আজকের অনুষ্ঠানে চীনের একজন জনপ্রিয় গায়িকার সঙ্গে আপনাদেরকে পরিচয় করিয়ে দেবো; তার নাম হাং থিয়ান ছি। তিনি চীনের জাতীয় প্রথম শ্রেণির কণ্ঠশিল্পী ও চীনা সংগীত মহলের গুরুত্বপূর্ণ প্রতিনিধি, তার কণ্ঠ খুব শক্তিশালী ও অনন্য। দীর্ঘ ৩৫ বছর ধরে তিনি গান প্রকাশ করে আসছেন। তার গানগুলো বেশ জনপ্রিয়। বন্ধুরা, অনুষ্ঠানের শুরুতে একসঙ্গে শুনবো হাং থিয়ান ছি’র একটি সুন্দর গান ‘আমার প্রিয় জন্মভূমি’। গান ১
হাং থিয়ান ছি ১৯৬৬ সালে চীনের শাংহাই শহরে জন্মগ্রহণ করেন। এরপর তিনি বেইজিংয়ে বড় হন। ছোটবেলাতেই তাঁর সংগীত প্রতিভার খোঁজ পাওয়া যায়। মাত্র ৭ বছর বয়সে তিনি বেইজিংয়ে শিশুদের গান প্রতিযোগিতায় চ্যাম্পিয়ন হন। ৯ বছর বয়সে তিনি চীনের ‘শ্রেষ্ঠ যুবদলে’ ভর্তি হন। ১৯৭৯ সালে চীনের জাতীয় গেমসের উদ্বোধনী অনুষ্ঠানেও তিনি পারফরম করেন। পরে হাং থিয়ান ছি বেইজিং নরমাল বিশ্ববিদ্যালয়ে সংগীত বিভাগে ভর্তি হন এবং গান গাওয়া ও সুর তৈরি করা শিখেন। গান ২
১৯৮৬ সালে হাং থিয়ান ছি তার প্রথম অ্যালবাম ‘সুন্দর গ্রীষ্মকাল’ প্রকাশ করেন। ১৯৮৮ সালে তিনি জাতীয় তরুণ গায়ক প্রতিযোগিতায় অংশ নেন। এটি চীনের সর্বাধিক পেশাদার ও প্রভাবশালী প্রতিযোগিতা। এতে হাং থিয়ান ছি চমত্কার পরিবেশনার জন্য রানার্স-আপ হন। প্রতিযোগিতায় তার গাওয়া ‘পীত-মাটির মালভূমি’ বিচারকদের অনেক প্রশংসা পায় ও বেশ জনপ্রিয় হয়েছিল। এই গানে চীনের উত্তর-পশ্চিমাঞ্চলের আকর্ষণীয় লোকসংগীত ও সংস্কৃতি ফুটে উঠেছে। হাং থিয়ান ছি’র এই গানের প্রভাবে সে সময় চীনা সংগীত মহলে উত্তর-পশ্চিমাঞ্চলীয় লোকসংগীতের প্রবণতা শুরু হয়। তিনি সেই প্রতিযোগিতার জন্য চীনের প্রথম শ্রেণীর কণ্ঠশিল্পীর মর্যাদা পান। বন্ধুরা, এখন হাং থিয়ান ছি’র জনপ্রিয় সেই গান- ‘পীত-মাটির মালভূমি’ শুনুন।গান ৩
১৯৮৯ সালে হাং থিয়ান ছি চীনের সবচেয়ে জনপ্রিয় ও প্রভাবশালী অনুষ্ঠান ‘বসন্ত উত্সব গালায়’ অংশগ্রহণ করেন। অনুষ্ঠানে তিনি ‘পাহাড়ের প্রতি অনুভূতি’ গানটি পরিবেশন করেন। তার পারফরম্যান্স মানুষের প্রশংসা পায়। পরে তিনি আরও অনেকবার ‘বসন্ত উত্সব গালায়’ পারফরম করেছিলেন। ১৯৯০ সালে হাং থিয়ান ছি এশিয়া গেমসের উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে পারফরম করেন, তার গান ‘কালো চুল উড়ে যায়’ এশিয়া গেমসের সবচেয়ে জনপ্রিয় গানে পরিণত হয়। বন্ধুরা, এখন হাং থিয়ান ছি’র গান ‘কালো চুল উড়ে যায়’ শুনুন।গান ৪
হাং থিয়ান ছির গানে সবসময় চীনা সংস্কৃতির অনেক বৈশিষ্ট্যময় উপাদান দেখা যায়। যেমন- বিভিন্ন স্থানের লোকসংগীত, সংখ্যালঘু জাতির বাদ্যযন্ত্র ও বেইজিং অপেরা। বন্ধুরা, পরের গানের নাম ‘মুখের মেকআপ’। আপনারা হয়তো জানেন, বেইজিং অপেরায় বিভিন্ন ধরনের চরিত্রের জন্য বিভিন্ন রকমের মেকআপ ব্যবহার করা হয়। সাধারণত একজন অভিনেতার মুখের মেকআপ দেখে তার চরিত্রের বৈশিষ্ট্য বোঝা যায়। হাং থিয়ান ছির এই গানে বেইজিং অপেরার মুখের মেকআপের গল্প বলা হয়েছে। বন্ধুরা, এখন শুনুন এই সুন্দর গান ‘মুখের মেকআপ’।গান ৫
বেইজিংয়ে বড় হওয়ার কারণে পুরানো বেইজিং শহরের জন্য বিশেষ অনুভূতি লালন করেন হাং থিয়ান ছি। আর এসব অনুভূতি তিনি গানের মাধ্যমে প্রকাশ করেন। পরের গানের নাম ‘ছিয়ান মেনের বড় বাটির চা’। ছিয়ান মেন হল পুরানো বেইজিং শহরের বিখ্যাত ও জনপ্রিয় একটি বাণিজ্যিক সড়ক। সেখানে বেইজিংয়ের স্থানীয় বৈশিষ্ট্যময় নানা খাবার বিক্রি করা হয়। বড় বাটির চা স্থানীয় মানুষদের খুব পছন্দের পানীয়। এই চা এক প্রজন্মের মানুষের স্মৃতি। বন্ধুরা, এখন হাং থিয়ান ছি’র এই সুন্দর গান ‘ছিয়ান মেনের বড় বাটির চা’ শুনবো।গান ৬
বন্ধুরা, গান শুনতে শুনতে আজকের অনুষ্ঠানের শেষ পর্যায়ে চলে এসেছি। এখন আপনাদেরকে হাং থিয়ান ছি’র আরেকটি জনপ্রিয় ও ক্লাসিক গান ‘দীর্ঘ পথ’ শোনাবো। আশা করি, আপনারা তার গানগুলো পছন্দ করবেন।গান ৭
বন্ধুরা, আজকের অনুষ্ঠান তাহলে এখানেই শেষ করছি। আশা করি আমাদের অনুষ্ঠানে প্রচারিত গানগুলো আপনাদের ভালো লেগেছে। এখন বিদায় নিচ্ছি। সবাই ভালো থাকুন, সুন্দর থাকুন ও সুস্থ থাকুন। আবার কথা হবে।