চীন একটি মূল্যবান মডেল: বাংলাদেশি শিক্ষক ডঃ মোস্তাক আহমেদ গালিবের পর্যবেক্ষণ
2021-05-04 17:20:32

চীন একটি মূল্যবান মডেল: বাংলাদেশি শিক্ষক ডঃ মোস্তাক আহমেদ গালিবের পর্যবেক্ষণ_fororder___172.100.100.3_temp_9500031_1_9500031_1_1_a528ccc0-92b2-425d-82ed-9adc4e121302

মে ৪: সাম্প্রতিক বছরগুলোয় ক্রমবর্ধমান হারে বিদেশি তরুণ-তরুণীরা চীনে এসে কাজ করছেন, পড়াশোনা করছেন। তাঁরা চীনা তরুণ-তরুণীদের মতোই পরিশ্রম করছেন। আজ ৪ঠা মে চীনের যুব দিবস। এ উপলক্ষ্যে সিএমজি’র সাংবাদিক চীনে কর্মরত বাংলাদেশি শিক্ষক ডক্টর মোস্তাক আহমেদ গালিবের সাক্ষাত্কার নিয়েছেন। আজকের সংবাদ পর্যালোচনায় থাকছে চীন সম্পর্কে তাঁর মূল্যায়ন নিয়ে আলোচনা।

ডক্টর গালিব ছোটবেলা থেকে লেখাপড়ায় ভালো ছিলেন। ভালো ছাত্র হিসেবেই তিনি চীনা সরকারের বৃত্তি পান ও চীনে আসেন। এরপর তিনি উহান ইউনিভার্সিটি অব টেকনোলজি’তে ভর্তি হন। তিনি উহান ইউনিভার্সিটি অব টেকনোলজি থেকে ডক্টরেট ডিগ্রী লাভ করার পর, শিক্ষক হিসেবে বিশ্ববিদ্যালয়টিতে কাজ করা শুরু করেন। তিনি চীনে বাস করছেন বিগত ২০ বছর ধরে।

গালিব মনে করেন, চীনের উন্নয়নের অভিজ্ঞতা অন্যান্য দেশের জন্য মূল্যবান। বিশেষ করে বাংলাদেশের জন্য। তিনি বলেন,

‘আমি যে জ্ঞান চীনে শিখেছি, তা বাংলাদেশ ও অন্যান্য উন্নয়নশীল দেশগুলোয় প্রচার করতে চাই। এতে চীনের গ্রামের পুনরুজ্জীবন ও দারিদ্র্যবিমোচনের অভিজ্ঞতা অন্তর্ভুক্ত আছে। দারিদ্র্য হলো উন্নয়নশীল দেশগুলোর অভিন্ন শত্রু। এখন আরেকটি শত্রু  আছে, তা কোভিড-১৯ মহামারী। চীন মহামারী প্রতিরোধে সফল হয়েছে। চীনের অভিজ্ঞতা অন্যদের জন্য মূল্যবান।’

গত বছর কোভিড-১৯ মহামারী উহানে ছড়িয়ে পড়ে। গালিব তিন বার বাংলাদেশে ফিরে যাওয়ার সুযোগ পেয়েও যাননি। তিনি সহকর্মীদের সঙ্গে মহামারী প্রতিরোধের কাজে অংশ নেন। তিনি বাংলাদেশ ও বিশ্বের কাছে চীনের মহামারী প্রতিরোধের অভিজ্ঞতা শেয়ার করেছেন।

চীন একটি মূল্যবান মডেল: বাংলাদেশি শিক্ষক ডঃ মোস্তাক আহমেদ গালিবের পর্যবেক্ষণ_fororder___172.100.100.3_temp_9500031_1_9500031_1_1_ae86033c-fabc-4e6b-9db3-4b37a0529767

গালিব দক্ষিণ এশিয়ার বিভিন্ন গণমাধ্যমে চীনের অভিজ্ঞতা শেয়ার করে প্রবন্ধ লিখেছেন। তিনি বলেন,

‘লকডাউন ও মাস্ক হলো মহামারী প্রতিরোধের শ্রেষ্ঠ উপায়। এর মাধ্যমেই মূলত চীন সফলভাবে মহামারী নিয়ন্ত্রণে রেখেছে।’ 

গালিব বর্তমানে উহান  ইউনিভার্সিটি অব টেকনোলজি’র মার্কসবাদ একাডেমির ‘মিশ্র সংস্কৃতি’ ও ‘এক অঞ্চল, এক পথ’ গবেষণাকেন্দ্রের নির্বাহী পরিচালক। তিনি ‘এক অঞ্চল, এক পথ’, নতুন বাজার ও প্রতিষ্ঠানের আন্তর্জাতিকায়নের বিষয় নিয়ে গবেষণা করেন। তাঁর দৃষ্টিতে ‘এক অঞ্চল, এক পথ’ উদ্যোগ শুধু যে সংশ্লিষ্ট দেশগুলোর আর্থ-বাণিজ্যিক যোগাযোগ ত্বরান্বিত করছে, তা নয়, বরং অন্যান্য দেশের জন্য চীনের উন্নয়নের অভিজ্ঞতা থেকে শেখার একটি প্ল্যাটফর্ম দিয়েছে। তিনি আরও বলেন,

“চীনের উন্নয়ন সম্পর্কে জানতে ও বুঝতে পড়াশোনা ও গবেষণা প্রয়োজন। ‘এক অঞ্চল, এক পথ’ একটি ভাল প্ল্যাটফর্ম। চীন একটি উন্নয়নশীল দেশ। চীন যেসব সমস্যা মোকাবিলা করেছে, অন্যান্য উন্নয়নশীল দেশগুলোরও সেসব সমস্যা আছে। উন্নয়নশীল দেশগুলো চীনের অভিজ্ঞতা থেকে শিখতে পারে।”

ডক্টর গালিব উহান শহরের ‘৪ঠা মে যুবপদক’ লাভ করেছেন। চীনা নেতা গালিবকে চীন ও বাংলাদেশের ‘মৈত্রী দূত’-এর মর্যাদা দিয়েছেন। গালিব বলেন, প্রতিটি পদক ও মর্যাদা তাঁর জন্য উত্সাহদায়ক। একজন বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক হিসেবে ভবিষ্যতে তিনি আরও কাজ করতে চান। তিনি বলেন,

“আমার মনে হয়, আমার উচিত আরও বেশি আন্তর্জাতিক প্রতিভাবান ব্যক্তি গড়ে তোলার জন্য কাজ করে যাওয়া। চীনা জাতির মহান পুনরুজ্জীবন ও ‘এক অঞ্চল, এক পথ’ উদ্যোগ মানবজাতির অভিন্ন ভাগ্যের সম্প্রদায়ের সঙ্গে সংগতিপূর্ণ। চীনা তরুণ-তরুণীদেরকে আন্তর্জাতিক অঙ্গনের প্রতিযোগিতায় সফল হতে প্রচেষ্টা অব্যাহত রাখতে হবে।” (ছাই/আলিম/স্বর্ণা)