বন্ধুপ্রতিম দেশগুলোর সঙ্গে সহযোগিতার সম্পর্ক আরও জোরদার করবে ইরান
2021-05-13 14:14:18

বন্ধুপ্রতিম দেশগুলোর সঙ্গে সহযোগিতার সম্পর্ক আরও জোরদার করবে ইরান_fororder___172.100.100.3_temp_9500033_1_9500033_1_1_209167de-013e-479f-8640-6497cdbc6a47

মে ১৩: গতকাল (বুধবার) চায়না মিডিয়া গ্রুপ (সিএমজি)-র সাংবাদিক ইরানের সাবেক প্রেসিডেন্ট মাহমুদ আহমদী-নেজাদের সাক্ষাত্কার নিয়েছেন। নেজাদ ইরান-যযুক্তরাষ্ট্র সম্পর্ক, আঞ্চলিক পরিস্থিতি ও চীন-ইরান সহযোগিতাসহ বিভিন্ন বিষয় নিয়ে মন্তব্য করেন। নেজাদ বলেন, এতদঞ্চলের দেশগুলোকে সহযোগিতা চালিয়ে উন্নয়ন করতে ও যৌথভাবে বিদেশি সামরিক শক্তি প্রতিরোধ করতে হবে। ইরানকে চীনসহ বিভিন্ন বন্ধুপ্রতিম দেশের সঙ্গে সহযোগিতা চালিয়ে উন্নয়ন ত্বরান্বিত করতে হবে।

সম্প্রতি ইরান ও যুক্তরাষ্ট্রের মধ্যে সামরিক সংঘাত সংঘটিত হয়েছে। আঞ্চলিক উত্তেজনাও ক্রমশ বাড়ছে। ইরানের স্থানীয় গণমাধ্যমের খবরে বলা হয়েছে, গত রোববার ইরানের বিপ্লবী রক্ষী বাহিনীর নৌবাহিনীর দহলদার জাহাজ হরমুজ প্রণালীতে টহল দেওয়ার সময় সাতটি মার্কিন জাহাজ ইরানি জাহাজকে লক্ষ্য করে উস্কানিমূলক ফাঁকা গুলি চালায়। বিশ্লেষকরা মনে করেন, মার্কিন জাহাজগুলোর এ ধরণের তত্পরতার ফলে স্থানীয় পরিস্থিতির আরও অবনতি হয়েছে। নেজাদ বলেন, যুক্তরাষ্ট্র-ইরান সংঘাত এ অঞ্চল, এমনকি অন্যান্য দেশের জন্যও অকল্যাণকর। যুদ্ধ কোনো দেশের জন্য অনুকূল হতে পারে না। দু’দেশ সংলাপের মাধ্যমে মতভেদ সমাধান করবে বলে তিনি আশা প্রকাশ করেন। তিনি বলেন,

“দু’দেশের মধ্যে সংঘাত কারও জন্য অনুকূল হবে না। আমার মনে হয়, যে মানুষের বিবেক আছে, সে যুদ্ধকে স্বাগত জানাবে না। শুধু যে ইরান ও যুক্তরাষ্ট্র এতে ক্ষতিগ্রস্ত হবে, তা নয়, বরং অন্যান্য দেশের জন্যও এতে কোনো লাভ নেই। আমি মনে করি, দু’দেশের উচিত সংলাপের মাধ্যমে মতভেদ দূর করা।”

এদিকে ইরানের পররাষ্ট্রমন্ত্রী মোহাম্মদ জাওয়াদ জারিফ গতকাল (বুধবার) বলেছেন, ইরান সৌদি আরবের সঙ্গে সম্পর্ক উন্নয়নের প্রস্তুতি নিয়েছে। এ সম্পর্কে নেজাদ বলেন, ইরান ও সৌদি আরব এতদঞ্চলের বড় দেশ। দু’দেশের মধ্যে উত্তেজনাময় অবস্থা আঞ্চলিক উন্নয়নের জন্য ক্ষতিকর। তিনি মনে করেন, বিদেশি সামরিক শক্তি হলো মধ্যপ্রাচ্যের অস্থিতিশীলতার প্রধান কারণ। ইরান সৌদি আরবের সঙ্গে সম্পর্ক উন্নয়ন করলে আঞ্চলিক পরিবেশ উন্নত হবে। এটি বিদেশি সামরিক শক্তিকে এ অঞ্চল থেকে বহিষ্কার করার ক্ষেত্রে ইতিবাচক ভূমিকা পালন করবে।

তিনি আরও বলেন, যদি ইরান ও সৌদি আরব যৌথভাবে বন্ধুত্বপূর্ণ পরিবেশ গড়ে তোলে, তবে এ অঞ্চল এমনকি অন্যান্য দেশের জন্যও তা হবে অনুকূল।

ইরানের বিরুদ্ধে যুক্তরাষ্ট্র একতরফাভাবে অবৈধ নিষেধাজ্ঞা আরোপ করে রেখেছে। এ বিষয়ে নেজাদ বলেন, সাম্প্রতিক বছরগুলোয় ইরানের অর্থনীতি বিরাট চাপে পড়েছে। ইরানকে  অর্থনীতির উন্নয়নের জন্য স্থায়ী পরিকল্পনা প্রণয়ন করতে হবে এবং অব্যাহতভাবে বন্ধুপ্রতিম দেশগুলোর সঙ্গে আর্থ-বাণিজ্যিক যোগাযোগ জোরদার করতে হবে।

নেজাদ মনে করেন, ইরানের কূটনীতিতে দ্রুত পরিবর্তন আনা প্রয়োজন। বন্ধুপ্রতিম দেশগুলোর সঙ্গে সহযোগিতা জোরদার করতে হবে তেহরানকে।  

চীন-ইরান সম্পর্ক প্রসঙ্গে নেজাদ বলেন, দু’দেশের মধ্যে সম্পর্ক সুদীর্ঘকালের। এ সম্পর্ক আরও উন্নয়নের সুযোগ আছে। চীনের সঙ্গে পারস্পরিক কল্যাণকর সহযোগিতা উন্নয়ন করতে ইচ্ছুক ইরান।

তিনি বলেন, দু’দেশের সংস্কৃতি ও আর্থ-বাণিজ্যিক ক্ষেত্রের সহযোগিতা সুষ্ঠুভাবে চলছে। দু’দেশের মধ্যে কোনো সংঘর্ষ বা বিরোধ নেই। দু’দেশ পারস্পরিক সহায়তার ভিত্তিতে আরও বেশি সহযোগিতার সুযোগ সৃষ্টি করতে পারে। (ছাই/আলিম/ওয়াং হাইমান)