চীনের বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তিপরীক্ষা ‘কাওখাও’ ও প্রসঙ্গকথা
2021-06-09 14:34:17

জুন ৯: ৭ জুন থেকে শুরু হয়েছে চীনের উচ্চ শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানগুলোতে চার দিনব্যাপী ভর্তিপরীক্ষা ‘কাওখাও’। ১ কোটি ৭ লাখ ৮০ হাজার শিক্ষার্থী এই পরীক্ষায় অংশ নিচ্ছে। প্রশ্ন হচ্ছে: মহামারীর প্রেক্ষাপটে এই পরীক্ষা আয়োজনের জন্য কর্তৃপক্ষ কী কী প্রতিরোধমূলক ব্যবস্থা গ্রহণ করেছে? আজকের টপিক আসরে আমরা এ বিষয়ে আলোচনা করব।

 

চীনের শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের পরিসংখ্যান অনুসারে, চলতি বছর গোটা চীনে ‘কাওখাও’ পরীক্ষায় অংশগ্রহণকারী শিক্ষার্থীর সংখ্যা দাঁড়াবে ১ কোটি ৭ লাখ ৮০ হাজার, যা গতবছরের তুলনায় ৭০ হাজার বেশি। এটি একটি নতুন রেকর্ডও বটে। এ বছর গোটা চীনে মোট ৭২০০টিরও বেশি পরীক্ষাকেন্দ্রে পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হবে। এক্ষেত্রে পরীক্ষাকক্ষ থাকছে ৪ লাখ ৬৬ হাজার। এর মধ্যে কোভিড-১৯ মহামারীর জন্য ২৬ হাজারটি প্রস্তুতিমূলক পরীক্ষাকক্ষও রয়েছে। চীনের বিভিন্ন জায়গায় পরিবহনব্যবস্থা নির্বিঘ্ন করার ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে। দরকার হলে পরীক্ষার্থীদের সরাসরি পরীক্ষাকক্ষে নিয়ে যাওয়া হবে।

 

সম্প্রতি চীনের কিছু স্থানে কোভিড-১৯ রোগে আক্রান্ত নতুন রোগী পাওয়া গেছে। চীনের চিকিত্সা নিয়ন্ত্রণ কেন্দ্রের বিশেষজ্ঞরা বলছেন, বর্তমানে মহামারীর প্রতিরোধক ও নিয়ন্ত্রণ ব্যবস্থা আরও কঠোর। বিভিন্ন প্রতিরোধক ব্যবস্থা আরও জোরদার করতে হবে।

 

সম্প্রতি চীনের কুয়াংচৌ শহরে মহামারী পরিস্থিতি সবার দৃষ্টি আকর্ষণ করেছে। কুয়াং চৌয়ের শিক্ষার্থীদের কাওখাও পরীক্ষায় নিরাপদ অংশগ্রহণ নিশ্চিত করতে স্থানীয় কর্তৃপক্ষ প্রতিরোধকমূলক ব্যবস্থা জোরদার করেছে। ৫ জুন কুয়াংচৌ শহরের মহামারী প্রতিরোধ সংক্রান্ত প্রেস ব্রিফিংয়ে স্থানীয় স্বাস্থ্য কমিটির সংশ্লিষ্ট প্রধান বলেন, কুয়াংচৌতে দুই রকমের পরীক্ষাকক্ষ স্থাপন করা হবে। একটি হচ্ছে সাধারণ পরীক্ষাকক্ষ, আরেকটি হচ্ছে আইসোলেশান পরীক্ষাকক্ষ। কোভিড-১৯ পরীক্ষায় যেসব পরীক্ষার্থী পজেটিভ হবে, তাদেরকে বিশেষ হাসপাতালে বিশেষ পরীক্ষাকক্ষে পরীক্ষা দিতে হবে।

 

এ ছাড়া, সম্প্রতি চীনে অনেক জায়গায় ব্যাপক বৃষ্টিপাতের ফলে বন্যা দেখা দিয়েছে। কাওখাও চলাকালে বন্যাসহ আকস্মিক প্রাকৃতিক দুর্যোগ মোকাবিলায় জরুরি ব্যবস্থা নিতে বিভিন্ন স্থানের প্রতি অনুরোধ জানিয়েছে শিক্ষা  মন্ত্রণালয় এবং জাতীয় স্বাস্থ্য কমিশনসহ বিভিন্ন কর্তৃপক্ষ। কাওখাও সুষ্ঠুভাবে চালাতে বিভিন্ন বিভাগের যৌথ উদ্যোগ সুনির্দিষ্ট সময়ের আগে নির্ধারণ করা হয়েছে।

 

চলতি বছরের ফেব্রুয়ারির শুরুর দিকেই চীনের শিক্ষা মন্ত্রণালয় কলেজ ও বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তিসংশ্লিষ্ট নোটিশ জারি করে।  এতে নিয়মিত সংশ্লিষ্ট শিক্ষার্থী ও কর্মীদের শরীরের তাপমাত্রা মাপা ও তাদের স্বাস্থ্যসম্পর্কিত পর্যবেক্ষণ জোরদার করতে বলা হয়।

 

এখন গরম পড়েছে। এ অবস্থায় শিক্ষার্থীদের হিটস্ট্রোক থেকে বাঁচাতে গত ৪ জুন শানসি প্রদেশে জারি করা হয়েছে বিশেষ নোটিশ। এতে বলা হয়েছে, সকল স্তরের শিক্ষাব্যবস্থাপনা বিভাগকে মহামারী প্রতিরোধ ও নিয়ন্ত্রণে সমন্বিত ব্যবস্থা গ্রহণ করতে হবে এবং কাওখাও চলাকালে হিটস্ট্রোক প্রতিরোধ করে আরামদায়ক পরীক্ষার পরিবেশ সৃষ্টি করতে হবে।

 

নোটিশ অনুসারে, এয়ার কন্ডিশনার, বৈদ্যুতিন পাখা, আইস কিউব ইত্যাদির মাধ্যমে পরীক্ষাকক্ষকে শীতল রাখতে হবে এবং পানীয় জল, ওষুধ ও অন্যান্য প্রয়োজনীয় পণ্যের মজুত নিশ্চিত করতে হবে। (ওয়াং হাইমা/আলিম/ছাই)