চীনা টিকা করোনার ভারতীয় ধরনের বিরুদ্ধেও কার্যকর
2021-05-21 14:36:33

চীনের রাষ্ট্রীয় পরিষদের যৌথ মহামারি প্রতিরোধ ও নিয়ন্ত্রণ ব্যবস্থায় গঠিত দল  গতকাল (বৃহস্পতিবার) বেইজিংয়ে এক সাংবাদিক সম্মেলনের আয়োজন করেছে। তাতে চীনে মোট ৪৫ কোটি ডোজ কোভিড-১৯ টিকা প্রয়োগ হয়েছে বলে জানানো হয়। পাশাপাশি, বর্তমান চীনা টিকা ভারতের রূপান্তিত ভাইরাসের বিরুদ্ধেও কার্যকর বলে নিশ্চিত করা হয়।

এদিন চীনের জাতীয় স্বাস্থ্য কমিশনের মুখপাত্র মি ফেং বলেন, সম্প্রতি চীনের নানা জায়গায় লোকজন সক্রিয় টিকা নিয়েছেন। গত ১৯ মে পর্যন্ত চীনে মোট ৪৪ কোটি ৯৫ লাখ ১১ হাজার ডোজ টিকা প্রয়োগ করা হয়েছে। গত ৮ দিনে ১০ কোটিরও বেশি ডোজ প্রদান করা হয়েছে।

সম্প্রতি চীনের লিয়াও নিং ও আনহুই প্রদেশে ছোট আকারের স্থানীয় মহামারী দেখা দেয়। বিশেষজ্ঞরা মনে করেন যে, এবার মহামারি ব্যাপকভাবে ছড়িয়ে পড়ার সম্ভাবনা খুব কম। তবে, চীনে ভাইরাসের বিদেশি ধরন ছড়িয়ে পড়ার সম্ভাবনা রয়েছে। তাই মহামারি প্রতিরোধ শিথিল করা যাবে না। চীনের জাতীয় স্বাস্থ্য কমিশনের রোগ প্রতিরোধ ব্যুরোর উপপ্রধান উ লিয়াং ইউ বলেন,‘মহামারি শেষ হয়নি। সারা বিশ্বে মহামারি এখনো অব্যাহত রয়েছে।  বিদেশ থেকে চীনে ভাইরাস আসার ঝুঁকি বাড়ছে। মহামারি প্রতিরোধ ও নিয়ন্ত্রণের অবস্থা জটিল ও কঠোর হয়ে পড়ছে। মহামারির প্রতিরোধ ও নিয়ন্ত্রণে নানা জটিলতা ও অনিশ্চয়তা রয়েছে। আমাদের মাহামরি প্রতিরোধ ও নিয়ন্ত্রণ কাজ কখনো শিথিল করা যাবে না।’

চীনের রোগ নিয়ন্ত্রণ কেন্দ্রের বিশেষজ্ঞ উ চুন ইউ বলেন, কোভিড-১৯ মহামারি শুরুর পর থেকে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার উদ্যোগে প্রতিষ্ঠিত হয়েছে একটি ওয়াবসাইট। তা বিশ্বের কোভিড-১৯ ভাইরাসের রূপান্তর পর্যবেক্ষণ করছে। এ ওয়াবসাইটের তথ্য অনুযায়ী, ভারতের রূপান্তিত ভাইরাস ৩ হাজার ধরনের এবং এ ভাইরাসগুলোকে নজরে রাখতে হয়। তিনি বলেন,‘ভাইরাস যত বেশি পরিবর্তন হবে, তত বেশি ভয়াবহ হবে। ভাইরাসের পরিবর্তন কোন ধরনের তা গুরুত্বপূর্ণ। ক্ষুদ্র পরিবর্তনে বিশেষ মনোযোগ দেয়ার প্রয়োজন নেই। বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা ভাইরাসকে তিন ভাগে ভাগ করেছে। প্রথমটা ধরনের প্রতি বিশেষ মনোযোগ প্রয়োজন। যেমন: বৃটেন, ব্রাজিল ও দক্ষিণ আফ্রিকার রূপান্তিত কোভিড-১৯ ভাইরাস। দ্বিতীয়টাকে নজরে রাখতে হয়। যেমন: ভারতের বর্তমান ভাইরাস । এ ধরনের ভাইরাস এখন সবচেয়ে বেশি দেখা যায়। বাকি রূপান্তিত ভাইরাস ততটা গুরুত্বপূর্ণ নয়।’

চীনা রোগ নিয়ন্ত্রণ কেন্দ্রের গবেষক সাও ই মিং বলেন, চীনের বর্তমান টিকা ভারতের রূপান্তিত ভাইরাসের ওপরও কার্যকর। যদি আরও নতুন রূপান্তিত ভাইরাস হাজির হয় এবং বর্তমান টিকা সেসব মোকাবিলায় যথেষ্ট না হয়, তাহলে নতুন টিকা উপদার দেয়া হবে। তিনি বলেন,‘প্রাথমিক গবেষণা অনুযায়ী বর্তমানে আমাদের টিকাগুলো ভারতের রূপান্তিত ভাইরাসকে মোকাবিলা করতে পারে এবং মানুষকে রক্ষা করতে পারে। যদি ভবিষ্যতে এমন ভাইরাস হাজির হয়, যা বতর্মান টিকাগুলো মোকাবিলা করতে ব্যর্থ হয়, তাহলে আমরা নতুন টিকা তৈরি করতে পারব। কারণ আমাদের নিষ্ক্রিয় টিকা উত্পাদন পদ্ধতির মাধ্যমে দ্রুত নতুন টিকা তৈরি করা সম্ভব। নতুন প্রজাতির ভাইরাস দিয়ে নতুন টিকা তৈরি করা হবে। সংশ্লিষ্ট বিভাগ এখন ভাইরাসের পরিবর্তন নিবিড়ভাবে অনুসরণ করছে। যদি উপরের পরিস্থিতি দেখা দেয়, তাহলে দ্রুত আমরা নতুন টিকা তৈরি করব।’ (শিশির/এনাম/আকাশ)