের ক্ষয় রোধ করে রসুন। মাসিক ঋতুচক্ত বন্ধ হয়ে গেছে এমন নারীদের ওপর পরিচালিত এক গবেষণায় দেখা গেছে, প্রতিদিন ২ গ্রাম কাঁচা রসুনের সমপরিমাণ রসুনের নির্াস গ্রহণ  করলে শরীরে ইস্ট্রোজেন-স্বল্পতা কমে।

ত্বকের সংক্রমণ সারিয়ে তোলে: রসুনে থাকা অ্যান্টি ভাইরাল ও অ্যান্টি ব্যাকটেরিয়াল প্রপার্টি ত্বকের সংক্রমণের চিকিৎসায় ভালো কাজে লাগে। - রহমান