বিশ্ব অর্থনীতির ‘চালিকাশক্তি’ হিসেবে চীন অব্যাহতভাবে কাজ করবে
2021-06-17 12:06:35

বিশ্ব অর্থনীতির ‘চালিকাশক্তি’ হিসেবে চীন অব্যাহতভাবে কাজ করবে_fororder_0617

বিশ্ব অর্থনীতির ‘চালিকাশক্তি’ হিসেবে চীন অব্যাহতভাবে কাজ করবে_fororder_06172

জুন ১৬: সরবরাহ খাত বা চাহিদার দিক বিশ্লেষণ করে বোঝা যায়, চীনের অর্থনৈতিক পুনরুদ্ধার অব্যাহত থাকবে। সম্প্রতি ‘ব্লুমবার্গ নিউজে’ দেওয়া সাক্ষাত্কারে অর্থনীতিবিদ এমন ভবিষ্যদ্বাণী করেছেন। আজ চীনের উদ্যোগে মে মাসে জাতীয় অর্থনৈতিক তথ্য বিশ্লেষণের পর এই পূর্বাভাস দেওয়া হয়েছে।

চীনের শিল্প উত্পাদন স্থিতিশীলভাবে বাড়ছে, পরিষেবা শিল্পে স্থিতিশীলভাবে প্রবৃদ্ধি হচ্ছে, বাজারে কেনাবেচা পুনরুদ্ধার হচ্ছে, স্থিত সম্পদ বিনিয়োগের ধারা ফিরে আসছে এবং আমদানি ও রফতানি দ্রুত গতিতে প্রবৃদ্ধি অর্জন করছে। মে মাসে চীনা অর্থনৈতিক বিশ্লেষণ করে স্থিতিশীল পুনরুদ্ধারের প্রবণতা দেখা গেছে। সম্প্রতি ‘রাশান সংবাদপত্রে’ মন্তব্য করা হয়- চীন বিশ্ব অর্থনীতি পুনরুদ্ধারের ক্ষেত্রে ‘নির্ভরযোগ্য চালিকাশক্তি’ হবে।

 

সরবরাহ খাতে চীনা অর্থনীতির বেশ কয়েকটি ইতিবাচক উপাদান রয়েছে। যেমন, মে মাসে উচ্চ-প্রযুক্তির উত্পাদন শিল্প বৃদ্ধির পরিমাণ গত বছরের চেয়ে ১৭.৫ শতাংশ বেশি হয়েছে। দুই বছরে গড় প্রবৃদ্ধি ছিল ১৩.১ শতাংশ। চীনের উচ্চ প্রযুক্তির উত্পাদন খাত দ্রুত গতিতে উত্পাদন শিল্প পুনরুদ্ধারের আশা জাগিয়েছে।

 

চাহিদার দৃষ্টিকোণ থেকে আরো অনেক সুখবর পাওয়া গেছে। পহেলা মে ছুটি চলাকালে দেশীয় ভ্রমণকারীর সংখ্যা ছিল ২৩ কোটি পার্সন-টাইমস। পর্যটন খাতে মোট আয় একশ বিলিয়ন ইউয়ান ছাড়িয়ে গেছে। ছুটির সময় ভোগের চাহিদা, রেলপথ, বিমান ও হোটেলসহ সংশ্লিষ্ট বিভিন্ন শিল্পের ব্যবসায়িক কার্যক্রমের সূচক টানা দু’মাস ধরে ৬৫ শতাংশ বেড়েছে।

 

তা ছাড়া, সামাজিক ভোগ্য সামগ্রীর খুচরা বিক্রির মোট পরিমাণ মে মাসে ৩ ট্রিলিয়ন ৫৯৪.৫ বিলিয়ন ইউয়ান রেনমিনপিতে উন্নীত হয় এবং এই সংখ্যা গত বছরের চেয়ে ১২.৪ শতাংশ বেশি। সাম্প্রতিক বছরগুলোতে চীনা অর্থনীতির প্রবৃদ্ধিতে ভোগের অবদান ৬০ শতাংশ। তাই চীনের অর্থনীতি পুনরুদ্ধারে ভোগ বাজারের উষ্ণতা গুরুত্বপূর্ণ। গত সপ্তাহে বিশ্ব ব্যাংক চীনা অর্থনীতি প্রবৃদ্ধির প্রত্যাশিত লক্ষ্য ৭.৯ শতাংশ থেকে ৮.৫ শতাংশে উন্নীত করে।

 

আরো উল্লেখযোগ্য বিষয় হলো, চীনা অর্থনীতির স্থিতিশীল পুনরুদ্ধার জনগণের জীবিকাও নিশ্চিত করেছে। মে মাসে দেশব্যাপী শহর ও জেলায় বেকারত্বের হার ছিলো ৫ শতাংশ; যা এপ্রিল মাসের চেয়ে ০.১ শতাংশ হ্রাস পেয়েছে। গণজীবিকায় কর্মসংস্থান সবচেয়ে বেশি গুরুত্বপূর্ণ। গোটা বিশ্বে মহামারী পরিস্থিতি কঠোর এবং অর্থনৈতিক পুনরুদ্ধার দুর্বল হওয়ায় চীনের বিরাট সাফল্য অর্জন করা সহজ নয়। এটি চীন সরকার, শিল্পপ্রতিষ্ঠান ও জনগণের পরিশ্রমের সঙ্গে ঘনিষ্ঠভাবে জড়িত। সারা বিশ্ব দেখেছে যে, নভেল করোনাভাইরাস মহামারী প্রাদুর্ভাবের পর চীনের সামষ্টিক নীতিমালা স্থিতিশীল হচ্ছে। নানা সমস্যা দূর করতে শিল্পপ্রতিষ্ঠানগুলোকে সাহায্য করার সর্বাত্মক চেষ্টা করছে চীন। তা ছাড়া, সংস্কার ও সৃজনশীলতা এগিয়ে নেওয়া হচ্ছে, অভ্যন্তরীণ চাহিদা বাড়ছে এবং দ্বৈত অর্থনৈতিক চক্র বাস্তবায়ন করছে চীন। এসব যৌক্তিক ব্যবস্থার আওতায় অর্থনীতির স্বাভাবিক চলাচল নিশ্চিত করা এবং উচ্চ মানের উন্নয়ন বাস্তবায়নের দৃঢ় ভিত্তি স্থাপন করা হয়েছে।

 

বর্তমানে দেশজুড়ে মহামারী প্রতিরোধ ও নিয়ন্ত্রণ এবং অর্থনীতি পুনরুদ্ধারে অস্থিতিশীল ও অনিশ্চিত উপাদান বিরাজ করছে। চীনা অর্থনীতি পুনরুদ্ধারের ভিত্তি মজবুত করতে হবে। সুবিধাজনক শর্তের পাশাপাশি চীনের অর্থনীতি স্থিতিশীলভাবে পুনরুদ্ধার করা হবে বলে ধারণা করা হচ্ছে। বিশ্ব অর্থনীতিতে চালিকাশক্তি হিসেবে চীনের মর্যাদা অব্যাহতভাবে মজবুত হবে। ২০২১ সালে বিশ্ব অর্থনীতির প্রবৃদ্ধিতে চীনা অর্থনীতির অবদান এক চতুর্থাংশ ছাড়িয়ে যাবে বলে সর্বশেষ রিপোর্টে পূর্বাভাস দিয়েছে বিশ্বব্যাংক।

(লিলি/তৌহিদ/শুয়েই)