প্রামাণ্যচিত্র ‘থাং-গা’র পেইন্টারের জন্মস্থান’
2021-06-03 10:36:41

প্রামাণ্যচিত্র ‘থাং-গা’র পেইন্টারের জন্মস্থান’_fororder_唐卡1

প্রামাণ্যচিত্র ‘থাং-গা’র পেইন্টারের জন্মস্থান’_fororder_唐卡

‘থাং-গা’র পেইন্টারের জন্মস্থান’ শিরোনামে চীন ও জাপানের যৌথ প্রামাণ্যচিত্র ২৩ মে জাপান ব্রডকাস্টিং কর্পোরেশনের টিভি কেন্দ্র বা এনএইচকেতে পুনঃপ্রচারিত হয়েছে। সম্প্রতি জাপানের প্রবীণ প্রামাণ্যচিত্র পরিচালক ইনওই তাকাশি (inoue takashi) সিনহুয়া বার্তাসংস্থায় এক সাক্ষাত্কার দেন। সাক্ষাত্কারে এ প্রামাণ্যচিত্র তৈরির সময় নিজের অনুভূতি তুলে ধরেন তিনি।

ইনওই তাকাশি ১৯৫২ সালে জন্মগ্রহণ করেছেন। তিনি উয়াসেদা ইউনিভার্সিটি (Waseda University)থেকে স্নাতক ডিগ্রি অর্জন করেন। ১৯৭৬ সালে তিনি এনএইচকেতে যোগ দেন এবং ইতিহাস, সংস্কৃতি ও শিল্পকলাসহ বিভিন্ন বিষয় নিয়ে প্রামাণ্যচিত্র তৈরির কাজে ঝাঁপিয়ে পড়েন। তিনি এখন টোকিও ইউনিভার্সিটি অব দ্য আর্টসের অধ্যাপক হিসেবে কাজ করছেন।

 

গত মার্চ মাসে চীন ও জাপানের যৌথ উদ্যোগে নির্মিত প্রামাণ্যচিত্র ‘থাং-গা’র পেইন্টারের জন্মস্থান’ জাপানের এনএইচকের বেশ কয়েকটি চ্যানেলে প্রচারিত হয়। চমত্কার থাং-গা শিল্প এবং তিব্বতি জাতির তরুণ-তরুণীদের পরিশ্রমের গল্প অনেক জাপানি দর্শককে মুগ্ধ করেছে। জাপানি দর্শকেরা পৃথক পৃথকভাবে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে এ প্রামাণ্যচিত্রের উচ্ছ্বসিত প্রশংসা করেছেন। তারা বলেন, ‘আমার লক্ষ্য হলো নিজের জীবনে স্বচখে প্রকৃত থাং-গা উপভোগ করা’। ‘থাং-গার পেইন্টাররা প্রতিকূল পরিবেশের মধ্যে বড় হন এবং নিজ নিজ স্বপ্ন বাস্তবায়ন করেছেন। যা সত্যিকার ভালো একটি প্রামাণ্যচিত্র।’

 

জাপানি দর্শকদের মধ্যে এ প্রামাণ্যচিত্রের সমাদৃত হওয়ার কারণ প্রসঙ্গে ইনওই তাকাশি বলেন, তিব্বতি জাতির সংস্কৃতির প্রতি জাপানি দর্শকদের অনেক আগ্রহ রয়েছে। তা ছাড়া, এ প্রামাণ্যচিত্রের প্রধান চরিত্রের অভিজ্ঞতাও অনেক মনোমুগ্ধকর। নারী চরিত্র সেছিংলামু নিজের পরিশ্রমের মাধ্যমে বিখ্যাত থাং-গা পেইন্টার হয়ে ওঠেন এবং তার জীবনে বিশাল পরিবর্তন আসে। পুরুষ চরিত্রটি আগেই বিদ্রোহী একজন তরুণ ছিলেন। তিনি পেইন্টিংয়ের মাধ্যমে নিজেকে পরিবর্তন করেন। তাদের বড় হওয়া এবং পরিশ্রমের পদ্ধতি চীনা দর্শক, জাপানি দর্শক তথা বিশ্বের দর্শকদের মধ্যে একই আবেদন সৃষ্টি করতে সক্ষম হয়েছে।

 

ইনওই তাকাশি বলেন, ‘থাং-গা’র পেইন্টারের জন্মস্থান’ শিরোনামের প্রামাণ্যচিত্রটি চীনের প্রতি তার নতুন উপলব্ধি সৃষ্টি করেছে। তা হলো- চীন বরাবরই সংস্কৃতি সংরক্ষণে সচেষ্ট রয়েছে।

বিংশ শতাব্দীর নব্বইয়ের দশকে চীনের সংস্কার ও উন্মুক্তকরণ সংক্রান্ত ধারাবাহিক প্রামাণ্যচিত্র শুটিং করার জন্য ইনওই তাকাশি চীনের বিভিন্ন জায়গায় ঘুরে বেড়িয়েছেন। তিনি বলেন, তিনি নিজের চোখে চীনের বিশাল পরিবর্তনের সাক্ষ্য বহন করেছেন।

ইনওই তাকাশি বলেন, উল্লেখযোগ্য বিষয় হলো- চীনের ঐতিহ্যিক সংস্কৃতি বাঁচিয়ে রাখার চেষ্টা ও সংরক্ষণ। আধুনিকায়নের প্রক্রিয়ায় কিছু ঐতিহ্যবাহী সংস্কৃতি সহজেই উপেক্ষা করা যায়। আমি লক্ষ্য করেছি যে, চীন সরকার সংস্কৃতির সংরক্ষণে অনেক কাজ করেছে। সংস্কৃতি সংরক্ষণের মাধ্যমে ঐতিহ্যবাহী সংস্কৃতি আবারও প্রাণবন্ত হয়ে উঠেছে। এটা খুব প্রশংসনীয় কাজ। এখন আরও বেশি মানুষ তিব্বতি জাতির ঐতিহ্যবাহী সংস্কৃতির গুরুত্ব উপলব্ধি করছে।

 

ইনওই তাকাশি মনে করেন, চিত্রকলার শিল্প শেখানো এবং ঐতিহাসিক সংস্কৃতি সংরক্ষণ করা হলো সংস্কৃতি উদ্দীপ্ত করা, ঐতিহ্যের পুনরুত্থান ও দারিদ্র্যমুক্তির পদ্ধতি। তিব্বতি তরুণ তরুণীদের ঐতিহ্যিক সংস্কৃতি বাঁচিয়ে রাখার প্রচেষ্টা দারুণ আকর্ষণীয়। ‘আমি নিজের অনুভূতি জাপানে পৌঁছে দিতে চাই। জাপানি তরুণ সমাজ এতে উত্সাহিত হবেন বলে আমি আশা করি।’ ইনওই তাকাশি এভাবেই বলছিলেন।

ইনওই তাকাশি চীনের বিশাল পরিবর্তন সম্পর্কে বলেন, চীনের ভবিষ্যতে আরো জটিল হতে পারে। তবে সংস্কার ও উন্মুক্তকরণের ভালো ফল চীনে দেখা গেছে।