চলমান সহিংসতা গাজার মানবিক সংকট তীব্রতর করছে
2021-05-17 14:07:28

ফিলিস্তিন ও ইসরাইলের মধ্যে চলমান সংর্ঘষ দিনদিন গুরুতর হয়ে ওঠছে। সহিংসতায় স্থানীয় সাধারণ মানুষেরা বেশি শিকার বলে গণমাধ্যমের খবরে উঠে আসছে। সংঘর্ষে স্থানীয়রা পানি, চিকিত্সা, ও স্বাস্থ্য সেবা থেকে বঞ্চিত হচ্ছে বলে জাতিসংঘ সম্প্রতি উদ্বেগ প্রকাশ করেছে।

জাতিসংঘের মানবিক সমন্বয় কার্যালয়ের  মুখপাত্র সম্প্রতি জেনেভায় অনুষ্ঠিত এক সাংবাদিক সম্মেলনে বলেন, “অধিকৃত ফিলিস্তিন ভূমিতে  ইসরাইল ও ফিলিস্তিনের সংর্ঘষ তীব্রতর হওয়ায় অবাক হয়েছি আমরা। সংঘর্ষে নিহতদের সংখ্যা দিন দিন বাড়ছে এবং স্থানীয় সাধারণ মানুষেরা এর বেশি শিকার হচ্ছেন। গাজা অঞ্চলের ২০ লাখ ফিলিস্তিনি সংঘর্ষের কারণে পানি ও প্রয়োজন স্বাস্থ্য ও চিকিত্সা সেবা থেকে বঞ্চিত হচ্ছেন। এটি কোভিড-১৯ মহামারি প্রতিরোধের ওপর নেতিবাচক প্রভাব ফেলছে। আমরা এখন সংশ্লিষ্ট বিভাগের সঙ্গে যোগাযোগ করে ত্রাণ সামগ্রী, বিশেষ করে জ্বালানি, গাজায় প্রেরণ নিশ্চিত করতে চাই। তবে, এখন গাজায় প্রবেশের সব পথ বন্ধ রয়েছে। তাই আমরা সংশ্লিষ্ট পক্ষের সঙ্গে আলোচনা করছি।”

বর্তমানে গাজা অঞ্চলে পানির অভাব দেখা দিয়েছে। গাজার উত্তরাঞ্চলে একটি পানি পরিশোধনাগার আড়াই লাখ মানুষের জন্য পানি সরবরাহ করতে পারে। তবে, সহিংসতার কারণে এটি এখন বন্ধ রয়েছে। বিদ্যুত্ বিভ্রাট ও নেইওয়ার্ক নষ্ট হবার কারণে গাজা ও খান ইউনিস শহরের ১ লাখ ৩০ হাজার মানুষ সুপেয় পানি থেকে বঞ্চিত। তাছাড়া, গাজার অন্য অবকাঠামোও ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে।

মুখপাত্র বলেন, “গাজা অঞ্চলের বিভিন্ন জনবহুল এলাকায় নাগরিক সম্পত্তি গুরুতর ধ্বংসপ্রাপ্ত হয়েছে। ২০০টি আবাসিক ভবন বিভিন্ন মাত্রায় ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। আশ্রয়কর্মীরা এখন গৃহহারা পরিবারকে  সাহায্য করছে।  ক্রমবর্ধমান সংঘর্ষে স্কুল, পেশাদার প্রশিক্ষণ কেন্দ্র, ও বিশ্ববিদ্যালয়সহ ৩১টি শিক্ষা প্রতিষ্ঠান ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে।”

তিনি বলেন, শতাধিক মানুষ ফিলিস্তিনের উদ্বাস্তুদের জন্য জাতিসংঘ ত্রাণ কার্যক্রম সংস্থার স্কুলে আশ্রয় নেয়। তাদের অধিকাংশ গাজা থেকে এসেছে। “সংস্থাটি স্কুলকে আশ্রয় কেন্দ্রে পরিণত করছে, তবে, তাতে কোভিড-১৯  ভাইরাস ছড়িয়ে পড়ার ঝুঁকিও রয়েছে। জাতিসংঘের মানবিক কর্মীরা গাজায় সাহায়তা অব্যাহত রেখেছে। কিন্তু অনিরাপদ পরিস্থিতিতে মৌলিক সেবা সরবরাহ এবং কোভিড-১৯ মহামারি প্রতিরোধের প্রয়োজনীয় সহায়তা প্রদান সীমাবদ্ধ হয়ে পড়েছে।”

 তিনি বলেন, অধিকৃত ফিলিস্তিন ভূখণ্ডে অনতিবিলম্বে সংঘর্ষ বন্ধের আহ্বান। সংঘর্ষে জড়িত সব পক্ষের দায়িত্ব হচ্ছে সাধারণ মানুষকে রক্ষা করা এবং মানবিক গ্রুপের নিরাপদে সহায়তা দান নিশ্চিত করা। (শিশির/এনাম/রুবি)