ভারতে টিকার অভাব প্রকট, মহামারী পরিস্থিতি গুরুতর
2021-05-03 15:25:32

 

মে ৩: পয়লা মে থেকে ভারত সরকার ১৮ বছরের বেশি বয়সী সকল নাগরিককে কোভিড টিকা দেওয়ার কার্যক্রম বাস্তবায়ন শুরু করে। কিন্তু প্রথম দিনই টিকার অভাবে আগ্রহীদের অনেকে টিকা পাননি।  

ভারতে টিকার অভাব প্রকট, মহামারী পরিস্থিতি গুরুতর_fororder___172.100.100.3_temp_9500033_1_9500033_1_6012_3736f960-9af3-4c89-9a3e-0f664609ab73

পয়লা মে থেকে ভারতের টিকাকেন্দ্রগুলোতে অনেক নাগরিককে ঘন্টার পর ঘন্টা অপেক্ষা করতে হয়। তারপরও অনেকে টিকা পাননি। স্থানীয় নাগরিক মিত বলেন,

‘আমার মনে হয়, সরকার আমাদেরকে টিকা দেওয়ার জন্য যথাযথ প্রস্তুতি নেয়নি। বর্তমানে ভারতে আক্রান্তের সংখ্যা ব্যাপকভাবে বৃদ্ধি পাচ্ছে। যদি সরকারের পূর্ব-পরিকল্পনা থাকতো, তবে বর্তমান বিশৃঙ্খল অবস্থার সৃষ্টি হতো না।’

রাজধানী নয়াদিল্লী ছাড়াও, অন্যান্য জায়গায় এ ধরণের বিশৃঙ্খল অবস্থার সৃষ্টি হয়েছে। বিহার প্রদেশের রাজধানী পাটনার একটি চিকিত্সাসংস্থার চিকিত্সাকর্মী বলেন,

ভারতে টিকার অভাব প্রকট, মহামারী পরিস্থিতি গুরুতর_fororder___172.100.100.3_temp_9500033_1_9500033_1_1_f100938f-ecc6-434b-86ca-0d496d01644f

‘বর্তমানে আমরা ১৮ থেকে ৪৫ বছর বয়সী নাগরিকদেরকে টিকা দিতে পারছি না। আমরা শুধু ৪৫ বছরের বেশি বয়সীদের এবং চিকিত্সাকর্মীদেরকে টিকা দিতে পারি।’

তিনি আরও বলেন, টিকার অভাব হওয়ার কারণে সংস্থাটি বর্তমানে আগের পরিকল্পনা অনুসারেই কাজ করে যাচ্ছে।  অনুমান অনুযায়ী, এ মাসের মাঝামাঝি সময়ে ১৮ বছর ও এর চেয়ে বেশি বয়সী সকল নাগরিক টিকা পাবে।

বর্তমানে ভারতে মহামারী পরিস্থিতির দ্রুত অবনতি ঘটছে। অধিকাংশ স্থানীয় নাগরিকের দৃষ্টিতে টিকাগ্রহণ হলো মহামারীর বিরুদ্ধে সবচেয়ে দ্রুত ও কার্যকর পদ্ধতি। নয়াদিল্লীর টিকাকেন্দ্রে অশোক কুমার দ্বিতীয় ডোজ টিকা পেয়েছেন। তিনি বলেন, ‘আমার সন্তানের বয়স ১৮ বছর।  এখনও সে টিকা পায়নি। অথচ টিকাগ্রহণ হলো মহামারী মোকাবিলায় আমাদের একমাত্র পদ্ধতি।’

ভারতে টিকার অভাব প্রকট, মহামারী পরিস্থিতি গুরুতর_fororder___172.100.100.3_temp_9500033_1_9500033_1_6012_7e4c9c8e-83f6-4401-b122-4c0decf4f81b

স্থানীয় চিকিত্সা-বিশেষজ্ঞরা বলেন, বর্তমানের টিকার সংকট হওয়ার প্রধান কারণ হলো, নাগরিকদের টিকাগ্রহণের চাহিদা বৃদ্ধি পাচ্ছে। ভারত সরকার বিভিন্ন ব্যবস্থা নিয়ে স্থানীয় টিকা সরবরাহের সমস্যা সমাধান করছে। ভারতের দক্ষিণাঞ্চলের চেন্নাই শহরের অ্যাপোলো হাসপাতালের উপপ্রধান প্রীতি রেড্ডি বলেন,

‘আমার মনে হয়, টিকা সরবারহের সমস্যার সমাধান সময়ের ব্যাপার মাত্র। সরকার টিকা সরবরাহের সমস্যা সমাধানের চেষ্টা করছে। সবার উচিত টিকা নিয়ে উদ্বিগ্ন বা আতঙ্কিত না হওয়া। আসলে টিকা ও চিকিত্সা সরঞ্জামের অভাবের কারণে মহামারী পরিস্থিতির অবনতি ঘটছে।’

ভারতে টিকার অভাব প্রকট, মহামারী পরিস্থিতি গুরুতর_fororder___172.100.100.3_temp_9500033_1_9500033_1_6012_cb36cd8d-1191-4808-927d-55a4618b4599

ভারতের সরকারি পরিসংখ্যান অনুসারে, স্থানীয় সময় পয়লা মে সকাল আটটা পর্যন্ত বিগত ২৪ ঘন্টায় ভারতে নতুন আক্রান্তের সংখ্যা ৪ লাখ ছাড়িয়ে যায়। এ পর্যন্ত টানা ১০ দিন দেশটিতে প্রতিদিন নতুন আক্রান্তের সংখ্যা ৩ লাখেরও বেশি ছিল। ভারতে এরই মধ্যে আক্রান্তের মোট সংখ্যা ২ কোটি ছাড়িয়ে গেছে মৃতের সংখ্যা ২ লাখ ১০ হাজার ছাড়িয়েছে।

রাজধানী নয়াদিল্লী মহামারীতে সবচেয়ে মারাত্মকভাবে আক্রান্ত হয়েছে। পয়লা মে সকাল পর্যন্ত বিগত ২৪ ঘন্টায় নয়াদিল্লীতে নতুন আক্রান্তের সংখ্যা ছিল ২৭ হাজার। নয়াদিল্লীর দক্ষিণাঞ্চলে অবস্থিত একজন গবেষণাসংস্থার কর্মী সোমেশ বলেন, তিনি সম্প্রতি বিভিন্ন বাড়িতে গিয়ে নমুনা সংগ্রহ করেছেন। তাঁর কোম্পানির মতো আরও কোম্পানি আছে। তিনি বলেন,

ভারতে টিকার অভাব প্রকট, মহামারী পরিস্থিতি গুরুতর_fororder___172.100.100.3_temp_9500033_1_9500033_1_1_899bb050-aadb-4e7b-8f2b-83cf0c97d31a

‘আমরা প্রতিদিন বিভিন্ন বাড়িতে গিয়ে নিউক্লিক এসিড টেস্ট করি। প্রতিদিন ২০ থেকে ৩৫ জনের টেস্ট করা যায়। এর মধ্যে ৮০ শতাংশেরও বেশি ফলাফল পজেটিভ। আমরা নিজেরাও মহামারীতে আক্রান্ত হওয়ার ভয়ে আছি।’

স্থানীয় বিশ্লেষকরা বলেন, একদিকে বিভিন্ন দেশ থেকে  সহায়তা-সামগ্রী ভারতে পৌঁছাচ্ছে, অন্যদিকে ভারত সরকার টিকার সরবরাহ জোরদার করার চেষ্টা করছে। টিকার সংকট অদূর ভবিষ্যতে কেটে যাবে। (ছাই/আলিম/স্বর্ণা)