‘তুয়ান উ’ উত্সবে চীনা বাজার ছিল বেশ জমজমাট
2021-06-16 08:57:17

গত ১২-১৪ জুন, চীনে উদযাপিত হয় তুয়ান উ উত্সব। এ তিনদিন চীনারা সাধারণ ছুটি উপভোগ করেছেন। ছুটির সময় সারা চীনে ভোগ্য বাজার ছিল প্রাণবন্ত। এবার ছুটির সময়ে চীনের পর্যটন আয় ২,৯৪৩ কোটি ইউয়ান ছাড়িয়ে যায়। তা গত বছরের একই সময়ের তুলনায় ১৩৯.৭ শতাংশ বেশি। রাতের বাজার, এবং গ্রাহক ভর্তুকিসহ নানা প্রোমোশন ব্যবস্থার কারণে এবার দেশটির ভোগ্য বাজারও চাঙ্গা হয়।

চীনারা চলতি বছরের প্রথমার্ধের শেষ ছুটি কাটায় ‘তুয়ান উ’ উত্সবে। চীনের সংস্কৃতি ও পর্যটন মন্ত্রণালয়ের পরিসংখ্যান অনুযায়ী, এবারের ছুটিতে আট কোটি ৯১ লাখ ৩৬ হাজার মানুষ ভ্রমণ করেছেন। ফলে টিকিট, গাড়ি ভাড়া ও থিম ভ্রমণ মহামারি-পূর্ব  অবস্থায় ফিরে এসেছে। ভ্রমণের  ৬০ শতাংশ  স্বল্প দূরুত্বের মধ্যে তথা ‘৩ ঘন্টার’ যাত্রার মধ্যে সীমিত ছিল। এ সময় ঐতিহ্যিক ভ্রমণ, লাল ভ্রমণ, ও সাংস্কৃতিক ভ্রমণও বিপুল জনপ্রিয়তা পায়।

অন্যদিকে, সিনেমার বাজারও বেশ গরম ছিল এবারের ছুটিতে। গত ১৪ জুন বিকেল ২টা পর্যন্ত চীনের বক্স অফিসের আয় ৪০ কোটি ইউয়ান ছাড়িয়েছে। এর মধ্যে ১২ জুন মোট চার লাখ ৩৭ হাজার বার সিনেমা প্রচারিত হয়। তা একদিনের সর্বোচ্চ রেকর্ড।

ছুটির আগে বেইজিং, শাংহাই, ছাং শাসহ বিভিন্ন শহরে এক লাখের বেশি ডিজিটাল রেনমিনবি লাল খাম আদান-প্রদান হয়। চীনে যেকোনো ছুটি বা উতসবে লোকজন তাঁদের প্রিয়জনদের লাল খামে করে টাকা উপহার দিয়ে থাকেন। ডিজিটাল রেনমিনবি হল  চীনের পিপল’স ব্যাংক প্রকাশিত এক ধরনের ডিজিটাল মুদ্রা। মানুষ এটা দিয়ে পরিবহন, খাবার, হোটেল, চিকিত্সা, টেলিযোগাযোগ ও টিকিট কেনাসহ নানা ব্যয় বহন করতে পারেন।

চীনে গ্রীষ্মের রাতের বাজার বেশ জনপ্রিয়তা পেয়েছে। দিনের বেলা বেশ গরম থাকে বলে মানুষ রাতে বাজার করতে পছন্দ করেন। ২০২১ চীনা রাতের অর্থনীতি উন্নয়ন প্রতিবেদন অনুযায়ী, ২০২০ সালের শেষ নাগাদ চীনের রাতের বাজারে লেনদেনের পরিমাণ ৩০ ট্রিলিয়ান ইউয়ান ছাড়িয়েছে। তা ২০১৯ সালের তুলনায় পাঁচ শতাংশ বেশি। চলতি বছর এটি ৩৬ ট্রিলিয়ান ইউয়ান ছাড়াবে বলে মনে করা হচ্ছে।

পাশাপাশি, কেন্দ্রীয় সরকার অর্থনীতি পুরুদ্ধারে ধারাবাহিক নীতি প্রণয়ন করেছে। গত ১১ জুন চীনের বাণিজ্য মন্ত্রণালয় প্রকাশিত একটি দলিলে বলা হয়, চতুর্দশ পাঁচশালা পরিকল্পনা চলাকালে জেলা পর্যায়ে বাণিজ্যিক প্রকল্প  চালু হবে। ২০২৫ সালের মধ্যে প্রতিটি জেলায় স্থাপিত হবে ধারাবিহক সুপার মার্কেট ও লজিস্টিক কেন্দ্র। প্রতিটি গ্রামে চালু হবে এক্সপ্রেস ডেলিভারি ও বাণিজ্যিক কেন্দ্র। প্রতি বছরে নতুন করে গ্রামীণ অনলাইন দোকান বাড়বে ১০ লাখের বেশি।

সাংস্কৃতিক পর্যটন চাঙ্গা করতে চীনের সংস্কৃতি ও পর্যটন মন্ত্রণালয়ও নানা ব্যবস্থা হাতে নিয়েছে। ছুটির সময়ে মানুষের ভ্রমণ চাহিদা পূরণে ‘পেইড ছুটি’ ব্যবস্থা বাস্তবায়িত হচ্ছে।

চীনে মহামারি নিয়ন্ত্রণে এসেছে। ফলে তার বাজারে কোনো রকম বাধা প্রায় নেই বললেই চলে। শহর ও গ্রামে সরবরাহ উন্নত হচ্ছে। চীনের অভ্যন্তরীণ বাজার আরও প্রসারিত হচ্ছে। (শিশির/এনাম/রুবি)