বিশ্বের অনেক ক্ষেত্রের অগ্রগতি মূলত চীনের কারণে: ব্রিটিশ বিশেষজ্ঞ
2021-05-14 16:26:28

বিশ্বের অনেক ক্ষেত্রের অগ্রগতি মূলত চীনের কারণে: ব্রিটিশ বিশেষজ্ঞ_fororder_d613eb95f7368ec4c515814c7497ffd2u5

মে ১৪: বিশ্বকে চীনের সঙ্গে যোগাযোগ করতে হবে। চীনও অবশ্যই উন্নত হবে। বিখ্যাত চীনবিষয়ক ব্রিটিশ বিশেষজ্ঞ ও লন্ডনের কিংস কলেজের চীন গবেষণালয়ের প্রধান কেরি ব্রাউন সম্প্রতি এ কথা বলেছেন।  তিনি বলেন, ইউরোপ ও যুক্তরাষ্ট্রের অন্য দেশের অগ্রগতি মেনে নিতে এবং চীনের অভিজ্ঞতা থেকে শিখতে হবে। চীনা কমিউনিস্ট পার্টি (সিপিসি) প্রতিষ্ঠার পর বিগত শত বছরে চীনে বিরাট পরিবর্তন হয়েছে। চীনের সামর্থ্য ও আন্তর্জাতিক অবস্থান আগের চেয়ে অনেক উন্নত হয়েছে। ভবিষ্যতে চীনের সম্মুখীন চ্যালেঞ্জ সম্পর্কেও তিনি মন্তব্য করেন।

তিনি বলেন, ‘১৯৯১ সালে আমি প্রথম চীনে আসি। ৩০ বছর আগের কথা সেটা। ১৯৯২ সালে আমি অস্ট্রেলিয়ার মেলবোর্নে চীনা ভাষা শিক্ষা শুরু করি। বর্তমানে কিংস কলেজের চীনা গবেষণালয়ে মোট ৬ জন ফুলটাইম কর্মী আছেন। এ ছাড়াও, কলেজটির ৩০ জন পিএইচডি শিক্ষার্থী ও মাস্টার শিক্ষার্থী আছেন।’

সম্প্রতি ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রী বরিস জনসনও বলেন, চীনের সঙ্গে সহযোগিতা ব্রিটেনের অর্থনীতির উন্নয়নের জন্য অনুকূল। চীনের সাথে ঠান্ডা যুদ্ধের আহ্বান জানিয়ে করা মন্তব্যগুলো খুব ভুল। ব্রিটেন ইউরোপীয় ইউনিয়ন (ইইউ) ত্যাগ করার পর অব্যাহতভাবে চীনের সঙ্গে ঘনিষ্ঠ সহযোগিতা চালাতে থাকবে।

এ সম্পর্কে কেরি ব্রাউন বলেন, কোভিড-১৯ মহামারী ছড়িয়ে পড়ার আগে অধিকাংশ ব্রিটিশ চীনের ভূমিকা বিবেচনা করতো না। কিন্তু ভাইরাস ছড়িয়ে পড়ার পর, চীন সফলভাবে মহামারী নিয়ন্ত্রণ করতে পারে। ব্রিটিশরা এখন তাই চীনকে নিয়ে আলোচনা করেন। কিন্তু এখনও অনেক ব্রিটিশ চীনের বিরুদ্ধে নেতিবাচক মন্তব্য করে যাচ্ছেন।

তিনি বলেন, চীন জনগণের জীবনযাত্রার মান বাড়ানো ও অবকাঠামো ব্যবস্থার উন্নয়নের ক্ষেত্রে প্রচুর সাফল্য অর্জন করেছে। ইউরোপীয় মানুষের ধারণা পরিবর্তন করতে হবে। আসলে চীনের বর্তমান অবস্থার মতো ইউরোপ ও যুক্তরাষ্ট্রেরও গোল্ডেন পিরিয়ড ও হানিমুন পিরিয়ড ছিল। কিন্তু তারা চীনের বর্তমান অবস্থাকে স্বীকার করে না।  

কেরি বলেন, এ বছর হলো সিপিসি প্রতিষ্ঠার শততম বার্ষিকী। এক শ বছরে চীনের বিরাট পরিবর্তন হয়েছে। চীন দারিদ্র্যবিমোচন, চিকিত্সা ও সামাজিক কল্যাণের ক্ষেত্রে অনেক অগ্রগতি লাভ করেছে। এ ছাড়াও, বিশ্বের এসব ক্ষেত্রের অগ্রগতি মূলত চীনের কারণে। চীনের উন্নয়ন ভারত ও আফ্রিকাকে উন্নয়নের দিকে চালিত করে।

বর্তমানে চীনের সামনে প্রধান চ্যালেঞ্জ হলো আন্তর্জাতিক উন্নয়নের সঠিক উপায় বা দিক-নির্দেশনা ঠিক করা। অভ্যন্তরীণ উন্নয়নের ক্ষেত্রে চীনের সম্মুখীন প্রধান চ্যালেঞ্জ হলো জনগণের জীবনযাত্রার মানের টেকসই উন্নয়ন করা।  

চীনের দারিদ্র্যবিমোচন সম্পর্কে তিনি বলেন, ‘আমি সিনচিয়াং ও ইনারমঙ্গোলিয়াসহ চীনের বিভিন্ন অঞ্চলের গ্রামে গিয়েছি। আগের খুবই দরিদ্র গ্রামগুলো বর্তমানে অনেক উন্নত হয়েছে। চীনের মাথাপিছু জিডিপি ১০ হাজার ইউয়ান ছাড়িয়ে গেছে।’

চীনের কোভিড-১৯ মহামারী প্রতিরোধের কার্যকর ব্যবস্থা প্রসঙ্গে কেরি ব্রাউন বলেন, চীনের সামাজিক ব্যবস্থার সুবিধা নিয়ে সরকার কার্যকরভাবে মহামারী প্রতিরোধের বিভিন্ন ব্যবস্থা নিতে পেরেছে। কিন্তু ইউরোপের সামাজিক ব্যবস্থায় এ ধরণের ব্যবস্থা নেয়ার জন্য সামাজিক ও রাজনৈতিক খরচ অনেক বেশি। সেজন্য ইউরোপ ব্যবস্থাগুলো নিতে পারেনি বা নিলেও সময়মতো নিতে পারেনি।

কেরি বলেন, আসলে চীনে উন্নয়নের গতি থামবে না এবং কেউ এটি পরিবর্তন করতেও পারবে না। বিশ্বকে চীনের সঙ্গে মানিয়ে চলতে হবে। পাশ্চাত্যের দেশগুলোকেও চীনের উন্নয়নকে দাবিয়ে রাখার অপচেষ্টা বন্ধ করতে হবে। তেমন ধরনের চেষ্টা সফলও হবে না। এ ছাড়া, চীন অব্যাহতভাবে আন্তর্জাতিক বিষয়ে আরও গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করতে থাকবে। (ছাই/আলিম/ওয়াং হাইমান)