সকাল আটটায় কুয়াংস্যি চুয়াং জাতির স্বায়ত্তশাসিত অঞ্চলের হোছি শহরের গণ-হাসপাতালের সংক্রামক রোগ বিভাগে চিকিত্সাকর্মীদের পালাবদল শুরু হয়। লু জু ফি হলেন তাঁদের মধ্যে একমাত্র ছেলে নার্স। আজকে আমি ছেলে নার্স লু জু ফির সঙ্গে আপনাদের পরিচয় করিয়ে দেবো।
লু জু ফি’র পরিবার আগে দরিদ্র ছিল। তিনিসহ মোট তিন জন সন্তান আছে পরিবারে। যখন তিনি নার্সিং বিদ্যালয়ে লেখাপড়া করতেন, তখন বিদ্যালয়ে ছেলে খুবই কম ছিল। তিনি বলেন, নার্সিং বিষয় নিয়ে লেখাপড়া করলে সহজে কাজ পাওয়া যায়।
বিদ্যালয় থেকে স্নাতক হওয়ার পর লু জু ফি হোছি শহরের হাসপাতালে নার্স হিসেবে যোগ দেন। সংক্রামক রোগ বিভাগের চিকিত্সাকর্মীদের প্রতিদিন অসংখ্য বার বিশেষ ওয়ার্ডে প্রবেশ করতে হয়। বিশেষ ওয়ার্ডে তারা নিজেদের জীবাণুমুক্ত করেন ও হাত ভালো করে ধুয়ে নেন। কোনো কোনো সময় তাকে রোগীদের খাওয়াতে হয়। অক্সিজেন সিলিন্ডার পরিবর্তন, ইনজেকশন দেওয়া, ঔষধ পরিবর্তন করা, ইত্যাদি কাজও তাকে করতে হয়। নার্সের কাজ জটিল ও ব্যস্ততাময়। কিন্তু লু ধৈর্যশীল ও পেশাদার। তিনি রোগীদের যত্নে কোনো ত্রুটি করেন না।
২০২০ সালের শুরুর দিকে কোভিড-১৯ মহামারী ছড়িয়ে পড়ে। উহান চীনের মহামারী প্রতিরোধ কার্যক্রমের একেবারে পুরোভাগে ছিল স্বাভাবিকভাবেই। গোটা চীনের বিভিন্ন স্থানের চিকিত্সাকর্মীরা জরুরিভিত্তিতে উহানে গিয়ে সাহায্য-সহযোগিতা করেন। তখন লং জু ফি’র মেয়ের বয়স মাত্র এক মাস। কিন্তু তিনি নিজেই উহানে যাওয়ার ইচ্ছা প্রকাশ করে আবেদন করেন। এর আগে তিনি চীনা কমিউনিস্ট পার্টিতে যোগ দেওয়ার আবেদনও করেন।
তিনি জানান, উহানে যাওয়ার আগে তিনি উদ্বিগ্ন ছিলেন। তখন তাঁর সন্তান মাত্র জন্মগ্রহণ করেছে। বাচ্চাটা স্ত্রীর সঙ্গে জন্মস্থানে ছিল। কিন্তু চিকিত্সাকর্মীদের কোনো ভয় করলে চলে না। তাঁদেরকে সাহস দিয়ে অন্যকে সহায়তা করতে হয়।
লু জু ফিসহ হোছি গণ হাসপাতালের চিকিত্সাকর্মীরা মোট ৩৪ জন কোভিড-১৯ রোগীকে চিকিত্সাসেবা দেন। যখন প্রতিরোধমূলক পোষাক পরতেন, তখন তাঁদের কোনো উদ্বেগ্ন ও চিন্তা থাকতো না। তাঁরা রোগীদেরকে চিকিত্সা দেওয়ার চেষ্টাই শুধু করতেন।
লু বলেন, ‘আমার আদর্শ আছে, আমার শক্তি আছে। আমি আরও দায়িত্বশীল হতে ও নিজের পেশায় আরও উন্নতি করতে চাই।’
উহানে ৩৫ দিন রাতে কাজ করার মাধ্যমে লু জু ফি মূল্যবান অভিজ্ঞতা সঞ্চয় করেন। বিশেষ মর্যাদাও পেয়েছেন। তবে তার কাছে নার্সের কাজ শুধু বেতন পাওয়ার জন্য নয়। এ কাজ অনেক জটিল ও ব্যস্ততাময়। কিন্তু রোগী সুস্থ হলে তিনি সব কষ্ট ভুলে যান। (ছাই/আলিম)