ঢাকা, মে ৩: ‘জীবন-জীবিকায় প্রধান্য দিয়ে সুদৃঢ় আগামীর পথে বাংলাদেশ’ শিরোনামে নতুন অর্থবছরের প্রস্তাবিত বাজেট ঘোষণা করেছে অর্থমন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামাল। বৃহস্পতিবার জাতীয় সংসদে এ বাজেট প্রস্তাব তুলে ধরেন তিনি। এ বাজেটে কিছু পণ্যে আয়কর, শুল্ক, ভ্যাট অথবা সম্পূরক শুল্ক বাড়ানো হয়েছে। ফলে দাম বাড়ছে সেসব পণ্যের। অন্যদিকে, ভ্যাট, আমদানি শুল্ক, আগাম কর অথবা সম্পূরক শুল্কে ছাড় দেয়ায় বেশ কিছু পণ্যের দাম কমছে।
মদ-বিয়ার জাতীয় পণ্য আমদানিতে বাজেটে ২০ শতাংশ অগ্রিম কর আরোপ করায় দাম বাড়বে। প্রতিবছর সিগারেটের মূল্যস্তর ও সম্পূরক শুল্ক বাড়ানো হয়। এবার সম্পূরক শুল্ক না বাড়ালেও প্রিমিয়াম কোয়ালিটির সিগারেটের মূল্যস্তর বাড়ানো হয়েছে। তাই এ ধরনের সিগারেটের দাম বাড়তে পারে।
টাইলস ও স্যানিটারি সামগ্রীর পরিবেশক ও ডিলারদের নিট কমিশনের ওপর ১৫ শতাংশ ভ্যাট আরোপ করা হয়েছে। তাই টাইলস ও স্যানিটারি পণ্যের দাম কিছুটা বাড়বে। এদিকে বিনোদন পার্ক স্থাপনের রাইডসামগ্রীর ওপর ২০ শতাংশ সম্পূরক শুল্ক আরোপ করেছে সরকার। তাই শিশুদের বিনোদনকেন্দ্র স্থাপনের খরচ বাড়তে পারে।
এদিকে, উৎপাদন পর্যায়ে মুড়ির ভ্যাট অব্যাহতি দেয়া হয়েছে। তাই প্যাকেটজাত মুড়ির দাম কমবে। ব্যবসায়ী পর্যায়ে ফলের ওপর ভ্যাট প্রত্যাহার করায় কমবে ফলের দাম। এছাড়াও কৃষি যন্ত্রপাতির মধ্যে নিড়ানি জাতীয় কৃষিযন্ত্র ইউডার ও উইনোয়ারের উৎপাদন ও বাজারজাতকরণে ভ্যাট অব্যাহতি দেয়া হয়েছে। সেই সঙ্গে থ্রেসার মেশিন, পাওয়ার রিপার, পাওয়ার টিলার, অপারেটেড সিডার, কম্বাইন হারভেস্টর, রোটারি টিলার, নিড়ানি ও ঝাড়াইকলের আমদানি পর্যায়ের আগাম কর অব্যাহতি দেয়া হয়েছে। ফলে এসব পণ্যের দাম কমতে পারে।
এদিকে সিসিভেদে শুল্ক কমানো হয়েছে মাইক্রোবাস আমদানিতে। তাই মাইক্রোবাসের দাম কমতে পারে। সম্পূরক শুল্ক কমানো হয়েছে হাইব্রিড গাড়ির। তাই জ্বালানি বান্ধব গাড়ির দাম কমতে পারে।
ব্লেন্ডার, জুসার, মিক্সার, গ্রাইন্ডার, ইলেক্ট্রিক কেটলি, রাইস কুকার, মাল্টি কুকার, প্রেসার কুকারের স্থানীয় উৎপাদন পর্যায়ে ভ্যাট অব্যাহতি দেয়া হয়েছে। এতে এসব পণ্যের দাম কমতে পারে। উৎপাদন পর্যায়ের ভ্যাট অব্যাহতি দেয়ায় কমতে পারে ওয়াশিং মেশিন, মাইক্রোওয়েভ ওভেন ও ইলেক্ট্রিক ওভেনের দাম।
প্রস্তাবিত বাজেটে স্পিনিং মিলে ব্যবহৃত পেপার কোনের ওপর বিদ্যমান মূল্য সংযোজন কর ১৫ শতাংশ থেকে কমিয়ে ৫ শতাংশ করার প্রস্তাব করা হয়েছে। এছাড়াও স্থানীয় পর্যায়ে উৎপাদিত স্যানিটারি ন্যাপকিনের ওপর প্রযোজ্য সমুদয় ভ্যাট অব্যাহতি দেয়া হয়েছে। পাশাপাশি স্যানিটারি ন্যাপকিন ও ডায়াপার উৎপাদনের লক্ষ্যে কতিপয় কাঁচামাল আমদানির ক্ষেত্রে বিদ্যামান ভ্যাট অব্যাহতি সুবিধা দুই বছর বাড়ানো হয়েছে।
এছাড়াও বর্তমান পরিস্থিতিতে করোনাভাইরাস নিয়ন্ত্রণে কোভিড-১৯ টেস্ট কিট, পিপিই এবং ভ্যাকসিন আমদানি উৎপাদন ও ব্যবসায়ী পর্যায়ে ভ্যাট অব্যাহতি সুবিধা বহাল রাখার প্রস্তাব করা হয়েছে বাজেটে। আর গ্রামাঞ্চলে মানুষের স্যানিটেশন সুবিধা আরও সুলভ করার লক্ষ্যে স্থানীয়ভাবে উৎপাদিত ‘লং প্যান’-এর ওপর থেকে ১০ শতাংশ সম্পূরক শুল্ক প্রত্যাহার করা হয়েছে। সেই সঙ্গে অটিজম সেবার কার্যক্রমের ওপর ভ্যাট অব্যাহতি দেয়া হয়েছে।
তানজিদ/সাজিদ