রোববারের আলাপন-অশীতিপর এক দাদার গতির গল্প
2021-04-30 19:20:47

আকাশ: সুপ্রিয় শ্রোতা, সবাইকে স্বাগত জানাচ্ছি চীন আন্তর্জাতিক বেতারের বাংলা অনুষ্ঠানে। আপনাদের আন্তরিক প্রীতি ও শুভেচ্ছা জানিয়ে শুরু করছি আমাদের সাপ্তাহিক আয়োজন ‘রোববারের আলাপন’। আপনাদের সঙ্গে আছি এনাম এবং আকাশ।

এনাম ভাই, আমরা আগে খেলাধুলার গল্প বলতে গিয়ে ধারাবাহিকভাবে কয়েকজন কিংবদন্তি দাদা দাদির গল্প বলেছি। আপনি কি এসব গল্প পছন্দ করেন?

এনাম:...
আকাশ: আচ্ছা, তাহলে আমরা আজ আরেক জন দাদার গল্প শুনব। কেমন?

একাশি বছর বয়ষী একজন দাদা এক মিনিট ৩১ সেকেন্ডে ৪০০ মিটার দৌড়াতে পারেন। সম্প্রতি তাঁর এ সফলতার ভিডিও আনলাইনে জনপ্রিয় হয়েছে। অনেক ইন্টারনেট ব্যবহারকারীরা বলছেন, “দাদা যা করছেন, তা আমি করতে পারব না!” 

এনাম ভাই, আমরা আজকে এ দাদার গল্প আমাদের বন্ধুদেরকে বলব। কেমন?

এনাম: সান সি প্রদেশের সি আন শহরের অধিবাসী দাদা হুয়াং সু চিন এ বছর ৮১ বছরে পা রেখেছেন। তিনি জানান, “যদি বৃষ্টি না হয়, প্রতি দুদিনে একবার দৌড়াই”। প্রতিবার দৌড়ানোর আগে, তিনি প্রায় ৪০ মিনিটের প্রস্তুতিমূলক শরীর চর্চা করেন। তিনি বলেন, প্রতি বার দৌড়ানোর সময় স্টপওয়াচ ব্যবহার করে তিনি নিজের দৌড়ানোর সময়কাল রেকর্ড করেন। তিনি নিজের জন্য অতিক্রম রেখা নির্দিষ্ট করেছেন। যদি এক মিনিট ৩৪ সেকেন্ডে এ রেখা অতিক্রম করতে পারেন, তাহলে সাড়া দিন তিনি খুশি থাকেন। 

তিনি বলেন, ছোটবেলা থেকে তিনি খেলাধুলা পছন্দ করেন। স্কুলে র্ভতি হওয়ার পর তিনি মাঝে মাঝে দৌড় ও দীর্ঘ লাফ দিতে পছন্দ করতেন। ষোল বছর বয়সে তিনি সান শি প্রদেশের পক্ষ থেকে চীনের প্রথম তরুণ-তরুণী গেমসে অংশগ্রহণ করেন। 

তিন বলেন, ওই গেমস সান তোং প্রদেশের ছিং তাও মাধ্যমিক স্কুলে আয়োজিত হয়। সে বার তিনি প্রথম সান সি প্রদেশের বাইরে যান। তখন তাঁর রেকর্ড তেমন ভাল ছিল না। তারপরেও তখন তিনি অনেক প্রথম শ্রেণীর খেলোয়াড়দের সাথে আদানপ্রদানের সুযোগ পান। তখন থেকে এ খেলা তাঁর মনে একটি স্থান লাভ করে। 

তিনি জানান, চাকরি জীবনের শুরুতে মাঝে মাঝে তিনি খুব ভোরে উঠে দৌড়াতেন এবং ঘনঘন সি আনে আয়োজিত নানা দৌড় প্রতিযোগিতায় অংশ নিতেন। ক্রমশ তিনি ৪০০ মিটার দৌড়কে ভালবাসতে শুরু করেন। অবসরে যাওয়ার পর তিনি এ শখ ধরে রেখেছেন। তিনি বলেন, “৪০০ মিটার দৌড় হল গতি ও ধৈর্যের সমন্বয়। নিজেকে চ্যালেঞ্জ করার একটি প্রক্রিয়া।”


দাদার একটি নোট বই রয়েছে। তাতে এ কয়েক দশকের তাঁর প্রতিবারের দৌড়ানোর সময় লিখিত আছে। তিনি বলেন, প্রতিবার দৌড় শেষে তিনি সময় বিবেচনা করতে থাকেন। যদি এক বা দু সেকেন্ড ধীর হয়, তাহলে তার কারণ কি? তা খুঁজে বের করেন। 

তিনি আরো বলেন, “এ বয়সেও আমার সারা গায়ে কোন ব্যাথা নেই। শরীর চর্চার পর ভাল খেতে পারি, ভাল ঘুমাতেও পারি। আমার রক্ত চাপ সব সময় স্বাভাবিক থাকে, কোন বড় ধরনের রোগ হয় নি আমার। ”

তিনি মনে করেন, মানুষের জীবনে অবশ্যই কিছু দুঃখের ব্যাপার থাকে। তিনি ৪০০ মিটার দৌড়কে মনের কষ্ট দূর করার একটি “ওষুধ” হিসেবে ব্যবহার করে আসছেন। তিনি বলেন, “দৌড়াতে দৌড়াতে মনের সব কষ্ট দূর হয়ে যায়”। 

দাদার অসাধারন আত্ন-শৃঙ্খলার চেতনা ইন্টারনেট ব্যবহারকারীদের মুগ্ধ ও অণুপ্রাণিত করেছে। তারা মন্তব্য করেছেন, “চতমকার দাদা!! দাদা যা করছেন, আমি তা করতে পারি না! দাদার প্রশংসা করতে চাই! দাদা অসাধারণ!!”

এনাম ভাই, আমি এ দাদাকে ভীষণ পছন্দ করি, আপনার কেমন লাগছে?