যুক্তরাষ্ট্রের করোনাভাইরাসের টিকার মেধাস্বত্ত্বের দাবি ছেড়ে দেওয়ার চেয়ে গুরুত্বপূর্ণ হলো টিকা রপ্তানি শুরু করা
2021-05-10 17:00:55

যুক্তরাষ্ট্র করোনাভাইরাসের টিকা মজুদ করার পাশাপাশি টিকা ও টিকা উত্পাদনের কাঁচামালের রপ্তানি নিষিদ্ধ করার কারণে বিভিন্ন দেশ যুক্তরাষ্ট্রে সমালোচনা করেছে। বিপুল চাপের মুখে করোনাভাইরাসের টিকার মেধাস্বত্ত্ব ছেড়ে দেওয়ার বিষয়ে বিশ্ব বাণিজ্য সংস্থার উদ্যোগের প্রতি সমর্থন জানিয়েছে যুক্তরাষ্ট্র।

তবে যুক্তরাষ্ট্রের এই সিদ্ধান্ত নিয়েও আন্তর্জাতিক সমাজ সন্দেহ প্রকাশ করেছে। বিভিন্ন দেশ মনে করছে, টিকার মেধাস্বত্ত্ব ছাড়ার তুলনায় টিকা রপ্তানির ওপর নিষেধাজ্ঞা তুলে নেওয়া আরো ভালো ও বেশি কার্যকর।

বিস্তারিত দেখুন আজকের টপিক ভিডিওতে।

 

এই সম্বন্ধে ইইউর কর্মকর্তা বলেন, টিকার মেধাস্বত্ত্ব ছাড়া আসলে টিকার উত্পাদন বাড়ানো যায় না। মেধাস্বত্ত্বের তুলনায় বর্তমানে কিছু দেশের টিকা মজুদ করার আচরণ আসলে বিশ্বে টিকা বিতরণের সবচেয়ে বড় প্রতিবন্ধকতা।

 

ইউরোপিয়ান কাউন্সিলের চেয়ারম্যান চার্লস মিশেল বলেছেন, আমরা এর আগে টিকার রপ্তানি সম্ভব করেছি, আমরা অন্যান্য দেশকে টিকা রপ্তানিকে দ্রুততর করতে উত্সাহও দেই। টিকার মেধাস্বত্ত্ব কিন্তু বর্তমানে বড় ভূমিকা রাখতে পারে না।

 

তাঁর এই মন্তব্যের প্রতি সমর্থন দিয়েছেন ইইউর কিছু দেশের নেতা তাঁরা মনে করেন, বর্তমানে করোনাভাইরাসের টিকার মেধাস্বত্ত্বের বিষয় নিয়ে আলোচনা গুরুত্বপূর্ণ নয়; সবচেয়ে জরুরি বিষয় হল টিকা রপ্তানির অনুমোদন দেওয়া।

 

ফ্রান্সের প্রেসিডেন্ট ইমানুয়েল ম্যাকখোঁ বলেন, বর্তমানে সবচেয়ে জরুরি ব্যাপার হল টিকার উত্পাদন বাড়ানো। প্রথমত, টিকা উন্মুক্ত করা উচিত। ফ্রান্সের উত্পাদিত টিকার মধ্যে ৫০ শতাংশ রপ্তানি করা হয়। তবে যুক্তরাষ্ট্র ও ব্রিটেনের টিকা শতভাগ অভ্যন্তরীণ বাজারে ব্যবহার করা হচ্ছে। তাই প্রথমে ব্রিটেন ও যুক্তরাষ্ট্রের উচিত রপ্তানি নিষেধাজ্ঞা তুলে নেওয়া।

জার্মান চ্যান্সেলর অ্যাঙ্গেলা মার্কেল বলেন, আরো বেশি মার্কিনী টিকাগ্রহণ করেছে। আমরা আশা করি যুক্তরাষ্ট্র টিকার কাঁচামাল ও টিকা রপ্তানির দরজা খুলে দেবে।

রাজনৈতিক কারণের পাশাপাশি আরো অনেক বিশেষজ্ঞ মনে করছেন, টিকা উত্পাদনে বেশ কিছু প্রযুক্তিগত বিষয় রয়েছে। মেধাস্বত্ত্বের দাবি ছাড়লেও একই গুণগতমানের টিকা উত্পাদন নিশ্চিত করা যায় না। খারাপ গুণগতমানের টিকা বাজারে প্রবেশের ফলে টিকার কাঁচামালের অভাব আরও বাড়বে। সরবরাহ চেইনও বিশৃঙ্খল হয়ে পড়বে।

 

সেই সঙ্গে টিকার মেধাস্বত্ত্ব ওষুধ উত্পাদনকারী প্রতিষ্ঠানের প্রতিদ্বন্দ্বিতা শক্তিকে দুর্বল করবে। ফাইজার ও মডার্নাসহ বড় বড় প্রতিষ্ঠানগুলো যুক্তরাষ্ট্রের এই সিদ্ধান্তের বিরোধিতা করেছে। এতে প্রতিষ্ঠানের ভবিষ্যত উদ্ভাবন হুমকির মুখে পড়েছে এবং তা টিকা উত্পাদনে কোনো সহায়তা করতে পারবে না।