উত্তরে ধাবমান ১৭টি হাতি নিয়ে আন্তর্জাতিক অঙ্গনে ব্যাপক আলোচনার কারণ
2021-06-07 16:26:44

উত্তরে ধাবমান ১৭টি হাতি নিয়ে আন্তর্জাতিক অঙ্গনে ব্যাপক আলোচনার কারণ_fororder_QQ图片20210607162500

সম্প্রতি চীনের ইউননানের ১৭টি হাতি আন্তর্জাতিক সমাজের দৃষ্টি আকর্ষণ করেছে। বিভিন্ন বিদেশী গণমাধ্যম চীনা হাতিগুলোর খবর প্রকাশ করেছে এবং এ নিয়ে আলোচনা করেছে। কেন ১৭টি হাতি এতো বেশি দৃষ্টি আকর্ষণ করেছে? আজকের টপিকে আমরা তা নিয়ে আলোচনা করব।

গত মার্চ থেকে ইউননান শিশুয়াংবান্না প্রাকৃতিক সংরক্ষণ এলাকার ১৭টি হাতি উত্তর দিকে যাত্রা শুরু করে। তারা ৪০০ দিনেরও বেশি সময়ে বেশ কয়েকটি শহর ও জেলা অতিক্রম করে। এ যাত্রায় তারা ৫০০ কিলোমিটারেরও বেশি পথ হেঁটেছে। পরে হাতিগুলো ইউননান প্রদেশের রাজধানী খুনমিংয়ে পৌঁছায়। ব্যাপারটি বিভিন্ন দেশের গণমাধ্যমের দৃষ্টি আকর্ষণ করে। জাপানের সানকেই নিউজ, এএনএন টিভি, এফএনএন টিভি ও টিবিএস টিভি, দক্ষিণ কোরিয়ার এমবিসি টিভি, ওয়াইটিএন এবং মার্কিন এনবিসি এ খবর প্রকাশ করেছে। বিদেশী গণমাধ্যমগুলোর কৌতুহল: হাতিগুলো কোথায় যাচ্ছে?!

২ জুন জাপানের টিবিএস টিভি ৩০ মিনিটের বিশেষ অনুষ্ঠানে চীনা হাতিগুলোর উত্তর দিকে যাওয়ার অবস্থা এবং তাদের পথে ঘটা মজার বিষয় তুলে ধরে। অনুষ্ঠানে বলা হয়, বর্তমানে চীনা কর্তৃপক্ষ হাতিদেরকে নিজেদের বাড়িতে ফিরে যেতে নির্দেশ দিচ্ছে। দক্ষিণ কোরিয়ার এমবিসি টিভির খবরে বলা হয়, ৩০ বছর চীনে পরিবেশ ও প্রাণী সুরক্ষাব্যবস্থার কারণে বন্যহাতির সংখ্যা বেড়েছে। শিশুয়াংবান্না প্রাকৃতিক সংরক্ষণ এলাকায় কোনো বাঁধা নেই। সেজন্য হাতিগুলো বিনাবাঁধায় ঘুরে বেড়াতে পারে। হয়ত খাদ্যের অভাব হওয়ার কারণে হাতিগুলো অন্য জায়গায় যাচ্ছে। মানুষের বাড়িতে হাতিগুলোর অনুপ্রবেশ ঠেকাতে স্থানীয় সরকার বিশেষ কর্মী পাঠিয়েছে।

আসলে হাতিগুলোর উত্তর দিকে যাওয়ার কারণ স্পষ্টভাবে বলা যায় না। তবে বিশ্লেককরা মনে করেন, এর একাধিক কারণ আছে। এক. সাম্প্রতিক কয়েক বছরে চীনে বন্যপ্রাণী সুরক্ষায় অনেক কাজ হয়েছে। প্রতিবছর বন্যহাতির সংখ্যা ৩ থেকে ৫ শতাংশ করে বেড়েছে। সেজন্য হাতিগুলো নতুন আবাসস্থল খুঁজে বের করার চেষ্টা করছে। দুই. বর্তমানে হাতির খাদ্যের অভাবের ঋতু। শিশুয়াংবান্না প্রাকৃতিক সংরক্ষণ এলাকার ক্রমবর্ধমান হাতির জন্য যথেষ্ট খাবার নেই। সেজন্য নতুন আবাসস্থল খুঁজে বের করতে চায় হাতিগুলো। তিন. চীনা মানুষের মধ্যে বন্য পশু সুরক্ষার চেতনা বৃদ্ধি পেয়েছে। যদিও হাতিগুলো স্থানীয় বাসিন্দাদের ফসল ও বাড়িঘরের ক্ষতি করছে, তবুও স্থানীয় বাসিন্দারা হাতিগুলোকে আঘাত করতে না। কোনো কোনো বাসিন্দা বলেন, ‘হাতি আমাদের ফসল খেলে আগামী বছরে আরও হবে, কিন্তু হাতিগুলোকে সুরক্ষা দেওয়া আরও গুরুত্বপূর্ণ।’

স্থানীয় সরকার হাতিগুলোকে সুরক্ষা দিতে ও তাদেরকে সঠিক পথ দেখাতে বিভিন্ন ব্যবস্থা নিয়েছে। ড্রোন দিয়ে হাতিগুলো পর্যবেক্ষণ করা হয়েছে এবং বিশেষ গাড়ি দিয়ে হাতিগুলোকে পথ দেখানো হয়েছে। স্থানীয় বাসিন্দারাও হাতিগুলোকে সুরক্ষা দিয়েছে। আমরা আশা করি, পথ হারিয়ে যাওয়া হাতিগুলো যত তাড়াতাড়ি সম্ভব সঠিক পথে ফিরে যাবে। (ছাই/আলিম)