চলতি বছর তিব্বতের শান্তিপূর্ণ মুক্তির ৭০তম বার্ষিকী পালিত হচ্ছে।চীনের রাষ্ট্রীয় পরিষদের তথ্য-কার্যালয় গত শুক্রবার “তিব্বতের শান্তিপূর্ণ মুক্তি ও সমৃদ্ধ উন্নয়ন”শীর্ষক এক শ্বেতপত্র প্রকাশ করেছে।
তিব্বতের আয়তন ১২ লাখ ২৮ .৪ হাজার বর্গকিলোমিটার। তা সারা চীনের আট ভাগের এক ভাগ, এবং সিনচিয়াংয়ের পর চীনের দ্বিতীয় বৃহত্তম প্রদেশ। তিব্বতের গড় উচ্চতা সমুদ্রপৃষ্ঠ থেকে ৪,০০০ মিটারের বেশি। ২০১৬ সালে কাজের সূত্রে আমি একবার তিব্বতে গিয়েছিলাম। তখন কেবল রাজধানী লাসায় এক সপ্তাহের মতো ছিলাম। তবে, ওই সময়ের অভিজ্ঞতা আমার মনে এখনো গভীর দাগ কেটে আছে। তিব্বতের অনিন্দ্য প্রাকৃতিক পরিবেশ, সুদীর্ঘ ইতিহাস, এবং ধর্মীয় ও সংখ্যালঘু জাতির সাংস্কৃতিক বৈচিত্র আমি কখনো ভুলতে পারব না।
কিন্তু, মাত্র কয়েক দশক আগে তিব্বত পুরোপুরি অন্য রকম ছিল। পশ্চাত্পদ ও দরিদ্র ছিল। বলার মতো কিছুই ছিল না সেখানে। ছিং হাই প্রদেশের সি নিং শহর থেকে লাসায় একবার আসা-যাওয়া করতে এক বছর সময় লাগত। এখন দুটি শহরের মধ্যে বিমান পথে যাতায়ত করতে মাত্র দুই ঘন্টার একটু বেশি সময় লাগে। ১৯৫১ সালের ২৩ মে তিব্বতের শান্তিপূর্ণ মুক্তির লক্ষ্যে চীনের কেন্দ্রীয় সরকার ও তিব্বতের স্থানীয় সরকার এক চুক্তি স্বাক্ষর করে। এর মাধ্যমে তিব্বতের জনগণ চিরকালীন দাসত্ব থেকে মুক্তি লাভ করে। পাশাপাশি, দেশের বিভিন্ন জাতির জনগণের সাথে একযোগে উন্নয়নের পথে তাদের অগ্রযাত্রার সূচনা হয়। সময়ের ব্যবধানে, উন্নয়নের মহাসড়ক ধরে দুর্বার গতিতে এগিয়ে চলছে তিব্বত।
পরিসংখ্যান মতে, ১৯৫১ সালে তিব্বতের জিডিপি ছিল মাত্র ১২.৯ কোটি ইউয়ান। আর ২০২০ সালে তা বেড়ে দাঁড়ায় ১৯,০০০ কোটি ইউয়ানে। গত বছর তিব্বতের শহুরে নাগরিকদের মাথাপিছু নিষ্পত্তিযোগ্য আয় ছিল ২০১০ সালের দ্বিগুণ। তিব্বতের গ্রামের বাসিন্দাদের মাথাপিছু নিষ্পত্তিযোগ্য আয়ও টানা ১৮ বছর ধরে দুই অংকে বৃদ্ধি পেয়ে আসছে। গোটা চীনে এমন ঘটনা প্রথম।
পাশ্চাত্যের দেশগুলোর চীন-বিরোধী শক্তি বার বার চীনের তিব্বতের বিষয়ে না-হক হস্তক্ষেপ করে আসছে। আসলে চীন সরকার তিব্বতের উন্নয়নে সঠিক পরিকল্পনা প্রণয়ন ও বাস্তবায়ন করছে। বর্তমানে তিব্বত ধীরে ধীরে উন্নতি করছে। তিব্বতকে অজুহাত হিসেবে নিয়ে চীনের অভ্যন্তরীণ বিষয়ে হস্তক্ষেপ কোনো অবস্থাতেই গ্রহণযোগ্য হতে পারে না। বস্তুত, তিব্বতের প্রকৃত চিত্রই চীন-বিরোধী শক্তির মিথ্যাচারের যথার্থ জবাব।
গত মাসে, আমার বাবা তিব্বত ভ্রমণ করেছেন। অবসর নেওয়ার পর তিনি প্রথম সেখানে ভ্রমণ করতে যান। তাঁর পাঠানো ছবি দেখে আমি যেন ২০১৬ সালে ফিরে গেছি। তবে, বর্তমানে তিব্বত কয়েক বছরের তুলনায় আরো উন্নত,সুন্দর ও আকর্ষণীয় হয়ে ওঠেছে। শিশির/এনাম/আকাশ