আন্তর্জাতিক যাদুঘর দিবস: মহামারির পর বৈশ্বিক যাদুঘর সহযোগিতা বাড়াবে চীন
2021-05-18 14:53:57

আজ মঙ্গলবার আন্তর্জাতিক যাদুঘর দিবস। চলতি বছর ‘যাদুঘরের ভবিষ্যত: পুনরুদ্ধার ও পুনর্নির্মাণ’ প্রতিপাদ্যকে ধারণ করে দিবসটি পালিত হচ্ছে। চীনা জাতীয় সাংস্কৃতিক পুরাকীর্তি নিদর্শন ব্যুরোর এক কর্মকর্তা জানিয়েছেন, মহামারি পরবর্তী সময়ে, চীনা যাদুঘর আন্তর্জাতিক সহযোগিতা জোরদার করবে এবং সারা বিশ্বের যাদুঘরগুলোর সাথে একযোগে চ্যালেঞ্জসমূহ মোকাবিলা করবে।

গত বছর কোভিড-১৯ মহামারি বিশ্বব্যাপী ছড়িয়ে পড়ার প্রেক্ষাপটে এ বছরের আন্তর্জাতিক যাদুঘর দিবসের উপরোক্ত প্রতিপাদ্য নির্ধারণ করা হয়। বিশ্বব্যাপী মহামারি প্রতিরোধ স্বাভাবিক একটি ব্যাপারে পরিণত হয়েছে।  এমন প্রেক্ষাপটে যাদুঘর কীভাবে নানান চ্যালেঞ্জ মোকাবিলা করবে, নিজের অবস্থান ও উন্নয়নের দিক সমন্বয় করবে, এবং নতুন উন্নয়ন, পদ্ধতি, ও পরিকল্পনা অনুসন্ধান করবে--এসব বিশ্বের সকল যাদুঘরের অভিন্ন কর্তব্য।

আন্তর্জাতিক যাদুঘর কমিটির ভাইস চেয়ারম্যান ও চীনা যাদুঘর কমিটির উপ-মহাপরিচালক আন লাই সুন বলেন, চলতি বছরের দিবসের প্রতিপাদ্যের রয়েছে নানা অর্থ। তিনি বলেন,“পুনরুদ্ধার থেকে সহজে বোঝা যায় যে, যাদুঘর আবার খোলা হবে, এবং তার আয় ও বিন্যাস সাধারণ পর্যায়ে ফিরিয়ে আনা হবে। পুনর্নির্মাণ শব্দের দুটি অর্থ: যাদুঘরের সামাজিক ভাবমূর্তি আবার তৈরি করা, এবং পুনরায় তার কর্যক্রম শুরু করা। বিশেষ করে নতুন সামাজিক ও সাংস্কৃতিক মূল্যের দৃষ্টিতে যাদুঘর গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করবে।”

ইউনিস্কো প্রকাশিত সর্বশেষ প্রতিবেদন অনুযায়ী, গত বছরে মহামারির কঠিন পরিস্থিতিতে বিশ্বের যাদুঘরগুলো গড়ে ১৫০ দিনের মতো বন্ধ ছিল এবং আয়  কমেছে ৪০-৬০ শতাংশ।  তাছাড়া, মহামারির প্রভাবে বিশ্বের ৯০ শতাংশ যাদুঘর বিভিন্ন সময়ে বন্ধ ছিল। ২০২০ সালের সেপ্টেম্বর মাসের একটি পরিসংখ্যান অনুযায়ী, ছয় শতাংশ যাদুঘর স্থায়ীভাবে বন্ধ হয় এবং ১৮ শতাংশ যাদুঘরের আবার খোলার সম্ভবনা কম।

তবে, ভাগ্যক্রমে চীনের যাদুঘর গত বছর গড়ে মাত্র ৩০ দিনের মতো বন্ধ ছিল, তা বিশ্বের সবচেয়ে কম দেশগুলোর অন্যতম। একটি জরিপে অংশ নেওয়া ৮৭টি দেশের মধ্যে মাত্র ১৩টি দেশের যাদুঘর মহামারিতে আর্থিকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়নি। চীনও তাদের মধ্যে একটি দেশ।

চীনা জাতীয় সাংস্কৃতিক পুরাকীর্তি নিদর্শন ব্যুরোর ভাইস প্রধান কুয়ান ছিয়াং বলেন, বিশ্বব্যাপী মহামারি প্রতিরোধ ও নিয়ন্ত্রণ নিয়মিত ও স্বাভাবিক ব্যাপারে পরিণত হয়েছে। এমন প্রেক্ষাপটে যাদুঘরসমূহের মধ্যে আন্তর্জাতিক সহযোগিতা খুব গুরুত্বপূর্ণ। এমন সহযোগিতা বিভিন্ন সভ্যতার আদান-প্রদান জোদার করবে এবং মানব জাতির অভিন্ন লক্ষ্যের কমিউনিটি গঠনে ইতিবাচক ভূমিকা পালন করবে। চীনা যাদুঘরগুলো ঐতিহ্যিক ও  সমসাময়িক মান এবং বিশ্বব্যাপী প্রভাশালী--এমন পুরাকীর্তি বাছাই, গবেষণা, প্রদর্শন  ও প্রচার করবে। তিনি জোর দিয়ে বলেন, নতুন যুগে, যাদুঘরের উচিত নিউ মিডিয়া পদ্ধতি ব্যবহার করে প্রচারণার ধরণ প্রসারিত করা। তিনি বলেন,“আমরা আধুনিক প্রযুক্তির ব্যবহার ও আন্তঃসীমান্ত সমন্বয় জোরদার করব। পুরাকীর্তি তথ্যর ডিজিটাল ও স্মার্ট প্রচার এগিয়ে নিয়ে যাব। ভাগাভাগি ও বৈদেশিক প্রচারণার ভিত্তিতে সকল মিডিয়া প্ল্যাটফর্ম ব্যবহার করব। ভিজ্যুয়াল, ইন্টারেক্টিভ ও প্রযুক্তিগত অভিজ্ঞতার সাংস্কৃতিক সেবা প্রদান করব। অনলাইন ও অফলাইন প্রচারণার সমন্বয় করব। চীনা গল্প আন্তর্জাতিক পদ্ধতির মাধ্যমে বলব এবং চীনা সংস্কৃতির আন্তর্জাতিক প্রভাব জোরদার করব।”(শিশির/এনাম/আকাশ)