আপন আলোয় ১৬: চীনে যেভাবে ঈদ উদযাপন করেন বাংলাদেশী শিক্ষার্থীরা
এ পর্বে থাকছে:
১. প্রতিবেদন: চীনে যেভাবে ঈদ উদযাপন করেন বাংলাদেশী শিক্ষার্থীরা
২. প্রতিবেদন: চীনের মুসলিমদের ঈদ উদযাপন
৩. অন্তরঙ্গ আলাপন: গল্প বলাটাকে আমি শিল্পমাধ্যম হিসেবে নিয়েছি -- তামান্না তিথি
-------------------------------------------------------------------------
চীনে যেভাবে ঈদ উদযাপন করেন বাংলাদেশী শিক্ষার্থীরা
ঈদের নামাজ শেষে চীনে অধ্যায়নরত বাংলাদেশী শিক্ষার্থীদের সেলফি
ঈদের দিন বিভিন্ন দেশের শিক্ষার্থীরা মিলে একসঙ্গে ঈদের নামাজ আদায় করার পর সবাই মিলে চীনের ঐতিহ্যবাহী মজাদার খাবার খাওয়ার আর বন্ধুদের সঙ্গে জম্পেশ আড্ডার কথা জানান চায়না ইউনিভার্সিটি অব পেট্রলিয়ামে অধ্যায়নরত শিক্ষার্থী সাখাওয়াত হোসেন।
দেশের মতো আনন্দ না হলেও বিশ্বের নানা দেশের মুসলমানদের সঙ্গে ঈদ উদ্যাপনের অভিজ্ঞতাকে স্বর্গীয় অনুভূতি বলেও মনে করেন অনেকে। সহপাঠীদের হাতে বানানো হালুয়া-রুটি ও লাচ্ছা-সেমাই এবং চীনের ঐতিহ্যবাহী মজাদার খাবার আর বিকেলে বন্ধু ও সহপাঠীদের সঙ্গে সংগীত ও আড্ডায় কাটে শিক্ষার্থীদের ঈদ।
চীনে ঈদের নামাজ শেষে সবাই মিলে বেরিয়ে পড়েন অন্য বন্ধুদের হলে গিয়ে বন্ধুদের আতিথিয়তা গ্রহণ করার কথা জানান চীনের হেনান পলিটেকনিক বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী ফজলে রাব্বি।
ঈদের দিন বাংলাদেশসহ বিভিন্ন দেশের শিক্ষার্থীদের আনন্দ আড্ডা
দেশীয় ভাই-বন্ধুদের সঙ্গে জম্পেশ খাওয়াদাওয়ার মধ্যে ঈদের আনন্দ খুঁজে পাওয়ার কথা জানালেন চীনের চিয়াংসু প্রদেশের হুয়াইইন ইনস্টিটিউট অব টেকনলজির শিক্ষার্থী সাব্রিনা লিজা। ছুটিতে বর্তমানে বাংলাদেশে থাকা লিজা জানালেন, ঈদে নানা দেশের মুসলমানদের সঙ্গে কুশল বিনিময় ও ঈদের আনন্দ ভাগাভাগি বিশ্বভ্রাতৃত্ব আর সম্প্রীতিরই একটি নিদর্শন।
স্বদেশীদের সঙ্গে ঈদ উদযাপন এবং পুনর্মিলনী যেন পরিণত হয় চীনের বুকে এক টুকরো বাংলাদেশ। এই ঈদ আনন্দ বহুগুন বেড়ে যায় চীনা সহপাঠী ও শিক্ষকদের অংশগ্রহণে।
--------------------------------------------------------------------------
চীনের মুসলিমদের ঈদ উদযাপন
চীন দেশে ৫৬টি জাতি। তার মধ্যে ১০টি জাতির মানুষ ইসলাম ধর্ম অনুসরণ করেন। এই জাতিগুলো হলো হুই, উইগুর, কাজাখ, উজবেক, তাজিক, তাতার, খালখাস, সালার, তুংসিয়াং এবং বায়োয়ান।
ঈদের নামাজ আদায় করছেন চীনের মুসলমানরা
চীনা ভাষায় ঈদকে বলা হয় খাই জাই চিয়ে বা উপবাস ভাঙার দিন। আবার এটিকে হুই মুসলিমরা ‘তা আরদে’ নামেও অভিহিত করেন। নিংসিয়াতে এই উত্সবকে ‘সিয়াও আরদে’ নামেও ডাকা হয়।
বিশ্ব মুসলিম সম্প্রদায়ের সঙ্গে তাল মিলিয়ে চীনের মুসলিমরা রমজান মাসে রোজা পালন করেন। ঈদ তাদের অন্যতম প্রধান উত্সব। তারা দুটি ঈদ এবং মিলাদুন্নবী বেশ ধুমধামের সঙ্গে উদযাপন করেন। ঈদের কয়েকদিন আগে তারা ঘরবাড়ি পরিষ্কার করার কাজ করেন। তারা হিজরি ক্যালেন্ডার অনুসরণ করেই ঈদ পালন করেন। ঈদের আগে যার যার হোম টাউনে ফিরে আসা সাধারণ রীতি। যারা ভিন্ন শহরে কাজ করেন তারাও ঈদে বাড়ি ফিরে আসেন।
ঈদের দিন সকালে গোসল সেরে নতুন পোশাক বা পরিচ্ছন্ন সুন্দর পোশাক পরে দলে দলে মসজিদের দিকে রওনা হন সকলে। নামাজের আগে তারা ফেতরা দান করেন। বিভিন্ন জাতির ঈদ উদযাপনে কিছুটা ভিন্নতা রয়েছে। যেমন অনেক জাতির তরুণ তরুণীরা ঈদের দিন বিয়ের অনুষ্ঠানের আয়োজন করেন। এতে উৎসবের আনন্দ আরও বৃদ্ধি পায়।
বিভিন্ন জাতির মানুষ তাদের ঐতিহ্যবাহী পোশাক পরেন। যেমন তাজিকদের কুর্তি ও ফ্রক। হুইদের টুপি এবং দীর্ঘ কামিজ।
ঈদের নামাজে ইমামের খুতবা সবাই মনোযোগ দিয়ে শোনে। নামাজের পর প্রতিবেশি ও আত্মীয় স্বজনের বাড়িতে যাওয়া আসা ও ঈদের আনন্দ চলে সারাদিন। সিনচিয়াংয়ে ঈদের নামাজের পর থাকে সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানের আয়োজন। সেখানে ঐতিহ্যবাহী সংগীত ও নাচ পরিবেশিত হয়।
ঈদের দিনে বিশেষ খাবারের আয়োজন থাকে। বিশেষ খাবারের মধ্যে কাবাব, রুটি, ফল এবং মিষ্টি জাতীয় খাবার পরিবেশিত হয়।
--------------------------------------------------------------------------
অন্তরঙ্গ আলাপন: গল্প বলাটাকে আমি শিল্পমাধ্যম হিসেবে নিয়েছি-তামান্না তিথি
তামান্না তিথি
আমার অভিনয় জীবনটা না হলেও আমি বাঁচতে পারবো, কিন্তু বাচিক জীবনটা না হলে বেঁচে থাকা কষ্টকর হবে। গল্প বলাটাকে আমি শিল্পমাধ্যম হিসেবে নিয়েছি। এ নিয়ে আমি এক ধরনের আন্দোলনও করছি- যাতে আমাদের বাংলা সাহিত্যের গল্পগুলো সবার মনে স্থান পায়, শিশুদের আকৃষ্ট করে, আর গল্পগুলো হারিয়ে না যায়।
চীন আন্তর্জাতিক বেতারের সঙ্গে একান্ত সাক্ষাত্কারে এভাবে নিজের গল্প-কথক হয়ে ওঠা্র গল্প বললেন বাচিকশিল্পী তামান্না তিথি।
---------------------------------------------------------------------------
প্রিয় বন্ধুরা, আপনাদের মূল্যবান পরামর্শ আমাদের সমৃদ্ধ করবে। চীন আন্তর্জাতিক বেতার-সিআরই বাংলা’র ফেসবুক পাতা facebook.com/cmgbangla আপনার মন্তব্য করতে পারেন। সিএমজি বাংলা’র ফেসবুক পাতা facebook.com/cmgbangla এবং ইউটিউব লিঙ্ক youtube.com/cmgbangla তে গিয়েও আমাদের অনুষ্ঠান সম্পর্ক জানাতে পারেন আপনার মূল্যায়ন।
পরবর্তী অনুষ্ঠানে আমরা বাংলাদেশ-চীনের সংস্কৃতিক অঙ্গনের আরো কিছু খবর এবং গুণিজনের অন্তরঙ্গ আলাপন নিয়ে হাজির হবো আপনাদের সামনে। সে পর্যন্ত ভালো থাকুন।
প্রতিবেদন: তানজিদ বসুনিয়া ও শান্তা মারিয়া
ছবি ও অডিও সম্পাদনা: তানজিদ বসুনিয়া
সাক্ষাত্কার গ্রহণ, গ্রন্থনা ও উপস্থাপনা: মাহমুদ হাশিম