সংবাদ পর্যালোচনা সি চিন পিং মানবজাতির ঐতিহাসিক উন্নয়নের প্রবর্তক: ইন্দোনেশিয়ার সাবেক রাষ্ট্রদূত
2021-06-04 16:38:13

সংবাদ পর্যালোচনা সি চিন পিং মানবজাতির ঐতিহাসিক উন্নয়নের প্রবর্তক: ইন্দোনেশিয়ার সাবেক রাষ্ট্রদূত_fororder_0604shishi

জুন ৪:  ইন্দোনেশিয়ার সাবেক রাষ্ট্রদূত সোজেং রাহরদজো সম্প্রতি চীনা প্রেসিডেন্ট সি চিন পিংকে ‘আন্তরিক ও নম্র মানুষ’, ‘স্বল্পভাষী কিন্তু পরিশ্রমী’, ‘প্রতিশ্রুতি রক্ষাকারী’, ‘মহাননেতা’ ইত্যাদি বিশেষণে আখ্যায়িত করেছেন।  

২০১৪ থেকে ২০১৮ সাল পর্যন্ত তিনি ইন্দোনেশিয়ার রাষ্ট্রদূত হিসেবে বেইজিংয়ে কর্মরত ছিলেন। এ সময়ে ছয় বার সি চিন পিংয়ের সঙ্গে তার সাক্ষাত্ হয়। প্রত্যেক বারের দেখা ও আলোচনার বিষয় তাঁর এখনো স্পষ্টভাবে মনে আছে। প্রেসিডেন্ট সি’র ব্যক্তিত্বের আকর্ষণ এবং চীন তথা বিশ্বের জন্য তাঁর অবদানের ভূয়সী প্রশংসা করেন রাষ্ট্রদূত।

সোজেং রাহরদজোর চোখে সি চিন পিং একজন আন্তরিক ও নম্র মানুষ এবং দায়িত্বশীল উদ্যোক্তা। তিনি বলেন, “প্রত্যেক বার প্রেসিডেন্ট সি’র সঙ্গে দেখা-সাক্ষাতের স্মৃতি আমার মনে গভীর ছাপ ফেলেছে। তিনি খুব আন্তরিক ও নম্র মানুষ। তিনি আমাকে জিজ্ঞাস করেছিলেন, চীনে থাকতে আমার কোন অসুবিধা হয় কি না। চীনে বিভিন্ন জায়গায় ভ্রমণ করার কথা বলেছেন তিনি। তিনি বেশি কথা বলতে পছন্দ করেন না, কাজ করতে পছন্দ করেন। অনেক কাজ তিনি নিজের হাতে করতে অভ্যস্ত। তিনি একজন দায়িত্বশীল ও সদ্‌গুণসম্পন্ন মানুষ।’

একবার সাক্ষাত্কালে তিনি এবং প্রেসিডেন্ট সি ‘চীনা স্বপ্ন’ নিয়ে কথাবার্তা বলেন। রাষ্ট্রদূত সোজেং মনে করেন প্রত্যেক মানুষের নিজের স্বপ্ন আছে। চীনা নেতার চোখে, প্রত্যেক চীনা মানুষের দারিদ্র্য থেকে মুক্তিলাভ ও একটি মর্যাদাপূর্ণ জীবন কাটানোর সুযোগ হলো ‘চীনা স্বপ্ন’-এর সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ বিষয়। রাষ্ট্রদূত মনে করেন, সি চিন চিং চীনের উল্লেখযোগ্য কৃতিত্ব হলো চীনা জনগণকে হতদারিদ্র্য থেকে মুক্ত করা। ২০২০ সালে কোভিড-১৯ মহামারী সারা বিশ্বে আঘাত হানে এবং বিশ্ব অর্থনীতির ওপরে গভীর নেতিবাচক প্রভাব ফেলে। এ সময়েও চীনে দারিদ্র্যবিমোচন কার্যক্রম সমান তালেই চলেছে। ফলে, সি চিন পিংয়ের মেয়াদেই ৮৩২টি জেলার ১০ কোটি দরিদ্র মানুষ দারিদ্র্যমুক্ত হন। চীন ১০ বছর আগে জাতিসংঘের ‘এজেন্ডা ২০৩০’ টেকসই উন্নয়নের লক্ষ্য বাস্তবায়নও করতে পেরেছে।

এ নিয়ে রাষ্ট্রদূত বলেন, ‘চীনের দারিদ্র্যমুক্তির লক্ষ্য বাস্তবায়ন একটি অপূর্ব সাফল্য। বিশ্ব ব্যাংকের একটি প্রতিবেদন থেকে আমরা চীনের এক অপূর্ব সাফল্যের কথা আমরা বুঝতে পারি। প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, গত ৪০ বছরে চীনে প্রায় ৮৬ কোটি মানুষ দারিদ্র্যমুক্ত হয়েছে। তার মানে বিশ্বের ৭০ শতাংশ দরিদ্র মানুষ দারিদ্র্যমুক্ত হয়েছে চীনে। এটা একটি ঐতিহাসিক সাফল্য।’

তিনি বলেন, প্রেসিডেন্ট সি’র নেতৃত্বে চীনের আরেকটি অবদান হলো, চীন দৃঢ়ভাবে সংস্কার ও উন্মুক্তকরণের নীতি অনুসরণ করে আসছে। চীনের অর্থনীতি দ্রুত উন্নয়নের পাশাপাশি বিশ্ব অর্থনীতির উন্নয়নে নতুন চালিকাশক্তি যুগিয়ে যাচ্ছে। ২০১২ সালে চীনের ডিজিপি ৫২ ট্রিলিয়ন ইউয়ান ছিল, ২০২০ সালে তা ১০০ ট্রিলিয়ন ইউয়ান ছাড়িয়েছে। ৮ বছরের মধ্যে বিশ্বের অর্থনীতির প্রবৃদ্ধিতে চীনের অবদান ৩০ শতাংশে দাঁড়িয়েছে।

রাষ্ট্রদূত বলেন, ‘প্রেসিডেন্ট সি সবসময় নিজের প্রতিশ্রুতি রক্ষা করেন। তিনি সহজে কোনো কথা দেন না, কিন্তু দিলে তা নিশ্চয় রক্ষা করেন। আমি রাষ্ট্রদূত হিসেবে চীনে কাজ করার সময় দেখলাম, চীনের উন্নয়ন পরিকল্পনা বাস্তবায়নে প্রেসিডেন্ট সি খুব মনোযোগী ছিলেন। তার নেতৃত্বে চীনের দ্রুত উন্নয়ন হচ্ছে। শুধু অর্থনৈতিক ক্ষেত্রে নয়, তিনি প্রেসিডেন্ট হিসেবে দায়িত্ব নেওয়া পর, চীনের বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি, ৫জি, এআই ইত্যাদি অনেক ক্ষেত্রে দ্রুত উন্নয়ন হচ্ছে। চীন সত্যি সত্যিই আকাশে উড়ছে।’ (ইয়াং/আলিম/ছাই)