চীনারা প্রথমবারের মতো নিজস্ব মহাকাশ স্টেশনে প্রবেশ করলেন
2021-06-18 13:13:20

চীনারা প্রথমবারের মতো নিজস্ব মহাকাশ স্টেশনে প্রবেশ করলেন_fororder_06181

চীনারা প্রথমবারের মতো নিজস্ব মহাকাশ স্টেশনে প্রবেশ করলেন_fororder_06182

চীনারা প্রথমবারের মতো নিজস্ব মহাকাশ স্টেশনে প্রবেশ করলেন_fororder_06183

জুন ১৮: চীনের মনুষ্যবাহী মহাকাশযান প্রকল্প কার্যালয় সূত্র জানিয়েছে, শেনচৌ-১২নং মনুষ্যবাহী নভোযান বেইজিং সময় গতকাল (বৃহস্পতিবার) বিকেল ৩টা ৫৪ মিনিটে মহাকাশে চীনের মহাকাশ স্টেশনের মূল অংশ থিয়ানহ্য’র সঙ্গে সংযুক্ত হয়েছে। সংযুক্ত হতে সময় লাগে প্রায় সাড়ে ছয় ঘণ্টা। থিয়ানহ্য মহাকাশকেন্দ্রের মূল অংশ কক্ষপথে পাঠানোর পর প্রথমবারের মতো কোনো মনুষ্যবাহী নভোযানের সঙ্গে তা সংযুক্ত হলো। একইদিন রাতে তিনজন মহাকাশচারী যথাক্রমে থিয়ানহ্যতে প্রবেশ করেন। চীনারা এই প্রথমবারের মতো নিজের মহাকাশ স্টেশনে প্রবেশ করলেন। বিস্তারিত শুনুন আজকের সংবাদ পর্যালোচনায়।

 

মহাকাশ স্টেশনের সঙ্গে সংযুক্তি হলো মনুষ্যবাহী অভিযানের তিনটি মৌলিক প্রযুক্তির মধ্যে অন্যতম একটি। এটি হলো মহাকাশকেন্দ্র এবং মহাকাশে পরিবহন ব্যবস্থার বণ্টন, রক্ষণাবেক্ষণ, মহাকাশচারী বিনিময় এবং উদ্ধার; যা কক্ষপথ পরিষেবার পূর্বশর্ত। এটি অনেক জটিল কাজ এবং তা নিখুঁত ও নির্ভুলভাবে করতে হয়।

চীনের মনুষ্যবাহী মহাকাশযান প্রকল্প কার্যালয়ের সহকারী প্রধান চি ছি মিং বলেন,

 ‘শেনচৌ-১২নং মনুষ্যবাহী নভোযান কক্ষপথে প্রবেশের পর দ্রুত গতিতে স্বয়ংক্রিয়ভাবে মহাকাশ স্টেশনের সঙ্গে সংযুক্ত হয়েছে। মহাকাশচারীরা মহাকাশকেন্দ্রের মূল অংশে প্রবেশ করেছে। সেখানে তারা কাজ করবেন এবং তিন মাস থাকবেন। প্রায় তিন মাস কাজের পর শেনচৌ-১২নং নভোযান-যোগে আবারও তোংফোং অবতরণকেন্দ্রে ফিরে আসবেন তারা।’

 

শেনচৌ-১১নং মহাকাশযান এবং এর আগের যে কোনো মহাকাশযানের তুলনায় শেনচৌ-১২নং মহাকাশ নভোযানের সবচে বড় বৈশিষ্ট্য হলো- এটি প্রথমবারের মতো মনুষ্যবাহী মহাকাশযানকে দ্রুত এবং ডকিং মোড বা দ্রুত গতিতে স্বয়ংক্রিয়ভাবে সংযুক্ত হওয়ার পদ্ধতি অবলম্বন করেছে।

শেনচৌ-১২নং মহাকাশযান প্রকল্পের দায়িত্বশীল কর্মকর্তা চেং উই বলেন,

 ‘আগের চেয়ে এবারের নতুন পরিবর্তন হলো শেনচৌ-১২নং মহাকাশযান প্রথমবারের মতো দ্রুত গতিতে স্বয়ংক্রিয়ভাবে সংযুক্ত হয়েছে। মহাকাশচারীদের মহাকাশ স্টেশনে প্রবেশের পর শেনচৌ-১২নং মহাকাশযানের নির্ধারিত স্থানে পার্কিং করা হয়। যে কোনো সময় মহাকাশচারীদের নিয়ে পৃথিবীতে ফিরে আসতে এটি প্রস্তুত।’

 

বৃহস্পতিবার রাত ৬টা ৪৮ মিনিটে চীনা মহাকাশচারী নিয়ে হাই শেং, লিউ বো মিং ও থাং হোং বো থিয়ানহ্যতে প্রবেশ করেন। পৃথিবীর নিয়ন্ত্রণকেন্দ্রে মহাকাশচারী নিয়ে হাই শেং বলেন,

 ‘আমরা এখন আমাদের মহাকাশের বাড়ি বা থিয়ানহ্য মহাকাশকেন্দ্রের মূল অংশে প্রবেশ করেছি। আমাদের সমর্থন দেওয়ার জন্য সব চীনা জনগণকে ধন্যবাদ জানাই। অসংখ্য বিজ্ঞানীর পরিশ্রমে আমরা কৃতজ্ঞ। আমরা অভিবাদন জানাই।’

 

চীনের অ্যারোস্পেস বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি কর্পোরেশনের পঞ্চম একাডেমির স্পেস স্টেশন সিস্টেমের প্রধান ডিজাইনার ফান কাও চিয়ে বলেন, বিভিন্ন বগির মধ্যে চলাফেরা করে মহাকাশচারীদের অনেক কাজ করতে হবে। তিনি বলেন,

 ‘প্রথমত তারা এক এক করে বগির দরজা খোলেন। সংযুক্ত হওয়ার পর তারা মহাকাশযানের হ্যাচ খোলেন। স্বাভাবিক অবস্থা নিশ্চিত হওয়ার পর তারা থিয়ানহ্য মহাকাশকেন্দ্রের মূল অংশের হ্যাচ খোলেন। তারপর তারা মূল অংশের লাইভ কন্ট্রোল কেবিনে প্রবেশ করেন; সেখানে তুলনামূলক বড় জায়গা আছে।’

 

থিয়ানহ্য মহাকাশকেন্দ্রে মহাকাশচারী তিন মাস থাকবেন। তারা রোবট অপারেশন, আউট অব স্পেসসহ বিভিন্ন কার্যক্রম পরিচালনা করবেন। কক্ষপথে দীর্ঘদিন মহাকাশচারীদের মোতায়েনসংক্রান্ত ধারাবাহিক গুরুত্বপূর্ণ প্রযুক্তি নিয়ে পরীক্ষা করাও হলো তাদের প্রধান কাজ।

এ প্রসঙ্গে ফান কাও চিয়ে বলেন,

 ‘প্রথমত কিছু সরঞ্জাম স্থাপন করতে হবে। মহাকাশ স্টেশনের বাইরে গুরুত্বপূর্ণ কাজের জন্য কিছু প্রস্তুতি নিতে হবে। আরেকটি গুরুত্বপূর্ণ বিষয় হলো মহাকাশ স্টেশনের পরিবেশের সঙ্গে খাপ খাওয়ানো। দৈনন্দিন নিয়মিত কাজ ছাড়াও তারা মহাকাশে শারীরচর্চা করবেন।’

(লিলি/তৌহিদ/শুয়েই)