বিশ্বে নতুন করোনা রোগীর সংখ্যা টানা ছয় সপ্তাহ ধরে কমছে
2021-06-08 13:38:32

জুন ৮: বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার (হু) পরিসংখ্যান থেকে জানা গেছে, সারা পৃথীবিতে নতুন করে আক্রান্ত কোভিড-১৯ রোগীর সংখ্যা টানা ছয় সপ্তাহ ধরে হ্রাস পাচ্ছে। বিশ্বজুড়ে কোভিড-১৯ পরিস্থিতি উন্নত হয়েছে। তবে, নতুন প্রজাতির ভাইরাস আরো সংক্রামক। তাই বিভিন্ন  দেশের প্রতি মহামারি সংক্রান্ত বিধি-নিষেধ শিথিলে সতর্ক থাকার আহ্বান জানিয়েছে হু। একই সঙ্গে এ ভাইরাস রোধের চূড়ান্ত উপায় হিসেবে টিকাদানের হার বৃদ্ধি করারও তাগিদ দিয়েছে সংস্থাটি।

 

হু মহাপরিচালক আধানম গতকাল (সোমবার) বলেন, বিশ্বব্যাপী কোভিড-১৯ মহামারি পরিস্থিতির ইতিবাচক প্রবণতা দেখা যাচ্ছে। তিনি বলেন,‘বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার রিপোর্ট মতে, নতুন করে আক্রান্ত কোভিড-১৯ রোগীর সংখ্যা টানা ছয় সপ্তাহ ধরে হ্রাস পাচ্ছে। মৃতের সংখ্যা টানা পাঁচ সপ্তাহ ধরে কমছে। তবে, বিশ্বের বিভিন্ন স্থানে ভিন্ন ভিন্ন পরিস্থিতি বিরাজ করছে। গত সপ্তাহে আফ্রিকা, আমেরিকা ও পশ্চিম প্রশান্ত মহাসাগরীয় অঞ্চলে মৃতের সংখ্যা কিছুটা বৃদ্ধি পেয়েছে। বেশ কয়েকটি দেশ এখনো সংকটের মুখে। তবে, টিকাদানে এগিয়ে থাকা দেশগুলো এখন বিধি-নিষেধ তুলে নেওয়ার আহ্বান জানাচ্ছে।’

 

মহাপরিচালক বলেন, যে দেশগুলোর মহামারি পরিস্থিতি উন্নত হয়েছে, তাদের উচিত নিষেধাজ্ঞা শিথিল করতে সতর্কতা অবলম্বণ করা এবং সংক্রমণ মোকাবিলা জোরদার করা। বর্তমানে ভারতে আবিষ্কৃত নতুন প্রজাতির ভাইরাসসহ নানা প্রজাতির ভাইরাস বিশ্বজুড়ে ছড়িয়ে পড়েছে। তাই যারা টিকা গ্রহণ করে নি, তাড়াহুড়া করে নিষেধাজ্ঞা তুলে নিলে তাদের জন্য ভয়ঙ্কর বিপদ আসতে পারে।

 

হুর স্বাস্থ্য বিষয়ক জরুরি প্রকল্পের দায়িত্বশীল কর্মকর্তা মারিয়া ভ্যাস কাকোভ জানান, ভারতের ডেল্টা ভাইরাসের ওপর সর্তক দৃষ্টি রাখা প্রয়োজন। তিনি বলেন, 

“ডেল্টা প্রজাতির ভাইরাস আলফার তুলনায় বেশি সংক্রামক। ডেল্টা এখন বৃটেনসহ বিশ্বের ৬০টিরও বেশি দেশে ছড়িয়ে পড়েছে। মহামারি ছড়িয়ে পড়ার সঙ্গে সঙ্গে আরো বেশি প্রজাতির ভাইরাস আবিষ্কৃত হচ্ছে। নতুন প্রজাতির ভাইরাসের সংক্রমণ বেড়ে যাওয়া আশঙ্কাজনক। তাই নানা সামাজিক তত্পরতা বৃদ্ধি, গণস্বাস্থ্যসহ নানা ব্যবস্থার শিথিলতা, এবং বিশ্বের বিভিন্ন স্থানে টিকা বিতরণে অসমতাসহ চারটি উপাদানের কারণে পরিস্থিতি এখনো বিপদজনক।’

 

 

হুর জরুরি প্রকল্পের নির্বাহী পরিচালক বলেন, যে দেশগুলোতে কোভিড-১৯ মহামারি নিয়ন্ত্রণে এসেছে, সেসব দেশগুলো সীমান্ত খোলার সংকটে পড়েছে। মহামারি পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আসলেও তারা অন্যান্য দেশগুলোর চেয়ে আরও উঁচু ঝুঁকিতে পড়তে পারে। সে দেশগুলোর জন্য টিকাদানের হার বৃদ্ধি করা হবে চূড়ান্ত উপায়। টিকাদানের হার ৮০ শতাংশে উন্নীত হলে বিদেশ ফেরত রোগীর ঝুঁকিও ব্যাপক হারে কমে যাবে।  তিনি বলেন,‘তাই, যে দেশগুলোতে দীর্ঘকাল ধরে কম রোগী সনাক্ত হচ্ছে, তাদের জন্য পুনরায় স্বাভাবিক অবস্থায় ফিরে যাওয়া কঠিন সিদ্ধান্ত। অন্যান্য দেশ থেকে সে দেশে মহামারি সংক্রমণ হতে পারে। এ প্রেক্ষাপটে সে দেশগুলোকে উচ্চ মাত্রায় সতর্ক থাকতে হবে। জনগণের সমর্থনের পাশাপাশি টিকাদানের হার বাড়াতে হবে। এক কথায়, টিকাদানের হার বৃদ্ধি মহামারি থেকে বের হওয়ার চূড়ান্ত উপায়।

 

(রুবি/এনাম/শিশির)