বাবা যেন মেয়েকে সাহসী করে গড়ে তোলেন-আতিকা রোমা
সুপ্রিয় শ্রোতা আকাশ ছুঁতে চাই অনুষ্ঠানে আমরা কথা বলি সেইসব নারীর সঙ্গে যারা সাফল্যের আকাশ স্পর্শ করেছেন অথবা স্পর্শ করতে চান। আমাদের আজকের অতিথি আতিকা রোমা। তিনি বাংলাদেশের একজন আলোচিত বাইকার যিনি দেশের সবচেয়ে উঁচু এবং দুর্গম সড়ক স্কুটি চালিয়ে পাড়ি দিয়ে রেকর্ড গড়েছেন। নিজের উদ্যোগে তিনি সমাজসেবামূলক ব্যতিক্রমী কিছু কাজ করে থাকেন। চলুন কথা বলা যাক তার সঙ্গে।
আতিকা রোমা বাইক চালিয়ে খ্যাতি পেয়েছেন। তিনি প্রথমবারের মতো নারীদের বাইক ও স্কুটি চালনার জন্য প্রশিক্ষণ কেন্দ্র ‘যাব বহুদূর’ প্রতিষ্ঠা করেছেন ২০১৮ সালের এপ্রিলে। বললেন শৈশবে একটি উদার পরিবেশে বড় হয়েছেন। তার বাবা ও মা সবসময় তাকে সাহসী হয়ে গড়ে উঠতে অনুপ্রেরণা দিয়েছেন। আতিকা রোমা বলেন, ‘একজন নারীর বড় হয়ে ওঠার পিছনে বাবা ও মা দুজনেরই ভূমিকা রয়েছে। আমি প্রতিটি বাবাকে বলতে চাই, আপনার মেয়েকে সাহসী করে গড়ে তুলুন। তাকে জীবনের পথে এগিয়ে যেতে সাহায্য করুন।’
আতিকা রোমা বাইক চালাতে ভালোবাসেন। তিনি অনেক সাহসের সঙ্গে স্কুটি চালিয়ে বান্দরবানের দুর্গম পথ পাড়ি দেন এবং দেশের সর্বোচ্চ সড়কে স্কুটি চালিয়ে রেকর্ড গড়েন ২০১৭ সালের ২৫ ডিসেম্বর। এরপর তিনি যাব বহুদূর প্রতিষ্ঠা করেন। অন্য নারীরাও যেন বাইক চালাতে পারেন এই জন্য প্রতিষ্ঠানটি শুরু করেন। বলেন, ‘একজন নারী যেন নিজের কর্মস্থলে নিজেই যেতে পারেন, তাকে যেন অন্য কোন পরিবহণের উপর বাধ্য হয়ে নির্ভর করতে না হয় সে চিন্তা থেকেই এর শুরু’।
আতিকা রোমা অমৃতম নামে একটি প্রতিষ্ঠান করেছেন নিজের উদ্যোগে। এটি ব্যবসায়ীক একটি প্রতিষ্ঠান । এই প্রতিষ্ঠান থেকে বিভিন্ন অফিসে ও বাড়িতে খাবার সরবরাহ করা হয় বাণিজ্যিক ভিত্তিতে। পাশাপাশি তিনি অমৃতম অফিসে বেশ কয়েকজন দরিদ্র শিশুর জন্য দৈনিক খাবার সরবরাহ করেন বিনামূল্যে। বর্তমানে প্রায় ৬০-৭০ শিশু প্রতিদিন এখানে দৈনিক খাদ্য গ্রহণ করে। আতিকা রোমা আরও বেশি সংখ্যক শিশুদের প্রতিদিনের খাদ্য সরবরাহের ব্যবস্থা করার জন্য বড় পরিসরে পরিকল্পনা করছেন। তিনি রাস্তার অসহায় কুকুর বিড়ালদেরও আশ্রয়, উদ্ধার ও চিকিৎসার জন্য কাজ করে থাকেন। তিনি নারী পুরুষের বৈষম্যহীন সমাজ প্রতিষ্ঠার জন্য এবং পরিবেশকে রক্ষার জন্য সেবামূলক কাজ করছেন।
আগামি রোববার পালিত হচ্ছে বাবা দিবস। এই দিবসের উৎপত্তির পিছনে রয়েছে বাবার প্রতি কন্যার অপরিসীম ভালোবাসার স্মৃতি।
লেখা, গ্রন্থনা ও উপস্থাপনা: শান্তা মারিয়া