চীনের আন্তর্জাতিক ভোগ্যপণ্য মেলা কেন হাইনানে অনুষ্ঠিত হলো
2021-05-11 15:34:08

চলতি মাসের ৭ থেকে ১০ তারিখ পর্যন্ত ‘প্রথম চীন আন্তর্জাতিক ভোগ্যপণ্য মেলা’হাইনান প্রদেশে অনুষ্ঠিত হয়েছে। এটি বিশ্বের একটি উচ্চমানের ভোক্তা পণ্যের  মিলন মেলায় পরিণত হয়েছিল।

 

এতে দেশি-বিদেশি আড়াই হাজারেরও বেশি ব্র্যান্ডের পণ্য একসাথে প্রদর্শিত হয়েছে। সত্তরটিরও বেশি প্রক্রিয়ায় শতাধিক নতুন পণ্য দেখানো হয়। ফ্যাশন, লাইফ, সৌন্দর্য সরবরাহ, খাদ্য ও স্বাস্থ্য পণ্য, গহনা, হীরা ইত্যাদি পণ্যগুলো ছিল তাদের অন্যতম। চীনের বিভিন্ন প্রদেশও অভ্যন্তরীণ পণ্য দেখিয়ে দেশি-বিদেশি ক্রেতা ও ব্যবসায়িদের আকৃষ্ট করেছে।

চীনের আন্তর্জাতিক ভোগ্যপণ্য মেলা কেন হাইনানে অনুষ্ঠিত হলো_fororder_src=http___nimg.ws.126.net__url=http%3A%2F%2Fdingyue.ws.126.net%2F2021%2F0510%2F854329dfj00qsvjpc0034d200u000k0g00it00cj&thumbnail=650x2147483647&quality=80&type=jpg&refer=http___nimg.ws.126

বোয়াও এশীয় ফোরামের পর ভোগ্যপণ্য মেলা-চীনের প্রথম ভোগ্যপণ্য প্রতিপাদ্য হিসেবে জাতীয় পর্যায়ের মেলা হাইনানে অনুষ্ঠিত হয়। তার কারণ হল:

 

“ভোগ্যপণ্য মেলা হাইনানে অনুষ্ঠিত হয়ে অবাধ বাণিজ্যিক বন্দরের নীতিগত সুযোগ-সুবিধা কাজে লাগিয়ে বিশ্বকে আকৃষ্ট করতে চায়। কয়েক বছরের অনুশীলনের মাধ্যমে আন্তর্জাতিক প্রথম শ্রেণীর ভোগ্যপণ্য মেলা গড়ে তোলার জন্য একে সেখানে আয়োজন করা হয়।” সাক্ষাত্কার দেয়ার সময় চীনের উপ-বাণিজ্য মন্ত্রী ওয়াং বিং নান এসব কথা বলেন।

 

২০২০ সালের ১ জুন ‘হাইনান অবাধ বাণিজ্যিক বন্দর নির্মাণের সাধারণ পরিকল্পনা’ আনুষ্ঠানিকভাবে প্রকাশিত হয়। এতে স্পষ্টভাবে হাইনান আন্তর্জাতিক পর্যটন ভোগ্যপণ্য কেন্দ্রের অবস্থান নিশ্চিত করা হয় এবং চীনের আন্তর্জাতিক ভোগ্যপণ্য মেলা আয়োজনের কথা বলা হয়।

চীনের আন্তর্জাতিক ভোগ্যপণ্য মেলা কেন হাইনানে অনুষ্ঠিত হলো_fororder_src=http___hnrb.hinews.cn_resfile_2021-05-11_001_2496116_hnrbtp3_1620657232824_s&refer=http___hnrb.hinews

হাইনান প্রদেশের স্থায়ী ডেপুটি-গভর্নর শেন তান ইয়াং বলেন, “ভোগ্যপণ্য মেলা” আয়োজন করতে কেন্দ্রীয় সরকারের পরিকল্পনা বাস্তবায়নের একটি গুরুত্বপূর্ণ কার্যক্রম। এটি অভ্যন্তরীণ বাজার সরবরাহ সুবিন্যস্ত করা, নতুন উন্মুক্ত স্থান সৃষ্টি করা, এবং হাইনান অবাধ বাণিজ্যিক বন্দরের ‌আন্তর্জাতিক প্রভাব বাড়ানোর একটি গুরুত্বপূর্ণ পদক্ষেপ।”

 

হাইনানে ভোগ্যপণ্য মেলা আয়োজন করার মধ্য দিয়ে বিশ্ব ভোগ্যপণ্য শিল্পপ্রতিষ্ঠানের জন্য চীনা বাজারে প্রবেশ করার সেতু প্রতিষ্ঠিত হয়।

 

হাইনান আন্তর্জাতিক অর্থনীতি উন্নয়ন ব্যুরোর প্রধান হান শেংচিয়ানের মতে, হাইনান অবাধ বাণিজ্যিক বন্দরের বিশেষ শুল্ক-মুক্ত নীতি আন্তর্জাতিক ভোগ্যপণ্য চীনা বাজারে প্রবেশে সহায়ক। তাই আন্তর্জাতিক প্রদর্শনীতে অংশগ্রহণকারী পণ্যের মূল্য হ্রাস হবে এবং আরো বেশি আন্তর্জাতিক উচ্চমানের পণ্য চীনা বাজারে প্রবেশে উতসাহিত হবে।

চীনের আন্তর্জাতিক ভোগ্যপণ্য মেলা কেন হাইনানে অনুষ্ঠিত হলো_fororder_src=http___n.sinaimg.cn_sinakd2021510s_399_w768h431_20210510_10a6-kpuunne1051889&refer=http___n.sinaimg

এ পর্যন্ত হাইনানের উপকূলীয় শুল্কমুক্ত নীতি কার্যকর হয়েছে ১০ বছর। এ সময়ে প্রায় একশ’ বিলিয়ন ইউয়ানের শুল্ক-মুক্ত পণ্য বিক্রি হয়েছে।

 

আন্তর্জাতিক পর্যটন ভোগ্যপণ্য কেন্দ্রের নির্মাণকে সমর্থন দেয়ার জন্য ২০২০ সালের ১ জুলাই কেন্দ্রীয় সরকার হাইনান’কে আরো খোলা ও সুবিধাজনক শুল্কমুক্ত নীতি গ্রহণে নির্দেশনা দেয়। ফলে হাইনান শুল্কমুক্ত বিপণির মানোন্নয়ন ত্বরান্বিত করে সুশৃঙ্খলভাবে আরো বেশি শুল্কমুক্ত প্রতিদ্বন্দ্বীতাপূর্ণ বাজার তৈরি করেছে।

চীনের আন্তর্জাতিক ভোগ্যপণ্য মেলা কেন হাইনানে অনুষ্ঠিত হলো_fororder_src=http___www.hi.chinanews.com_hnnew_2021-05-05_U58P16T1D579377F10DT20210505111108&refer=http___www.hi.chinanews

বর্তমানে হাইনান প্রদেশের ৬টি শুল্কমুক্ত ব্যবস্থাপক ও ১০টি শুল্কমুক্ত বিপণি বিতান আছে। এর মধ্যে একটি হচ্ছে বিশ্বে বৃহত্তম একক শুল্কমুক্ত বিপণি বিতান। প্রতি বছর অফশোর পর্যটকের শুল্কমুক্ত কেনাকাটার পরিমাণ ২০১১ সালে শুরু দিকের ৫ হাজার ইউয়ান থেকে ১ লাখ ইউয়ান পর্যন্ত উন্নীত হয়েছে। শুল্কমুক্ত পণ্যের রকমও ৪৫টি পর্যন্ত সম্প্রসারিত হয়েছে।

 

“অবিলম্বে হাইনান দ্বীপের অধিবাসীদের নিত্য-ব্যবহার্য্য ভোগ্যপণ্য শুল্কমুক্ত নীতির আওতায় আনার পাশাপাশি সারা হাইনান দ্বীপে বৈচিত্র্যময় শুল্কমুক্ত ব্যবস্থাপনা পরিবেশ প্রতিষ্ঠিত হবে। হান শেংচিয়ান বিশ্বাস করেন, ভবিষ্যতে আরো বেশি আন্তর্জাতিক প্রতিষ্ঠান ভোগ্যপণ্য মেলার প্ল্যাটফর্ম কাজে লাগিয়ে তাদের বুটিক পণ্য হাইনান শুল্কমুক্ত বিপণি কেন্দ্রগুলোতে নিয়ে আসবে, যাতে হাইনান বৈদেশিক উচ্চমানের ভোগ্যপণ্যে চীনে প্রবেশ প্রথম পছন্দে পরিণত হবে।

চীনের আন্তর্জাতিক ভোগ্যপণ্য মেলা কেন হাইনানে অনুষ্ঠিত হলো_fororder_7c863108ca6042c99e3b69982dd8ff0e

হাইনানে ভোগ্যপণ্য মেলা অনুষ্ঠিত হয়ে বিশ্ব এবং অভ্যন্তরীণ ভোগ্যপণ্য বুটিকের বিশ্ব বাজারে প্রবেশের রাজপথ প্রতিষ্ঠিত হয়—

 

“আন্তর্জাতিক শীর্ষ পর্যায়ের ব্র্যান্ডের সাথে যোগাযোগের পর আমরা আবিষ্কার করেছি যে, এসব ব্র্যান্ড শুধু চীনা বাজারকে লক্ষ্য হিসেবে দেখে, তা নয়, বরং তারা হাইনান অবাধ বাণিজ্যিক বন্দরের সুযোগও কাজে লাগাতে চায়।” হান শেংচিয়ান বলেন, বর্তমানে মহামারীর পরিস্থিতিতে আন্তর্জাতিক ব্র্যান্ড চীনা বাজার তাদের উন্নয়নের জন্য অনুকূল বলে আশা করছে। তাদের মতে, হাইনান অবাধ বাণিজ্যিক বন্দর বিশ্বায়নের উন্নয়নের আদর্শ স্থান।

 

২০২৫ সালে হাইনান অবাধ বাণিজ্যিক বন্দর শুল্কমুক্ত ও পর্যটন খুচরা-বিক্রয় শিল্পের স্বর্গ হবে বলে আশা করা হচ্ছে। একই স্থানে “সারা পৃথীবির পণ্য কেনা-বেচা” বাস্তবায়িত হবে। এটা হাইনান আন্তর্জাতিক পর্যটন ভোগ্যপণ্য কেন্দ্র নির্মাণের একটি গুরুত্বপূর্ণ কাজ।

চীনের আন্তর্জাতিক ভোগ্যপণ্য মেলা কেন হাইনানে অনুষ্ঠিত হলো_fororder_3dd0350934834e059c580faa0971c5d2

হান শেংচিয়ান আরো বলেন, “প্রদর্শনীতে অংশগ্রহণকারী সকল আন্তর্জাতিক ব্র্যান্ড সেই মূহুর্তের জন্য প্রস্তুতি নিয়েছে। প্রথম ভোগ্যপণ্য মেলায় অংশ নেওয়া তাদের চীনা বাজারে প্রবেশ করার দৃঢ়প্রতিজ্ঞা ও প্রত্যয় প্রতিফলিত হয়েছে তা নয়, বরং হাইনান অবাধ বাণিজ্যিক বন্দরের ভবিষ্যত আঁকড়ে ধরার জন্য তারা প্রস্তুতি নিচ্ছে।”

 

মেলা শুরু হবার আগে, হাইখৌ মেই লান বিমানবন্দরে মালবাহী ফ্লাইটের সংখ্যা অব্যাহতভাবে বেড়েছে, এবং বিশ্বের টপ পর্যায়ের পণ্য ধারাবাহিকভাবে হাইনানে পৌঁছায়। ভোগ্যপণ্য মেলার প্রদর্শিত পণ্য উচ্চ দক্ষ ও নিরাপদে কাস্টমস ক্লিয়ারেন্স সম্পন্ন করার জন্য হাইখৌ শুল্ক বিভাগ ও মেই লান বিমানবন্দরসহ বিভিন্ন ইউনিট ঘনিষ্ঠভাবে সমন্বয় করেছে। এক দিকে ২৪ ঘন্টা কাস্টমস ক্লিয়ারেন্স সম্পন্ন কার্যকর করে “সবুজ পথ” চালু করার পাশাপাশি ঘোষণা প্রক্রিয়া সহজতর করেছে। অন্য দিকে বিমানবন্দরের মহামারী প্রতিরোধ গ্রুপ প্রদর্শিত পণ্যের প্রতি কেবিনের ভেতর ও বাহির দুবার পুরোপুরি নির্বীজন করে থাকে।

চীনের আন্তর্জাতিক ভোগ্যপণ্য মেলা কেন হাইনানে অনুষ্ঠিত হলো_fororder_befd8015f5f84de39dfb784e6a6f6500

মহামারী প্রতিরোধ কাজ পুরোপুরি প্রস্তুত

 

হাইখৌ শহরের স্বাস্থ্য কমিশনের দায়িত্বশীল ব্যক্তি মো শাও সিয়োং বলেছেন, গত বছরের শেষ নাগাদে হাইখৌ শহর কয়েক হাজার মানুষ অংশগ্রহণে নববর্ষের সঙ্গীতানুষ্ঠানের আয়োজন করে। তখন তাদের বৃহদাকার অনুষ্ঠানের মহামারী প্রতিরোধ অভিজ্ঞতা অর্জিত হয়। এবারের ভোগ্যপণ্য মেলায় হাইখৌ শহর অব্যাহতভাবে “প্রাথমিক পরিচয়”তে বিগ ডাটার ভূমিকা পালন করেছে, এবং কঠোরভাবে বন্দর ও বিমানবন্দসহ বিভিন্ন হাইনান দ্বীপের পথ প্রতিরোধ করেছে।

 

প্রেমা/এনাম