মে ২০: চলতি বছরের ৫ই মে কানাডার ইয়র্ক বিশ্ববিদ্যালয়ের সমাজবিজ্ঞানী কেরি ওয়া ওয়াশিংটন পোস্টকে বলেন, একের পর এক জরিপে দেখা গেছে যে, মহামারী মোকাবিলায় চীন সরকারের প্রতিক্রিয়ার ফলাফল সরকারের ‘বৈধতা’-কে আরও শক্তিশালী করেছে। জরিপে অংশগ্রহণকারীদের ৯৮ শতাংশ চীনা সরকারকে বিশ্বাস করেন। এই গবেষণার ফলাফল পূর্ববর্তী বেশ কয়েকটি গবেষণার ফলাফলের সত্যতা নিশ্চিত করে। ২০২০ সালের জুলাইয়ে হার্ভার্ড বিশ্ববিদ্যালয়ের কেনেডি স্কুল অফ গভর্নমেন্ট ‘চীনা কমিউনিস্ট পার্টির ক্ষমতা বোঝা: চীনা জনগণের ওপর দীর্ঘমেয়াদী জরিপ’ শীর্ষক একটি প্রতিবেদন প্রকাশ করে। ১৩ বছর ধরে ৩০ হাজারেরও বেশি মানুষ জরিপে অংশ নেয়। জরিপের ফল অনুসারে, ২০০৩ সাল থেকে সরকারের কাজে চীনা জনগণের সন্তুষ্টি ব্যাপকভাবে বাড়তে থাকে। এবং সন্তুষ্টির হার বর্তমানে পৌঁছেছে ৯৩ শতাংশে। প্রতিবেদনে বলা হয়, ‘চীনা কমিউনিস্ট পার্টিকে বরাবরের মতোই শক্তিশালী বলে মনে হয়। নীতিমালার জন্য জনসাধারণের ব্যাপক সমর্থন আবার দলকে অতিরিক্ত শক্তি যুগিয়ে চলেছে।’ এসব সমীক্ষার ফলাফলকে সামনে রেখে এ কথা বলা চলে যে, জনকেন্দ্রিক কার্যক্রমই সিপিসি-কে এতো জনপ্রিয়তা এনে দিয়েছে; সিপিসি বরাবরই জনগণের কল্যাণের কথা মাথায় রেখেই কাজ করে থাকে।
যুক্তরাষ্ট্রের হার্ভার্ড বিশ্ববিদ্যালয়ের কেনেডি স্কুল থেকে প্রাপ্ত একটি সমীক্ষা প্রতিবেদনে দেখা গেছে যে, ২০১৬ সালে চীনা জনগণের সরকারের প্রতি সন্তুষ্টি ছিল ৯৩.১ শতাংশ। দুই সহস্রাধিক হাজার বছর আগে, বিখ্যাত চীনা চিন্তাবিদ সুনজি, জনগণকে পানির সাথে এবং শাসকদেরকে নৌকার সাথে তুলনা করেছিলেন। তিনি বলেছিলেন: ‘জল একটি নৌকাকে বহন করতে পারে, আবার উল্টেও দিতে পারে।’ দৃশ্যত, চীনের ক্ষমতাসীন দল সিপিসি এই কথা সর্বদা স্মরণে রেখেই কাজ করে; কাজ করে জনগণের জন্য, যারা হচ্ছে দলটির মূল চালিকাশক্তি।
চীন ও বিশ্বায়ন থিঙ্ক ট্যাঙ্কের সিনিয়র গবেষক লং আনজি বিশ্বাস করেন যে, পশ্চিমারা আসলেই চীনাদের মডেল বুঝতে পারে না। তারা বুঝতে পারে না যে, বরাবরই চীনা কমিউনিস্ট পার্টির কাজকর্ম চীনাদের প্রত্যাশা পূরণের উদ্দেশ্যেই নিবেদিত। এ কারণেই, চীনা কমিউনিস্ট পার্টির রাজনৈতিক অবস্থান আজও এতো শক্তিশালী।
বিগত ৪০ বছরে ৮৫ কোটি চীনা দারিদ্র্যমুক্ত হয়েছে চীনে। বিশেষ করে সিপিসি’র অষ্টাদশ কেন্দ্রীয় কমিটির অধিবেশনের পর, চীন দারিদ্র্যের বিরুদ্ধে বৃহত্তম লড়াই করেছে। আট বছর কঠোর পরিশ্রমের পরে, বর্তমান মানদণ্ডে দারিদ্র্যের মধ্যে জীবনযাপনকারী সকল ৯ কোটি ৮৯ লাখ ৯০ হাজার মানুষকে দারিদ্র্য থেকে মুক্ত হয়েছে। এ প্রসঙ্গে সার্বিয়ার আন্তর্জাতিক ইস্যু বিশেষজ্ঞ আইভোনা রাজওয়াক বলেন, চীনের হতদারিদ্র্য দূরীকরণের কাজটি মানবাধিকার খাতের কাজকেই মূলত এগিয়ে নিয়েছে। এটি জনকেন্দ্রিক শাসনের মূর্ত প্রতীক।
কোভিড-১৯ মহামারী মোকাবিলায় চীনের ধারাবাহিক প্রতিরোধক-ব্যবস্থাও ছিল জনকেন্দ্রিক। ভেনিজুয়েলার ইউনাইটেড সোশ্যালিস্ট পার্টির আন্তর্জাতিক সম্পর্কের ভাইস চেয়ারম্যান আদন শ্যাভেজ বলেন, মহামারীর মুখে চীন সরকার সর্বদা মানুষের জীবন বাঁচানো এবং জনস্বাস্থ্যকে অগ্রাধিকার দিয়েছে এবং আক্রান্ত রোগীদের সর্বোচ্চ ভালো চিকিত্সা দেওয়ায় যথাসাধ্য চেষ্টা করেছে ও করছে। জনৈক রুশ বিশেষজ্ঞ বলেন, চীন মহামারী নিয়ন্ত্রণে সফল হয়েছে। এই সফলতার মূল কৃতিত্ব চীনা কমিউনিস্ট পার্টি পেতেই পারে। (ওয়াং হাইমান/আলিম/ছাই)